মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ০৯:৩০:১৩

তরমুজ ক্ষেত থেকে ১০টি তরমুজ চুরি করে খেয়েছে ১১জন ছাত্র! এ কারণেই...

তরমুজ ক্ষেত থেকে ১০টি তরমুজ চুরি করে খেয়েছে ১১জন ছাত্র! এ কারণেই...

পটুয়াখালী থেকে: তরমুজ ক্ষেত থেকে ১০টি তরমুজ চুরি করে খেয়েছে ১১জন ছাত্র। এ কারণেই বেধড়ক মারধর। তারপর মাথা ন্যাড়া করা হয় চারজনের মাথা। আরও তিনজনের কেটে দেয়া হয় চুল।

এমন ঘটনার পর লজ্জায় ওই কিশোররা গত দুই দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে না। তাদের অভিভাবকরাও বাড়ি থেকে বের হতে লজ্জা পাচ্ছেন। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নে। নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা ষষ্ঠ, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্র। সোমবার ঘটনাটি জানাজনি হয়।

চুরির অভিযোগে মারধরের শিকার এক শিক্ষার্থী জানায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে তারা ১১ জন মিলে গ্রামের জামাল খান নামের এক ব্যক্তির তরমুজের ক্ষেত থেকে ১০টি তরমুজ নিয়ে খায়। এর জের ধরে পরদিন শনিবার রাতে স্থানীয় মকবুল শিকদারের বাড়ির ছাদে সালিশ হয়। সেখানে তারা ১১ জন ও তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে রাত ৯টার দিকে শতাধিক মানুষের সামনে সালিশ শুরুর ঠিক আগ মুহুর্তে সাইফুল সিকদার (৪০) নামের এক ব্যক্তি তাদের (১১ জন) মধ্যে চারজনের মাথা ন্যাড়া করে দেন। সে সময় মো. জুলহাস (৩০) ও তার বাবা সিদ্দিক সরদার (৫৫) নামের দুই ব্যক্তির নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাদের পিটিয়ে আহত করে।

এতে অভিভাবকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। বাড়ি যাওয়ার পথে ফের দ্বিতীয় দফায় তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, ওরা পোলাপান মানুষ। না কইয়া তরমুজ খাইয়া ভুল করছে। ওগো আব্বার কাছে কইলে না টাকা দিয়া দিতো। হেইয়ার লইগ্যা অগোরে ডাইক্কা নিয়া এভাবে মারবে ও মাথা কামাইয়া (ন্যাড়া) দিবে? শরমে (লজ্জায়) স্কুলে যাওন বন্ধ কইরা দিছে।

সালিশ-বৈঠকের আয়োজক মো. ফরিদউদ্দিন শিকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার উদ্দেশ্য ছিল ওদেরকে বুঝিয়ে বলা, একটু শাসিয়ে দেয়া, যাতে এ জাতীয় কাজ ভবিষ্যতে আর না করে। কিন্তু হঠাৎ করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আসল লক্ষ্য উদ্দেশ্য পণ্ড হয়ে যায়। সাইফুল কয়েক ছাত্রের চুল কেটে দিয়েছে। তবে বর্তমান বিষয়টিও মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেবেন তিনি।

এ কেমন বিচার

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাইফুল তরমুজ ক্ষেতের মালিক জামাল খানের দুঃসম্পর্কের আত্মীয়। তিনি অতি উৎসাহী হয়ে কাজটি করেছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে নির্যাতিত নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী হাউমাউ করে কেদে বলে, অনেক মানুষের মধ্যে আমাদের চুল কেটে দেয়া হবে? এটা কেমন বিচার? এখন সবার সামনে ক্যামনে যামু? এ কারণে নিজেকে লুকিয়ে রাখছি।

এ বিষয়ে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন,‘বিষয়টি আপত্তিকর ও খুবই দুঃখজনক। অপরাধ করলে বিচার হবে। কিন্তু মাথা ন্যাড়া করে ওদের প্রতি চরম অবিচার করা হয়েছে।

বাউফল থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে