শনিবার, ০৪ জুন, ২০১৬, ১০:১৫:০৪

সিলমারা ব্যালটের ছবি দেখালেই নগদ টাকা-শাড়ি-লুঙ্গি!

সিলমারা ব্যালটের ছবি দেখালেই নগদ টাকা-শাড়ি-লুঙ্গি!

রুহুল সরকার, কুড়িগ্রাম: ভোটের দাম আগের চেয়ে খানিকটা বাড়ানো হয়েছে। এখন একটা ভোটের দাম ভোটার বিশেষে পাঁচশ থেকে দেড় হাজার টাকা। ভোটের মাঠে নগদ টাকা নিয়ে নেমেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। গ্রামে গ্রামে উড়াতেও শুরু করেছেন টাকা। তবে সাবধান! সেই উড়ে বেড়ানো টাকা ধরা কিন্তু সহজ নয়।

‘ভাই, আমাকে টাকা দেন, আপনাকে একটা ভোট দিব।’ এমন অঙ্গীকার করলেও কিন্তু টাকা পাবেন না। আপনাকে ভোট দেয়ার গ্যারান্টি আর তার প্রমাণও পেশ করতে হবে। ছবি তোলা যায় এমন ক্যামেরা নিয়ে আপনাকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে হবে। বুথে গিয়ে সিল মারার সময় কোন মার্কায় সিল দিলেন তার ছবি ধারন করতে হবে।

কেন্দ্রের বাইরে এসে সেই প্রমাণ পেশ করতে হবে প্রার্থী বা কর্মীদের কাছে। তবে নিশ্চিতভাবে আপনি ভোট বিক্রির টাকা পাবেন। তবে ইচ্ছে করলে আপনি টাকার পরিবর্তে শাড়ি আর লুঙ্গিও নিতে পারেন।

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর, শৌলমারী ও যাদুরচর ইউনিয়নে আগাম ভোট বিক্রির এ ধুম পড়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আগামীকাল শনিবার (৪ জুন) এই তিন ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে তাই চেয়ারম্যান প্রার্থী আর তার কর্মীরা নগদ টাকা-পয়সা আর শাড়ি-লুঙ্গি নিয়ে মাঠে নেমেছেন।

ভোটার আর স্থানীয়রা জানিয়েছে, রৌমারীর সদর, শৌলমারী ও যাদুরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা গ্রামে গ্রামে নগদ টাকার ছড়াছড়ি শুরু করে দিয়েছে। এক ভোট ৫শ’ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত কেনা হচ্ছে। টাকা দেয়ার সময় বলে দেয়া হচ্ছে, ছবি তোলা যায় এমন মোবাইল ফোন সঙ্গে করে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। বুথে সিলমারা ব্যালট পেপারের ছবি তুলে এনে দেখাতে হবে। প্রায় সব গ্রামের ভোটারদের মাঝে শোনা যাচ্ছে এমন আলোচনা।

অভিযোগ করা হচ্ছে, যারা ভোট বিক্রি করতে চান বলে কথা দিয়েছেন তাদের ভোট কেন্দ্রের বুথে গিয়ে সিলমারা ব্যালট পেপারের ছবি মোবাইল ফোনে উঠাতে হবে। তবে যারা মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে পারবে না, তারা ব্যালট পেপার ভোটবাক্সে না ফেলে গোপনে বাইরে নিয়ে আসবে। সেসব ব্যালট পেপার তুলে দিতে হবে পছন্দের প্রার্থীর হাতে। এরপর তারা টাকা বুঝে নেবে। পরে পছন্দের প্রার্থী তার কর্মীদের বা অন্য ভোটারদের মাধ্যমে সিলমারা ওই ব্যালট পেপার ভোট বাক্সে ফেলানোর ব্যবস্থা করবেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিতভাবে এসব অভিযোগ করেছেন প্রার্থীরা। আর কেন্দ্রে ভোটাররা যেন মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করারও আবেদন জানানো হয়েছে।

রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিএনপি নেতা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক ও সাইফুর রহমান বাবলু অভিযোগ করেন, সরকারি দলের প্রার্থী ভোটারদের প্রকাশ্যে নগদ টাকা এবং শাড়ি লুঙ্গি বিতরণ করছেন। নৌকায় ভোট না দিলে বাজারে ঢুকতে দেয়া হবে না বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।

তবে ওইসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম সালু বলেন, ‘সাধারণ মানুষের মাঝে আমার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এলাকার মানুষ আমাকে ভোট দিবে এবার। আমার জনপ্রিয়তা ও মাঠ ভালো থাকার কারণে নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা মিথ্যা কথা বলছে। ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’ বাংলামেইল
৪ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে