মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮, ১২:২৮:১২

ঈদের আনন্দে কক্সবাজারে পর্যটকদের মিলন-মেলা

ঈদের আনন্দে কক্সবাজারে পর্যটকদের মিলন-মেলা

কক্সবাজার: প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদের আগে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলগুলো আগাম বুকিং করেছিলেন পর্যটকরা। কিন্তু ৯ জুন থেকে শুরু হয় টানা বর্ষণ। আবহাওয়ার সতর্ক বার্তায় ঈদের পরও বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনার কথা বলা হয়। ফলে ধারণা ছিল এবার ঈদের ছুটিতে বৃষ্টিময় থাকবে পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার। তবে ঈদের দিন থেকে আকাশ মেঘময় হলেও বর্ষণ না থাকায় ধারণার দিগুণ পর্যটক এসেছে কক্সবাজারে। ঈদের আনন্দে কক্সবাজারে পর্যটকদের মিলন-মেলা।

ঈদের পরের দিন থেকে পূর্বনির্ধারিত পর্যটক ছাড়াও আসছে নতুন পর্যটকরাও। মেঘ-রোধ খেলার মাঝে অপরূপ প্রকৃতি পর্যবেক্ষণে ছুটছেন তারা।

সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, সী-গাল, কলাতলী, দরিয়ানগর, হিমছড়ি ও ইনানী সৈকতে ছিল পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। বৈরী আবহাওয়া হলেও প্রতি বারের মতো এবারও প্রায় তিন লাখ পর্যটক সৈকতের নির্মল হাওয়া উপভোগ করতে এসেছেন বলে ধারণা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া কক্সবাজারের বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দির, বার্মিজ মার্কেট, রামুর রামকোট বিহার, ১০০ ফুট শয্যা বৌদ্ধমূর্তি, নাইক্ষ্যংছড়ির লেক, চকরয়িার সাফারি পার্কসহ সব পর্যটন স্পট পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল।

এদের মাঝে প্রায় লাখখানেক পর্যটক দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, পটিয়া, চন্দনাইশ, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, পেকুয়া, ঈদগাঁও, রামুসহ কক্সবাজারের আশপাশের এলাকার। স্থানীয় পর্যটকদের মাঝে শিশু-কিশোর ও যুবাদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ী ও দরিয়া নগর পর্যটন গ্রুপের চেয়ারম্যান এস এম সায়েম ডালিম।

তিনি জানান, শিশু-কিশোর ও যুবাদের কথা চিন্তা করে দরিয়া নগরে বেশ কিছু রাইড ঈদের পর দিন থেকে চালু করা হয়েছে।

ঈদগাঁওর স্কুল ছাত্র তালেব মমতাজ (১৫) বলে, স্কুল বন্ধ তাই বড় বোন তজল্লী, আনিকা ও ছোট বোন সাদিয়াকে সঙ্গে নিয়ে সৈকত দেখতে এসেছি। সিএনজি যোগে হিমছড়ি, দরিয়ানগর, কলাতলী বিচে অন্য পর্যটকদের সঙ্গে আমরাও ঢেউ ছুঁয়ে দেখেছি। যাবার বেলা তারকা হোটেলে ভালো-মন্দ খেয়ে পর্যটনের স্বাদ পূর্ণ করেছি।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট ক্লাবের পরিচালক কলিম উল্লাহর বলেন, শহরের চার শতাধিক হোটেল মোটেল, কটেজ ও ফ্লাটে প্রায় আড়াইলাখ পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুর পর থেকে পর্যটন নগরীর তারকা হোটেলগুলো এনজিও কর্মকর্তায় ভরপুর। আর বাকি হোটেলগুলো কক্সবাজারের বাইরের পর্যটকরা বুকিং করেছেন। বলতে গেলে কোনো হোটেলই ফাঁকা নেই।

তারকা হোটেল সায়মনের ফুড অ্যান্ড বেভারিজের ব্যবস্থাপক ইমরান হোসেন বলেন, এবার রমজানেও মোটা-মোটি ব্যবসা ভালোই চলেছে। ঈদের পরও মন্দ যাচ্ছে না। বিদেশি ও স্থানীয় সব ধরণের পর্যটক আসছে। যা সন্তুষজনকই বলা চলে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার বলেন, একদিকে ভারি বর্ষণ অন্যদিকে ছুটি কম থাকায় অনেকে আগাম বুকিং বাতিলও করেছিলেন। ফলে আমরা মনে করেছিলাম এবার অন্য সময়ের মতো ঈদে লোকজন আসবে না। কিন্তু স্থানীয় ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার কয়েক লাখ পর্যটক ঠিকই কক্সবাজার এসেছেন।

হিমছড়ি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, রোববার থেকে পর্যটক সমাগম বেড়েছে। সকাল থেকেই সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শন করছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। তাই তাদের নিরাপত্তায় টানা দায়িত্বপালন করছেন ফাঁড়ির সদস্যরা।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বী বলেন, আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি পর্যটক আগমন ঘটেছে। সেই অনুযায়ী পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তাসহ পর্যটনবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, পর্যটন এলাকায় পর্যটক বাড়লেই সংশ্লিষ্টরা তৃপ্ত হন। পর্যটন জেলার প্রশাসক হিসেবে সৈকত দেখতে লোক সমাগম বাড়লে আমিও খুশি।
এমটিনিউজ২৪.কম/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে