মঙ্গলবার, ০৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:২৭:৪৮

অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে ‘ব্যাচেলর হোটেল’ থেকে ৬ নারীসহ আটক ৮

অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে ‘ব্যাচেলর হোটেল’ থেকে ৬ নারীসহ আটক ৮

সিলেট: সিলেট নগরের পৌরবিপণী মার্কেটের (সন্ধ্যা বাজার) দ্বিতীয়তলায় অসামাজিক কার্যকলাপের একটি আস্তানায় অভিযান চালিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে ‘ব্যাচেলর হোটেল’ থেকে ৬ নারীসহ আটক ৮জন। সোমবার দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন ওই মার্কেটের দ্বিতীয়তলা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পারেন। পরে পুলিশ ডেকে অভিযান চালিয়ে ‘ব্যাচেলর হোটেল’থেকে ছয় নারী ও হোটেলের দুই কর্মচারীকে আটক করে পুলিশ।

আটকদের মধ্যে আবদুস শহীদ নামের এক কর্মচারী উপস্থিত সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন ওই হোটেলের মালিক নগরের মেন্দিবাগের আলাউদ্দিন আলো।

সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন পৌরবিপণী মার্কেটের দ্বিতীয়তলায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ঘর তৈরি করে ‘ব্যাচেলর হোটেল’ নাম দিয়ে ভোগদখল করে আসছিলেন আলা উদ্দিন আলোসহ কয়েকজন ব্যক্তি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে সোমবার দুপুরে পৌরবিপনী মার্কেট পরিদর্শনে যান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

এ সময় মার্কেটের নিচতলার ব্যবসায়ীরা জানান, মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অবৈধভাবে নির্মিত ‘হোটেল ব্যাচেলরে’ দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছেন আলা উদ্দিন আলো।

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়ে দ্বিতীয় তলা পরিদর্শনে যান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় মার্কেটের পশ্চিম দক্ষিণ পাশে নির্মিত ‘ব্যাচেলর হোটেলে’ গিয়ে তিনি অসামাজিক কার্যকলাপের প্রমাণ পেয়ে পুলিশে খবর দেন।

মেয়রসহ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি টের পেয়ে ওই হোটেলে থাকা ছয় নারী সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে নিচের একটি রুমে আত্মগোপন করেন। পরে সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীরা ওই রুম থেকে তাদেরকে বের করে আনেন এবং হোটেলের দুই কর্মচারীকেও আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দুই কর্মচারী ও ছয় নারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আটকরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বাইদুল্লাহপুর গ্রামের আবদুল মুক্তাদিরের ছেলে আবদুস শহীদ ও জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর কামারপাড়ার মৃত আব্বাসের ছেলে মোস্তাক আহমদ, বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের শওকত আলীর মেয়ে জ্যোতি (২৮), সুনামগঞ্জের বিশ্বম্বরপুর থানার পলাশ গ্রামের ঝর্ণা (১৯), গাজীপুরের শ্রীপুর থানার তাজুল ইসলামের মেয়ে আঁখি (২২), গাজীপুর সদর থানার সজিব আহমদের মেয়ে সুমি (২৮), ভোলা থানার পাটিয়া গ্রামের প্রিয়া (১৯) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার নতুনপূর্ণ গ্রামের কদ্দুস মিয়ার মেয়ে কাজল (২৪)। এ সময় হোটেল থেকে মাদকও উদ্ধার করা হয়।

হোটেলের কর্মচারী আবদুস শহীদ জানান, মেন্দিবাগের আলাউদ্দিন আলো ওই হোটেলের মালিক। হোটেলটির তত্ত্বাবধান করেন মালেক নামের এক ব্যক্তি। অভিযান টের পেয়ে মালেক হোটেল থেকে পালিয়ে গেছেন। প্রতিদিন ২০০ টাকা মজুরিতে তিনি ওই হোটেলে কাজ করেন।

এ ব্যাপারে আলাউদ্দিন আলো জানান, ‘ব্যাচেলর হোটেলের’ সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সন্ধ্যা বাজার ব্যবসায়ী সমিতি সিটি কর্পোরেশনের কাছ থেকে লিজ নিয়ে ওই হোটেল পরিচালনা করছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার ফয়সল মাহমুদ জানান, আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। হোটেলের ভেতরে সুড়ঙ্গ তৈরি করে এ রকম অসামাজিক কার্যকলাপের পেছনের মদদদাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, পৌরবিপণী মার্কেট এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে দ্বিতীয়তলায় নির্মিত ঘরগুলোও অবৈধ। দীর্ঘদিন ধরে এসব অবৈধ ঘরের ভেতর অসামাজিক কার্যকলাপ চলে আসছে বলে স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে আসছেন। তাই অবৈধ এই স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।
এমটিনিউজ২৪.কম/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে