বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬, ০৯:৩৬:৫৪

লেখাপড়া বাদ দিয়ে ‘কামলা’ দিতে বললেন স্যার!

 লেখাপড়া বাদ দিয়ে ‘কামলা’ দিতে বললেন স্যার!

কুড়িগ্রাম : পরীক্ষার ফি, বেতন ও সেশন ফি না দেয়ায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজে মাধ্যমিক পর্যায়ের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় কেন্দ্র থেকে ৯ম ও ১০ম শ্রেণির সিংহভাগ শিক্ষার্থীকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

এতে পরীক্ষা দেয়া হয়নি ওই শিক্ষার্থীদের।  গতকাল বুধবার বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা শুরুর আগ মুহূর্তে এ ঘটনা ঘটে।  

ওই প্রতিষ্ঠানের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আপেল মাহমুদ, লিমন মিয়া, নয়ন শিয়া, ১০ম শ্রেণির মিঠু মিয়া, শাকিল আহমেদ, ওমর ফারুক, এরশাদুল হক, রবিউল ইসলামসহ অনেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ , ভর্তির সময় আমাদের সেশন ফি নেয়া হয়েছে অথচ আবারো সেশন ফি দাবি করছে স্যাররা।  

শিক্ষার্থীরা বলে, অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা ফি ৩০০ টাকা, সেশন ফি ৫০০ টাকাসহ সাতমাসের বেতন মোট ১৫০০ টাকার এক টাকাও কম নেয় না।  বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা দেয়ার জন্য কক্ষে বসেছি, এমন সময় স্যাররা আমাদের বের করে দেন।  আমরা যারা সেশন ফি দেইনি তাদের পরীক্ষা নেয়া হয়নি।  

১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, 'আমার মেয়ের জন্য ৩০০ টাকা পরীক্ষার ফি দিয়েছি। তারপরও তাকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়নি।  আমি স্কুলে গিয়ে স্যারদের বলেছি যে, সেশন ফি ও বেতনের টাকা পরে দেব।  কিন্তু স্যাররা সেটা মানেননি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ৯ম ও ১০ম শ্রেণির ৩৫০জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩০০জনকেই কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন শহীদুল ইসলাম স্যার।  স্যার বলছেন, টাকা দিতে না পারলে লেখাপড়া বাদ দিয়ে কামলা দিবার যাও।

জানা গেছে, ৯ম ও ১০ম শ্রেণির প্রায় সাড়ে ৩শ' শিক্ষার্থী রয়েছে।  ৯ম ও ১০ম শ্রেণির পরীক্ষা ফি ধরা হয়েছে ৩০০ টাকা।  ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির জন্য ২৪০ টাকা হারে।  

সরকারি নিয়ম অনুসারে সর্বোচ্চ ৮০ টাকার বেশি পরীক্ষার ফি নেয়া যাবে না।  কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন বলে অভিযোগ।  এক শ্রেণিতে সেশন ফি তিনবার করে নেয়া হয় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীরা।
ভর্তির সময়, অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষার সময় ওই ফি আদায় করা হয়।  

অভিযোগ প্রসঙ্গে সহকারী শিক্ষক শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যারা টাকা দিতে পারবে না, তাদের পরীক্ষা যেন না নেয়া হয়।  এ কারণে তাদের কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছি।

অধ্যক্ষ বদিউজ্জামান বলেন, সাড়ে ৩শ' শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৪২জন বেতন, সেশন ও পরীক্ষার ফি দিয়েছে।  এ অবস্থায় পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তরপত্র কিনব কীভাবে।  আমি কলেজে ছিলাম না।  শুনেছি, যারা টাকা দেয়নি তাদের বের করে দেয়া হয়েছে।  

তিনি বলেন, কোনো সমস্যা নেই, পরে তাদের পরীক্ষা নেয়া হবে।  তিনবার করে সেশন ফি নেয়া প্রসঙ্গে বলেন, একবারই আদায় করা যায় না, তিনবার করে আদায় করব কীভাবে?
১৪ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে