বৃহস্পতিবার, ০১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০১:১২:৫২

প্রসব বেদনায় ছটফট করা নারীকে তাড়িয়ে দিল নার্স, হাসপাতালের মাঠেই সন্তান প্রসব, অতপর.....

প্রসব বেদনায় ছটফট করা নারীকে তাড়িয়ে দিল নার্স, হাসপাতালের মাঠেই সন্তান প্রসব, অতপর.....

বগুড়া: প্রসব বেদনায় ছটফট করা অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মধ্যরাতে নেয়া হয়েছিল বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ভর্তিও করা হয়। কিন্তু প্রসব কক্ষে না নিয়ে পাশের ক্লিনিকে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয় তাকে। সেখানে নেয়ার পথে হাসপাতালের মাঠে গাছতলায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে মাটিতেই সন্তান প্রসব করেন ওই নারী। যতক্ষণে চিকিৎসক আসেন, ততক্ষণে নবজাতক চলে গেছে না ফেরার দেশে।

মঙ্গলবার রাতের এ ঘটনায় সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সেই নবজাতকের বাবা শেরপুরের গাড়িদহ ইউনিয়নের স্কুলপাড়া গ্রামের ইলিয়াছ উদ্দিন। চেয়েছেন দোষীদের বিচার।

ইলিয়াছ উদ্দিন জানান, প্রসব বেদনা উঠলে স্ত্রী মাজেদা বেগমকে রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। দায়িত্বরত চিকিৎসক মোস্তফা আলম আল্লামা তালুকদার পিয়াল তাকে ভর্তি নেন। এক ঘণ্টা পর তাকে ডেলিভারি কক্ষে নেয়ার কথা। কিন্তু সিনিয়র স্টাফ নার্স সুষমা রানী মাজেদাকে পাশের মডার্ন ক্লিনিকে নিয়ে ডা. রাফসান জাহান রিম্মীর কাছে সিজার করার জন্য পরামর্শ দেন। মাজেদাকে কয়েকটি ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন।

ইলিয়াছ আরও জানান, নগদ টাকা না থাকায় নার্সকে ডেকে তোলেন আমার স্বজনরা। মাজেদাকে হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা করানোর অনুরোধ জানান। এসময় ইনডোর বিভাগের আয়া পারভীন বিবি যন্ত্রণাকাতর মাজেদাকে জোর করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। রাত তখন পৌনে ১টা। কোনো যানবাহনও ছিল না। রোগীকে বাইরে নিতে গেলে গেটের কাছে চিৎকার দিয়ে পড়ে যান মাজেদা। অন্ধকার খোলা মাঠে নারকেল গাছের তলায় বালু মাটির ওপর বাচ্চা প্রসব করে সে।

ইলিয়াছ জানান, আর্তচিৎকার শুনে হাসপাতাল রোডের নৈশপ্রহরী ফজলু মিয়া ও পথচারী রিন্টু এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন নার্স সুষমা ও হাসপাতালের নৈশপ্রহরী কাজলকে। পরে ডাক্তার পিয়াল ও নার্স সুষমা এসে বালু মাটিতে পড়ে থাকা শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। অথচ জন্মের সময় শিশুটি বেঁচে ছিল। পরে সেখানে পুলিশ আসে।

ডাক্তার পিয়াল জানান, নির্ধারিত সময়ের আগেই তার প্রসব বেদনা উঠে। পিভিসহ কিছু সমস্যা থাকায় অপেক্ষা করা হয়েছিল। প্রসব বেদনায় ছটফটরত রোগীকে কেন হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হল? জবাবে নার্স সুষমা রানী বলেন, তাড়িয়ে দেয়া নয়, বাইর থেকে ওষুধ কিনে আনার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। বগুড়া সিভিল সার্জন ডা. অর্ধেন্দু দেব বলেন, শেরপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোখলেছুর রহমান ফোনে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। -যুগান্তর।

০১ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে