বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১০:২৮:৪৭

পানগুছির ভাঙনে বিপাকে লক্ষাধিক মানুষ

পানগুছির ভাঙনে বিপাকে লক্ষাধিক মানুষ

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা উপজেলার সংযোগ সড়কের খাউলিয়া এলাকায়    পাকা রাস্তাটিতে একসময় চলতো যানবাহন, আজ সেই পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে নৌকা আর ট্রলারে। এক কিলোমিটারের পথ যানবাহনগুলোকে যেতে হচ্ছে ৪০ কিলোমিটার ঘুরে। পানগুছি নদীর আকস্মিক ভাঙনে রাস্তা বিলীন হওয়ায় এমন অবস্থা ।

ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি পুনরায় খনন ও যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়ায় পানগুছি নদীতে স্রোত এবং ভাঙ্গন দুইটাই বেড়েছে। নদী তীরের এক কিলোমিটারের রাস্তাটি ভেঙেছে কয়েক বছর আগে। এর পর থেকে একটি বিকল্প রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করত। কিন্তু তাও কিছুদিন আগে পানগুছির আকস্মিক ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। আশপাশের কয়েকটি বসতঘরও চলে গেছে নদী গর্ভে। ফলে মোরেলগঞ্জের সঙ্গে উপজেলার সন্ন্যাসী, খাউলিয়া, বানিয়াখালী ও শরণখোলা উপজেলার সাথে  এ পথের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ও নিত্য যাতায়াতকারী দুই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। গন্তব্যে পৌঁছাতে এক কিলোমিটারের জায়গায় ৪০ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষকে। ভাঙনে সদ্য বিলীন হওয়া সড়কের পাশেই বাড়ি আবুল হাসেমের (৭৬)। তিনি বলেন, কিছুদন পূর্বেও এই রাস্তা দিয়ে চলেছে বড় বড় গাড়ি, ট্রাক। হঠাৎ-ই রাস্তা না-ই হয়ে গেছে।

গাবতলা গ্রামের আব্দুল গফ্ফার তালুকদার জানান, এ পথে যাওয়া যায় পার্শ্ববর্তী উপজেলা শরণখোলায়। এক সময় বাসও চলতো এই পথে। প্রায় ৫ বছর পূর্বে থেকে নদী তীরের এই অংশ ভাঙতে শুরু করে। এর পর গত কয়েক বছরে এই সড়কের এক কিলোমিটার পিচ ঢালাই সড়ক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দীর্ঘ দিনেও নতুন করে রাস্তা নির্মাণের তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। পানগুছির ভাঙনে গত কয়েক বছর ধরে এই এলাকার বহু বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট অস্তিত্ব হারিয়েছে। বহু মানুষকে নিঃস্ব করেছে এই পানগুছি। অনেকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। দিনে দিনে এই ভাঙন আরো তীব্র হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের সময় ওই অংশ দিয়ে প্লাবিত হয় গ্রামের পর গ্রাম। ঘর ডুবে থাকে পানিতে। বেশি প্লাবিত হয় পশুরবুনিয়া, খাউলিয়া ও গাবতলা গ্রাম।

ইউএনও মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, পানগুছির আকস্মিক ভাঙনে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাসহ বহু বসত বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। জনগুরুত্বের কথা বিবেচনা করে বিকল্প আরেকটি রাস্তা দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী একটি বেড়ি বাধেঁর প্রয়োজন। এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।

বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার জানান, পানগুছি নদীর ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি পাশ হলে ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া যাবে।  
০৭ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে