বৃহস্পতিবার, ২৪ মে, ২০১৮, ০৭:১০:২০

টেম্পোচালক থেকে ইয়াবায় কোটিপতি ফারুক

টেম্পোচালক থেকে ইয়াবায় কোটিপতি ফারুক

নিউজ ডেস্ক: ২০০৮ সালে ওমান থেকে ফিরে চট্টগ্রাম নগরীর কালুরঘাটে টেম্পো চালানো শুরু করেন ফারুক। ২০১৩ সালে হঠাৎ যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পান তিনি। টেম্পোচালক থেকে রাতারাতি বনে যান কোটিপতি।

গত মঙ্গলবার (২২ মে) রাতে ফেনীর দৌলতপুরে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ফারুক।

নিহত ফারুকের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামে। তার পিতা অলি আহমদ কালুরঘাট ব্রিজ এলাকায় একসময় ঠেলাগাড়ি চালাতেন। বর্তমানে তিনি অসুস্থ হয়ে গ্রামের বাড়িতে বসবাস করছেন। ফারুক অলি আহমদের দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে ওমানে গিয়ে সেখানে মাত্র আট মাস থেকে দেশে ফিরে আসেন ফারুক। ২০০৮ সালের দিকে নগরের চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট রুটে টেম্পো চালানো শুরু করেন। এরপর কিছুদিন মোবাইল অপারেটর কোম্পানি আজিয়াটায় (রবি) গাড়িচালক হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু ২০১৩ সালের দিকে হঠাৎ যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পান তিনি। চাকরি ছেড়ে নিজেই গাড়ি কেনেন।

নির্ভযোগ্য সূত্র জানায়, কালুরঘাট এলাকায় টেম্পো চালানোর সময় সামশু (ওরফে সামশু মামা) নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এর সূত্র ধরেই ২০১৩ সালে ফারুক মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর থেকে দ্রুত পরিবর্তন ঘুরতে থাকে ফরুকের ভাগ্যের চাকা। প্রথমে গাড়ি কেনেন। একই সময়ে সফিরচর নামক এলাকার ছায়েরা নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। অল্প সময়ের মধ্যে বিয়ে দেন তার দুই বোনকেও। এক ভাই মারুফকে সৌদি আরব ও অপর ভাই জহিরকে ওমানে পাঠান।

ফারুকের গ্রামের বাড়ির সূত্রে জানা গেছে, তিনি গত কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রাম নগরীতে বসবাস করে আসছিলেন। মাঝে মধ্যে গ্রামের বাড়িতে আসলেও কারো সঙ্গে তার তেমন সম্পর্ক ছিল না। দৃশ্যমান কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকলেও নিজস্ব গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করা ছাড়াও বিলাসী জীবনযাপন করতেন তিনি।

গ্রামে একটি টিনশেডের বাড়ি নির্মাণ ছাড়া কিছু না করলেও চট্টগ্রাম শহরে ফারুক বেশকিছু জায়গা-জমি কিনেছেন এমন তথ্য মিলেছে। বর্তমানে তিনি দুটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেটকারের মালিক। সঙ্গে ব্যাংকে বিপুল অংকের টাকা। সম্প্রতি তিনি বাকলিয়া এলাকায় একটি জায়গাও ক্রয় করেন বলে জানা গেছে। ফারুক চট্টগ্রাম নগরীর ওয়্যারলেস কলোনি এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।

র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি মিমতানুর রহমান বলেন, ‘ফারুক মাঝারি মানের ইয়াবা ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে মামলা রয়েছে।’

তিনি জানান, গত ২২ মে রাতে ফেনীর দৌলতপুরে র‌্যাবের টহল দল চেকপোস্টে একটি প্রাইভেটকারকে থামার সঙ্কেত দেয়। তখন গাড়ি না থামিয়ে ভেতর থেকে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে গুলিবিদ্ধ একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে জানা যায় তার নাম মো. ফারুক।

এসময় তার কাছে থাকা ২২ হাজার পিস ইয়াবা, একটি ওয়ান শুটারগান, ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ৫ রাউন্ড কার্তুজের খোসা ও প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান এএসপি মিমতানুর।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে