রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৪:৫৯:২২

ভারতের যে ৫টি অস্ত্রে পাকিস্তানের ভয়

ভারতের যে ৫টি অস্ত্রে পাকিস্তানের ভয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরে ভারতীয় সেনা ব্রিগেড দফতরে বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের হামলায় ১৮ সেনা নিহতের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রীতিমতো যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।

পরমাণু শক্তিধর দেশ দুটি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তার সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে শংকিত সমর বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়া যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে দেশ দুটি নিজেদের ভাণ্ডারের কোন কোন অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের চেষ্টা করবে, তারও একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছেন তারা।

যুদ্ধে ভারতের যে পাঁচটি অস্ত্র পাকিস্তানের ভয়ের কারণ হতে পারে তার একটি চিত্র তুলে ধরেছে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষণমূলক মার্কিন ম্যাগাজিন 'ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট'।

১. বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্য : যুদ্ধক্ষেত্রে বিমানবাহী রণতরী ভারতকে পাকিস্তান থেকে এগিয়ে দেবে। কারণ, প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কোনো বিমাণবাহী রণতরী নেই। এটি সমুদ্রে পাকিস্তানের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিতে পারে।

রাশিয়া থেকে নেয়া এই বিমানবাহী রণতরী পাকিস্তানের করাচি বন্দর অচল করে দিতে ব্যবহার করতে পারে ভারতীয় নৌবাহিনী। এটি ২০১৩ সালে ভারতীয় নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়।

এই রণতরীর বিমান শাখা ২৪টি 'মিগ-২৯কে' অথবা বহুমুখী হামলায় সক্ষম 'তেজস' যুদ্ধবিমান এবং ১০টি অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার হেলিকপ্টার নিয়ে গঠিত। এছাড়া এতে রয়েছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র।

২. নিউক্লিয়ার অ্যাটাক সাবমেরিন আইএনএস চক্র : আইএনএস বিক্রামাদিত্যের অবরোধ দৃশ্যমান হলেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের যে অস্ত্রটি সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে সেটা হলো ১৪টি অ্যাটাক সাবমেরিন। এর মধ্যে পরমাণুচালিত 'আইএনএস চক্র' সবচেয়ে শক্তিশালী। এটির গতি ৩০ নট এবং ৫২০ মিটার গভীরতায় অভিযান ক্ষমতা সম্পন্ন।

যুদ্ধক্ষেত্রে 'আইএনএস চক্র' পাকিস্তান নৌবাহিনীর জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে তাদের ১১টি ফ্রিগেট এবং আটটি সাবমেরিনের জন্য এটি বড় হুমকি, যেগুলোর মাত্র তিনটি আধুনিক মানের। এছাড়া পাকিস্তানের জলসীমায় গোপনে মাইন ফেলে আসা এবং নজরদারির কাজও করতে পারে 'আইএনএস চক্র'। এতে সংযুক্ত আছে জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও টর্পেডো।

৩. এএইচ-৬৪ডি এপাচি লংবো ব্লক-৩ অ্যাটাক হেলিকপ্টার : গেরিলা যোদ্ধা এবং অনুপ্রবেশকারীদের ওপর হামলায় ভারতীয় বাহিনীর একটি মোক্ষম যুদ্ধাস্ত্র ব্লক-৩ অ্যাটাক হেলিকপ্টার। এটি ভারতীয় বাহিনীকে আকাশ হামলায় অনেকটা এগিয়ে দেবে।

যুদ্ধক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পরিক্ষিত এই অ্যাটাক হেলিকপ্টার ঘণ্টায় ১৭১ মাইল গতিতে অনেক উচ্চতায় উড়তে পারে যা ভারতের পাহাড়ি এলাকায় অভিযানে সুফল দেবে। এতে আছে ১২.৭ মিমি মেশিনগান আর গোলা থেকে সুরক্ষিত ককপিট।

এই হেলিকপ্টারের রাডার সিস্টেম কয়েক সেকেন্ডে ১২৮ যান শনাক্ত ও নির্দিষ্ট করতে পারে এবং মুহূর্তে ১৬টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে পারে। এটি এক সঙ্গে চারটি 'হেলফায়ার মিসাইল' নিক্ষেপেও সক্ষম। এছাড়া লুকিয়ে থাকা শত্রুকে শনাক্তে এতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ সেন্সর।

৪. সু-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান : আকাশসীমার নিরাপত্তায় পাকিস্তান থেকে ভারতকে এগিয়ে রাখবে তাদের বিমান বাহিনীর সু-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান। ভারতীয় বিমান বাহিনীতে এ ধরনের ২০০ যুদ্ধবিমান রয়েছে। আরও ৭০টি সু-৩০এমকেআই যুদ্ধবিমানের অর্ডার দেয়া আছে।

শক্তিশালী রাডার সিস্টেম এবং ভয়ানক সব যুদ্ধাস্ত্রে সজ্জিত দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট এই যুদ্ধবিমান ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান অবলম্বন। এটি একই সঙ্গে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। প্রায় ৩০০-৪০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই বিমানের রয়েছে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রও। পাকিস্তানের আটটি এফ-১৬ ব্লক ৫০/৫২ ছাড়া অন্য সব যুদ্ধাবিমানের চেয়ে ভারতের সু-৩০এমকেআই শক্তিশালী।

৫. পরমাণু অস্ত্র : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধে যে অস্ত্রটি নিয়ে গোটা বিশ্ব আতংকে থাকে সেটা হলো পরমাণু অস্ত্র। ভারতের রয়েছে ১১০টি থেকে ১২০টি পরমাণু বোমা। দেশ দুটি পরমাণু যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে এর পরণতি হবে ধারণাতীত।

অবশ্য পরমাণু যুদ্ধে ভূখণ্ডগত ব্যাপ্তির কারণে সুবিধা পাবে ভারত। এছাড়া পরমাণু বোমা নিক্ষেপের দিক দিয়েও এগিয়ে আছে দেশটি। পরমাণু বোমা হামলায় ভারতের প্রথম পছন্দ জঙ্গিবিমান 'জাগুয়ার'। এছাড়া রয়েছে মিগ-২৭ এবং মিরেজ ২০০০।

পাশপাশি ভারতের রয়েছে পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভার। এর মধ্যে অন্যতম ১৫০-৩৫০ কিমি পাল্লার পৃথ্বী-১,২। এছাড়া রয়েছে ৭০০-৫০০০ কিমি পাল্লার অগ্নি-১, ২, ৩, ৪ ও ৫। এর সঙ্গে যুক্ত হবে সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য স্বল্পপাল্লার পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র। - যুগান্তর
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে