শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৬, ০৭:৫৫:০৩

রাজনাথ সিং শান্ত কিন্তু উত্তেজিত কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা

রাজনাথ সিং শান্ত কিন্তু উত্তেজিত কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাংবাদিক বৈঠকে শান্তির বার্তা দিচ্ছিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। কিন্তু প্রশ্নের মুখে ধৈর্য হারিয়ে পরিস্থিতি জটিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। চেষ্টা করেও জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে সামলাতে পারলেন না ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ফলে দিনের শেষে কাশ্মীরের উত্তপ্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে রাজ্য সরকারের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেল।

জঙ্গি নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর জেরে কাশ্মীরে কার্ফু আজ ৪৮ দিনে পড়ল। জনতা-বাহিনী সংঘর্ষ চলাকালীন এক বার কাশ্মীরে এসেছিলেন রাজনাথ সিং। সে বার তেমন সাড়া পাননি তিনি। তাই এ বারেও যে প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হবে তা বিলক্ষণ বুঝে নিয়েছিলেন পোড়খাওয়া এই রাজনীতিক।

বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠকে চোখা চোখা প্রশ্নের মুখে তাই আগাগোড়া শান্ত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা, ছররা বন্দুকের বিকল্প-সহ নানা স্পর্শকাতর বিষয়ে গুগলি সামলেছেন দক্ষ ব্যাটসম্যানের মতো।

কিন্তু তাল রাখতে পারেননি মেহবুবা। ২০১০ সালে কাশ্মীরে অশান্তির সময়ে ওমর আবদুল্লা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মেহবুবা। সেই প্রসঙ্গ টেনে সাংবাদিকরা জানতে চান, তখন বাহিনীর হাতে সাধারণ কাশ্মীরিদের মৃত্যু নিয়ে তিনি সরব হয়েছিলেন। তা হলে এখন বাহিনী-জনতা সংঘর্ষে সাধারণ মানুষের মৃত্যু সমর্থন করছেন কী ভাবে? সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে মেহবুবা বলেন, ‘কাশ্মীরের মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ গোলমালের সঙ্গে জড়িত।’ তা নিয়েও প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।

এ সব প্রশ্ন শুনে স্পষ্টতই উত্তেজিত হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বোঝাতে চেষ্টা করেন, ২০১০ আর ২০১৬ সালের বিক্ষোভের ধাঁচ আলাদা। তখন মাছিল সেক্টরে ভুয়ো সংঘর্ষ হয়েছিল। শোপিয়ানে খুন ও ধর্ষণের ঘটনা হয়েছিল। কিন্তু এ বার তিন জঙ্গির মৃত্যুর পরে রাস্তায় নেমেছে কিছু মানুষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই অশান্তির সময়ে নিহত যুবক-কিশোরদের ৯৫ শতাংশই আগে বাহিনীর উপরে হামলা চালিয়েছে। তার পরে বাহিনীর পাল্টা হামলায় মারা গিয়েছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যে কিশোর সেনা ছাউনিতে হামলা চালাচ্ছে সে কি লজেন্স কিনতে যাচ্ছে? যে ১৫ বছরের কিশোর থানায় গোলমাল পাকাচ্ছে সে কি দুধ আনতে যাচ্ছে?’’ মেহবুবার দাবি, কিছু লোক কিশোর-যুবকদের ঢাল বানিয়ে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করছে। কাশ্মীরের ৯৫ শতাংশ মানুষ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চান। মাত্র ৫ শতাংশ হিংসায় বিশ্বাসী।

আরও কিছু প্রশ্ন শুনে মেহবুবার উত্তেজনাও আরও বেড়ে যায়। রাজনাথ সামলানোর চেষ্টা করলে তিনি বলেন, ‘‘এঁরা আমাকে কী প্রশ্ন করবেন? আমি এঁদের ছেলেমেয়েদের কত বার বাহিনীর হাত থেকে বাঁচিয়েছি।’’ এর পরে হঠাৎ সাংবাদিক বৈঠক শেষ করে বেরিয়ে যান তিনি। অগত্যা উঠে যেতে হয় রাজনাথকেও। কেন্দ্রের এক কর্তার আক্ষেপ, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঠিক পথেই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গিপনা তাতে অনেকটাই জল ঢেলে দিল!’’

২৬ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস‌‌‌‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে