শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৬:৩৭

নাড়ি না ছিঁড়েই সদ্যোজাতকে নিয়ে দুর্ধর্ষ পালানোর বর্ণনা দিলেন অসহায় রোহিঙ্গা মা

নাড়ি না ছিঁড়েই সদ্যোজাতকে নিয়ে দুর্ধর্ষ পালানোর বর্ণনা দিলেন অসহায় রোহিঙ্গা মা

নিউজ ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের উপরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে অমানুষিক নির্যাতন করছে তা অবর্ণনীয়। জীবিত অবস্থায় তাদেরকে পুড়িয়ে মারা সহ আরো জঘন্য ধরনের অত্যাচার তো রয়েছেই। যে কারণে তারা পালিয়ে আসছে মিয়ানমার থেকে। এবার এমনি এক অমানবিক কাহিনীর বর্ণনা দিলেন এক রোহিঙ্গা নারী।

সন্তান জন্ম দিয়ে নাড়ি না কেটেই সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে পালিয়ে আসতে হয়েছে তাকে। ৩০ বছর বয়সী হামিদা জানান, ২ সেপ্টেম্বর রাখাইন রাজ্যের কোয়াচং গ্রামে আক্রমণ করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তারা সেখানে গুলি চালাতে শুরু করে ও আগুন লাগিয়ে দেয়। গর্ভাবস্থাতেই তার স্বামী ও অন্য সন্তানসহ পালিয়ে আসতে হয়েছে তাকে। কারণ সেনাবাহিনী তাদের পেছনে তাড়া করছিল।

পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা তারা জঙ্গলের মধ্যেই লুকিয়ে ছিলেন। এর মধ্যেই তার প্রসব ব্যথা শুরু হয়। সে বুঝতে পারছিল যে বাচ্চা হওয়ার সময় এসেছে, কিন্তু তার কাছে কিছুই ছিল না। এমনকি শরীর ঢাকার মতো কোনো কাপড়ও না। তিনি জঙ্গলের মাটিতে শুয়ে পরতে বাধ্য হন। তিন ঘন্টার অসহ্য ব্যাথার পর তিনি একটি স্বাস্থ্যবান ছেলে শিশুর জন্ম দেন। কিন্তু সন্তান ভূমিষ্ঠ হতে না হতেই আবারও মানুষের আর্ত চিৎকার এবং গুলির আওয়াজ শোনা যায়। তাই সদ্যোজাত সন্তানের নাড়ি কাটারও সুযোগ হয়নি তাদের। এ অবস্থায়ই তারা আবারও দৌড়াতে শুরু করে। বহু পথ দৌড়ে এবং চড়াই উৎরাই পেরিয়ে একসময় কয়েকদিন পর বাংলাদেশের সীমানায় এসে পৌঁছেন তারা।

হামিদা বলেন, ‘তখনো পর্যন্ত সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটি আমার সঙ্গে যুক্ত ছিল। আমাদের কিছুই করার ছিল না। কারণ তাদের কাছে বন্দুক ও ছুরি ছিল। আমি প্রচন্ড যন্ত্রণার মধ্যে ছিলাম।’

তিনি এটাও জানেন না কতক্ষণ ধরে দৌড়াচ্ছিলেন। ব্যাথায় তিনি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলেন না। কারণ, সেনাবাহিনী তাদের ধরতে পারলেই মেরে ফেলবে। এমনকি তাদের সদ্যোজাত সন্তানকেও। পরবর্তীতে তারা যখন নিরাপদ স্থানে পৌঁছাল, তখন হামিদার স্বামী বাঁশের টুকরা কেটে বাচ্চার নাড়ি কেটে দেয়।-ডেইলি মেইল
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে