রবিবার, ০৬ আগস্ট, ২০১৭, ১২:১৪:৩৮

৫ মডেল তুফানের রক্ষিতা, কানেকশন ছিল বাংলা সিনেমার ২ নায়িকার

৫ মডেল তুফানের রক্ষিতা, কানেকশন ছিল বাংলা সিনেমার ২ নায়িকার

নিউজ ডেস্ক : বগুড়ার তুফান সরকার ছিল শহরের এক আতঙ্কের নাম।  তার অপকর্মের ফিরিস্তির কোনো শেষ নেই।  কিশোরীকে নির্যাতনের পর মা-সহ তার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়ার অপকর্মের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তুফান সরকার এবং তার মদদদাতা বড় ভাই মতিন সরকার।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাতের বগুড়াকে তুফান সরকার চালাতেন মুম্বাই স্টাইলে। নারী আর আলোর রোশনায় ভেসে বেড়াতেন তিনি এবং তার অনুসারীরা।  ঢাকা থেকে সেখানে সুন্দরীরা মাঝে মাঝে যোগ দিলেও নিয়মিত রক্ষিতা হিসাবে তুফানের আসর জমাতো বগুড়ার ৫ সুন্দরী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার এক হিন্দু নারী নিয়মিত যেতেন তুফানের আসরে।  এছাড়া সেই দলে রয়েছে বগুড়ার বানানী এলাকার ২৫ বছর বয়সী এক নারী।  বাকি তিনজনের একজন আসতেন নন্দীগ্রাম উপজেলা থেকে।  অন্য দুইজনের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়।

মাত্র ২ বছর রাজনীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া অশিক্ষিত এই তুফান সরকার জীবনযাপন করতো ভারতীয় সিনেমার মাফিয়াদের মতো।  দলবল নিয়ে গাড়িতে সাইরেন বাজিয়ে আতংক সৃষ্টি করেই বগুড়া শহর দাপিয়ে বেরিয়েছেন।  পরিবহন খাতের নেতা হওয়ার কারণে প্রতিদিনই কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করতেন তুফান।  পাশাপাশি বড় ভাই বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা মতিন সরকারের জুয়ার আসরের টাকাও তুলতেন তিনি।

তুফানের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু যিনি নিয়মিত তার সঙ্গে রাতের পার্টি করতেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাংলা সিনেমার ২ জন নায়িকাসহ আরো ৪ জন সুন্দরী মডেলের সঙ্গে কানেকশন ছিল তুফানের।  টাকার বিনিময়ে তাদেরকে বিমানের টিকেট দিয়ে সৈয়দপুর থেকে গাড়িতে করে বগুড়া নিয়ে আসতেন।  শহরের দু’টি অভিজাত হোটেলে তাদের রাখা হতো এবং রাত হলেই উন্মাদ আসর জমে উঠতো নাচে গানে।

বগুড়াতে মেয়েকে নির্যাতনের পর মা ও মেয়েকে চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়ার মতো ঘটনার পর দেশের সবার দৃষ্টি এখন এই শহরটির দিকে।  শহরের মাদক সম্রাট ও ত্রাসখ্যাত তুফান সরকার ও মতিন সরকারের রাজত্ব চলতো এই শহরে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বগুড়া শহরের আতংক মতিন-তুফানদের উত্থানের নেপথ্য নায়ক বর্তমান বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন।  তার হাত ধরেই ১৯৯৯ সালে মতিন সরকার রাজনীতিতে সক্রিয় হন।  কিন্তু বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে পালিয়ে বেরিয়েছেন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরই শুরু হয় তার তান্ডব।  ধীরে ধীরে মোহনের সঙ্গে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে ২ বছর আগে যুবলীগের সম্মেলনে তারা প্রকাশ্য বিরোধে জড়ান।  এরপর থেকে মোহনকে আর নিয়মিত যে টাকা দেয়া হতো সেটি বন্ধ করে দেয় মতিন সরকার।  মোহনকে বাদেও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একজন নেতা ও বগুড়া আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাকেও নিয়মিত চাঁদার ভাগ দেয়া হতো।  এমনটা নিশ্চিত করেছে মতিন সরকারের একটি সূত্র।
এমটিনিউজ/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে