রবিবার, ০৮ অক্টোবর, ২০১৭, ১০:৪৯:১২

‘রোহিঙ্গাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে রাখা হবে না’

‘রোহিঙ্গাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে রাখা হবে না’

বান্দরবান থেকে : একজন রোহিঙ্গাকেও পার্বত্য চট্টগ্রামে রাখা হবে না। এ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায়। রোববার জেলা বান্দরবানের প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ কথা বলেন তিনি।

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতের কারণে বাংলাদেশে হাজার হাজার রোহিঙ্গা আসতে শুরু করে। এ ঢল মূলত কক্সবাজারের দিকেই ছিল বেশি। তবে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির মিয়ানমার সীমান্তসংলগ্ন এলাকাতেও এসে পড়ে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা।

তবে পার্বত্য এ জেলাতে রোহিঙ্গাদের না রাখার বিষয়ে কঠোর সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানানো হলো আজ। সভায় এসপি বলেন, বান্দরবানের তুমব্রু পশ্চিমকুলে আশ্রয় নেওয়া প্রায় সাত হাজার রোহিঙ্গাকে ইতিমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

চাকঢালা, আশারতলি ও দোছড়ি সীমান্তের রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্থানান্তর করা হবে। তবে তুমব্রু কোনাপাড়ার সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থানরত প্রায় ১ হাজার ৪০০ রোহিঙ্গা পরিবারকে স্থানান্তরের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

সভায় আলোচনায় বলা হয়, কিছু ধর্মীয় সংগঠন আশ্রয়শিবিরে ত্রাণ দিতে যায়। ওই সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে জঙ্গি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও যাওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রোহিঙ্গা কাজে জড়িত ব্যক্তিদের আরও বেশি সতর্ক হতে হবে।

সভায় বলা হয়, জেলায় নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, সীমান্তের ওপারে মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও জেলার সার্বিক পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রয়েছে। সীমান্তে ও সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা অত্যন্ত ভালো অবস্থায় রয়েছে। তাই এ রকম ভালো পরিবেশ থেকে অনেক রোহিঙ্গা উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থীশিবিরে যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না।

জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, সিভিল সার্জন অংসুইপ্রু মারমা, আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য শফিকুর রহমান, সেনাবাহিনীর বান্দরবান ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের প্রতিনিধি মেজর মোহাম্মদ আহসান, জেলার কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম সারোয়ার কামাল বলেছেন তুমব্রু কোনাপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় উখিয়ায় সরে যেতে আগ্রহী হলে কোনো সমস্যা নেই। এ জন্য তাদের ব্যাপারে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

সভায় আরও জানানো হয় বান্দরবানের সীমান্তে আপাতত রোহিঙ্গা না এলেও রাখাইনে এখনো জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত থাকায় আরও ব্যাপক হারে আসতে পারে। সেখানে তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গারা বনজঙ্গলে আশ্রয় নিয়ে আটকে পড়ে রয়েছেন। তারা মারাত্মক খাদ্যসংকটে পড়েছেন। এ জন্য জুলুম-নির্যাতন থেকে প্রাণে বাঁচতে এবং খাদ্যের জন্য আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা আসতে পারে। প্রথম আলো
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে