শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ০৮:৩৫:৩৫

সৌদি আরব যাওয়া হলো না, একই কবর স্থানে বাবা-ছেলের দাফন

সৌদি আরব যাওয়া হলো না, একই কবর স্থানে বাবা-ছেলের দাফন

নিউজ ডেস্ক: কথা ছিল পক্ষকাল পরই আবারও পাড়ি দেবেন সৌদি আরব। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। ছুটি শেষ হওয়ার আগেই নিজ শোবার ঘরে ভাইয়ের দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে ছেলেসহ পৃথিবী থেকে ছুটি নিলেন জসিম উদ্দিন।


তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পূর্ব গোমাতলীর মৃত হাজি আবুল ফজলের ছেলে। শনিবার দুপুরে পূর্ব গোমাতলী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠে জানাজা শেষে একই কবরস্থানে বাবা জসিম উদ্দিন ও ছেলে রিদোয়ানকে দাফন করা হয়।


জানাজায় অংশ নিতে নিহতের অপর দুই ভাই মুহাম্মদ মোস্তফা ও মৌলভী আমান উল্লাহ শুক্রবার সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য কলিম উল্লাহ এসব তথ্য জানিয়েছেন।


বুধবার রাতে শোবার ঘরে ভাইয়ের দেয়া পেট্রলের আগুনে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে বাবা এবং শুক্রবার দুপুরে ছেলের মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় জসিমের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা আশুরা বেগম (১৯) ও মা নুরবানু বেগম (৬৮) দগ্ধ শরীর নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।


জসিমের শ্বশুর আবু ছৈয়দ জানান, আগামী মার্চের মাঝামাঝি ছুটি শেষ করে আবার সৌদি আরবে নিজ কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল জসিমের। সেটি মাথায় রেখেই সব কাজ গুছিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। যাদের ভবিষ্যতের জন্য জসিম প্রবাসে যেতে চেয়েছিল তিনি সন্তানকে বুকে নিয়েই মাটির ঘরের বাসিন্দা হলো। অপর সন্তান পৃথিবীর আলো দেখবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। কারণ আমার মেয়ে (জসিমের স্ত্রী) এখনো শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।


এদিকে নারকীয় এ ঘটনার নায়ক জসিমের ছোট ভাই মুহাম্মদ রশিদ ভোলাইয়াকে (৩৫) একমাত্র আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করা হয়েছে। তার অপর ভাই মোস্তফা বাদী হয়ে মামলাটি করেন।


ঘটনার পরদিন পুলিশের হাতে সোপর্দ করা ভোলাইয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ঘটনাটি গোমাতলী ছাড়াও পুরো কক্সবাজারে প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। নারকীয় ঘটনাটির মূল কারণ কি তা জানতে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন যে যার মতো।


সূত্র মতে, ভোলাইয়া বিয়ে করার কথা বলে খরচ দাবি করেছিল। কিন্তু সৌদি আরব নেয়ার পরও নিজের কোনো গতি করতে না পেরে রশিদ ভোলাইয়া দেশে চলে আসায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পরিবার। এ কথা জানিয়ে লবণ চাষ ও ঘের করে টাকা আয়ের পর বিয়ে করতে বলার পর মা-ভাইয়ের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় ভোলাইয়ার। এরই জেরে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সিদ্ধান্ত নেয়। ঘটনার পর থেকে জসিমের অন্য ভাই-বোন, স্বজন ও আশুরার বাবা-মায়ের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠছে।


ঈদগাঁ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক (তদন্ত) খায়রুজ্জামান জানান, জসিম ও তার সন্তানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ভাই মোস্তফার দায়ের করা মামলায় ভোলাইয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে