বুধবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৭:২৭:০১

হাতির পাহারা, পালিয়েও বাঁচলেন না পরেশ বড়ুয়া

হাতির পাহারা, পালিয়েও বাঁচলেন না পরেশ বড়ুয়া

বান্দরবান : নাইক্ষ্যংছড়ির সোনাইছড়ি থেকে এক ঝুড়ি দেশী মাছ কিনে ফিরছিলেন পরেশ বড়ুয়া।  তিনি একজন মাছ ব্যবসায়ী।  সোনাইছড়ি থেকে মাছ কিনে রামুতে এনে বিক্রি করাই তার পেশা।

বুধবার ভোর ছটার দিকে রামুর সীমান্ত দিয়ে যখন ঢকেন তখনই দেখতে পান চারটি হাতি তার পথরোধ করে দাঁড়িয়ে আছে।  দেখেই বোঝা যাচ্ছিল ক্ষিপ্ত।
প্রাণভয়ে তিনি উল্টো দিকে ছুটে পালাতে গিয়ে দেখেন সেদিক থেকে এগিয়ে আসছে আরো দুটো হাতি।

তারপরের ঘটনা অনুমিত, উন্মত্ত হাতির পাল তাকে পদপিষ্ট করে মেরে ফেলে।
ঘটনাস্থল ঘুরে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে ঘটনার এ বর্ণনা দিচ্ছিলেন রামু থানার একজন উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।

মৃতদেহ দেখে ফিরে তিনি বলেন, পাড়াইয়া তার এমন অবস্থা করছে একটা হাড্ডিগুড্ডিও আস্ত রাখে নাই।  রাস্তাগুলোতে কিছুক্ষণ পরপরই বন বিভাগ থেকে লেখা সতর্কবার্তা চোখে পড়বে, ‌‘হাতি পারাপার, সাবধানে চলুন’।

রফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে অনেক হাতি রয়েছে।  একসাথে ১৫/২০টা করে চলে।  হাতিরা  ক‘দিন পর পর ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। ফসলের ক্ষয়ক্ষতি করে।  মানুষ পাহারা দেয় ঠেকানোর জন্য। কিন্তু কোনো অভিযোগ করে না।  সবাই জানে এখানে হাতি আছে।

তিনি বলেন, আজ পরেশ বড়ুয়ার লাশও যখন তার পরিবারের কাছে তুলে দেয়া হচ্ছিল, তখনো তার পরিবার কোনো অভিযোগ করেনি।  রফিকুল ইসলাম সপ্তাহ তিনেক আগের আরেকটি ঘটনা স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, সেদিন একদল উন্মত্ত হাতি এক দরিদ্র পরিবারের মাটির ঘরে ঢুকে তছনছ করে ফেলে। ভেতরে ছিল তাদের ছোট্ট মেয়ে।  তাকে সেখানে পেয়ে আছড়ে মেরে ফেলে।  এমন আছাড় দিছে, জায়গায় শ্যাষ।

ওই এলাকায় অবশ্য গ্রামবাসীরা প্রতি সন্ধ্যা বেলায় তাদের ফসল পাহারা দেয়।
ক্ষেতের পাশে গাছে উঠে বসে থাকে, হাতির পাল এলে টিন পিটিয়ে শব্দ করে।
মাঝে মাঝে মাঝে হাতি চলে যায়, মাঝে মাঝে উল্টো তাড়া দেয়।  কখনো কখনো এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নিজেরাও যখন ওই এলাকায় কোনো আসামি ধরতে যাই তখন অনেক সাবধানে থাকি।  আমি তো এখানকার মানুষ না, তাই এদের সাহস দেখে অবাক হই।

এদিকে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. কায় কিসলু বলেন, সম্প্রতি এ এলাকায় সেনানিবাস তৈরি করাসহ নানা কারণে হাতির চলাচলের পথ সঙ্কীর্ণ হয়ে গেছে।  ফলে হাতিরা তাদের নির্ধারিত চলাচলের পথ হারিয়ে এখন উল্টোপাল্টা চলাফেরা করে এবং প্রায়ই জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে।
৩ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে