সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৭, ০১:১২:১৬

রাশিয়ায় রাতভর পার্টি: ‘ওয়াশিংটন হবে আমাদের’

রাশিয়ায় রাতভর পার্টি: ‘ওয়াশিংটন হবে আমাদের’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে ২০শে জানুয়ারি দুপুর বেলা। তখন রাশিয়ার স্থানীয় সময় রাত আটটা। দু’দেশের রাজধানীর চিত্র তখন প্রায় একই। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে শপথ নিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার শপথ উপভোগ করতে নেমেছে মানুষের ঢল। ঠিক তখনই রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আনন্দ মিছিল, উল্লাস।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমর্থকরা এ মিছিল থেকে স্লোগান দিচ্ছে-  ওয়াশিংটন হবে আমাদের। তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজেকে এমন দাবি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের লোক’ এমন প্রচারণা থেকে তিনি দূরত্ব বজায় রাখছেন। দু’একদিনের মধ্যে ট্রাম্পকে শপথ নিয়ে ক্ষমতায় আসার কারণে ফোন করে তার অভিনন্দন জানানোর কথা। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

এতে বলা হয়েছে মস্কোতে শুক্রবার রাতভর চলেছে পার্টি। এতে শোভা পায় ডনাল্ড ট্রাম্প, ভ্লাদিমির পুতিন ও ম্যাঁরি লি পেনের ছবি। মস্কোতে এমন আনন্দ উৎসবের অন্যতম আয়োজক কোস্তান্তিন রিকোভ। তিনি পুতিনের ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন একজন এমপি। তাকে ক্রেমলিনের ওয়েব প্রচারণাকারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তিনি ওই উল্লাস আনন্দ আয়োজনে যোগ দিতে অনুসারীদের আমন্ত্রণ জানান ফেসবুকে।

তাতে লেখেন- ‘তোমাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে রাতে। ওয়াশিংটন হবে আমাদের’। এতে তিনি আরো লিখেছেন, আমি আপনাদেরকে অনুষ্ঠানের ভেন্যুতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার আগেই পৌঁছে যেতে অনুরোধ করছি। তা নাহলে আপনারা গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ‘প্রেসিডেন্টের শপথ’ মিস করবেন। মিস করবেন আরো অনেক কিছু। মস্কোতে সোভিয়েত ইউনিয়ন আমলের পোস্ট অফিস এলাকায় এমন পার্টি আয়োজন করা হয়, যাতে টসারগ্রাদ টিভিতে তা প্রচার করা হয়।

এ চ্যানেলটি পুতিনপন্থি কট্টর রাশিয়ান টিভি চ্যানেল। এ খবরটি এসেছে এমন সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু সহযোগীর সঙ্গে রাশিয়ার কর্মকর্তাদের গোপন সম্পর্কের কথা প্রকাশ পেয়েছে। সে অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে এবার রাশিয়ার হস্তক্ষেপের কথা অস্বীকার করেছেন পুতিন। তবে রিকোভও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ট্রাম্পকে দেয়া সমর্থনের বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করেছেন।

গত মার্চে রয়টার্স রিপোর্ট করেছে যে, রিকোভ তার সামাজিক মিডিয়ার অনুসারীদের বলেছেন, রাশিয়ার প্রশংসা করেন আমেরিকান অভিজাত ২০ বছরের মধ্যে এমন প্রথম ব্যক্তি হলেন ট্রাম্প। ট্রাম্প আমেরিকাকে পাল্টে ফেলবেন। আমাদের হারানোর কিছুই নেই। আমরা কি নানী হিলারিকে চিনি? না।

উল্লেখ্য, ট্রাম্পকে নিয়ে রাশিয়ায় একরকম আশার সঞ্চার হয়েছে। মনে করা হচ্ছে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির সময়ে দু’দেশের মধ্যেকার উত্তেজনাকর অবস্থা সহজ হবে। ক্রাইমিয়া নিয়ে আরোপিত অবরোধ প্রত্যাহার হবে। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পুতিনের সমালোচক ও রাশিয়ার সাবেক পার্লামেন্টারিয়ান গেন্নাদি গুডকভ বলেছিলেন, ট্রাম্প ম্যানিয়া পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মিডিয়া, রাজনীতিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, জ্যোতির্বিদ এমনকি গৃহবধূ- কেউই মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারেন নি। তারা নিজেদের কাজে মন দিতে পারেন নি। রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যমগুলোতে মূল এক্টর হলো ট্রাম্প। ওদিকে জ্লাতোস্ত শহরের শিল্পীরা সিলভার ও স্বর্ণের মুদ্রা প্রকাশ করেছেন ট্রাম্পকে স্মরণীয় করতে। তাতে খোদাই করে লেখা হয়েছে ‘ইন ট্রাম্প উই ট্রাস্ট’। যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রায় খোদিত আছে ‘ইন গড উই ট্রাস্ট’। তার পরিবর্তে তারা এমন স্লোগান যুক্ত করেছে। - এমজমিন
২৩ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে