বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ০৫:৪৪:১৪

ট্রাম্প-জমানা ঠিক কতটা বিপদ ডেকে আনছে পৃথিবীর?

ট্রাম্প-জমানা ঠিক কতটা বিপদ ডেকে আনছে পৃথিবীর?

পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়: জানুয়ারি মাসে যখন কলকাতায় গিয়েছিলাম, তখনও ওবামা প্রেসিডেন্ট। ফেব্রুয়ারিতে যখন আমেরিকায় ফিরে এলাম, তখন গদিতে ট্রাম্প।

 
লোকে হাসাহাসি করছে। এই লোকটা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট? ছি ছি, আমেরিকার কী দশা! কী পতন! এদেশের মানুষের মগজধোলাই কি এতটাই হয়ে গিয়েছে যে, তারা এমন একজন ভাঁড়কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো সুপারপাওয়ারের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত করল? যে নির্বাচনের উপরে সারা পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে? যে লোকটার প্রতিটি কথা, চালচলন, কাজকর্ম আমাদের ভারতের একটা নিম্নশ্রেণির পাড়ার মাস্তান থেকে উঠে আসা পার্টির দাদার মতো? বা, তার চাইতেও নিকৃষ্ট? সারা পৃথিবীর লোকে হাসছে আমেরিকার অবস্থা দেখে। এদেশের মানুষের বিচার-বিবেচনা, বুদ্ধি-বিশ্লেষণের নমুনা দেখে।

 
সবাই বলছে, হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে কত ভাল হতো! সেটাও তেমন কিছু না জেনেশুনেই বলছে। এ বিষয়ে পরে আসা যাবে।
আবার লক্ষ মানুষ ভয়ে, অনিশ্চিত এক আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কোথা থেকে, কবে যে বলির খাঁড়া তাঁদের উপরে নেমে আসবে, সেই আশঙ্কায় তাঁরা দিশেহারা হয়ে উঠেছেন। মুসলমান নাম হলে, মুসলিম দেশের নাগরিক হলে আতঙ্ক আরো বেশি। এই লোকটা ভয়ঙ্কর যুদ্ধবাদী। এর মাথার কোনো ঠিক নেই। দুদিন আগেই ঘোষণা করেছিল, পারমাণবিক অস্ত্র ও তার লড়াই নাকি স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ভাল। এ লোকটা জানেই না, কী বলছে। এ কোনও আন্তর্জাতিক আইনকানুনের ধার ধারে না। এ কোনও জাতিসংঘ, রাষ্ট্রসংঘকে মানে না। বিজ্ঞান বোঝে না, ইতিহাস পড়ে না, ধর্ম, দর্শন, সমাজনীতি, জাতি, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতি, আজকের পৃথিবীর আর্থ-সামাজিক জটিলতা— কোনও বিষয়েই এ লোকটার কোনও জ্ঞান বুদ্ধি বিশ্লেষণ কিচ্ছু নেই।


এক অতি সরলীকৃত ফর্মুলা নিয়ে লোকটা চলে। সে ফর্মুলা হলো— শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান, খ্রিস্টান আমেরিকান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি, এবং তার মধ্যেও পুরুষরা আরো শ্রেষ্ঠ। তাদের হাতেই থাকবে অর্থ, ক্ষমতা, অস্ত্রশস্ত্র, মিডিয়া, ওয়াল স্ট্রিট, হলিউড, গাড়ি, জাহাজ ও প্লেন চালাবার তেল। শুধু তারা নয়, তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতা ও অর্থের উচ্চতম শিখরে বসে আছে, তাদের জন্যেই সারা পৃথিবীর সব দেশ, সব মানুষ কাজ করবে। যদি তারা বশংবদ ভৃত্যের মতো কাজ করে যায়, ফাইন। যদি আপত্তি করে, বেশি টাকা চায়, স্বাস্থ্যের অধিকার চায়, শিক্ষার অধিকার, দূষণমুক্ত পরিবেশের অধিকার, সংগঠিত হওয়ার অধিকার চায়, তাদের ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হবে। ঠিক যেমন সে তার নিজের ট্রাম্প টাওয়ার নামক ভরাডুবি বাণিজ্য থেকে বেলআউট নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে, এবং স্বৈরতান্ত্রিক, চরম বৈষম্যমূলক শাসন চালিয়েছে এতদিন ধরে। সে আমেরিকার সরকার চালানোও তার হোটেল ও ক্যাসিনো চালানোর মতোই মনে করে।
 

আমেরিকার মধ্যে পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে যদি মার খাওয়া মানুষ রুখে দাঁড়ায়, পুলিশকে আরো বেশি মিলিটারির ক্ষমতা দেওয়া হবে যাতে তারা সেই ভীষণ মেশিনগান আর স্টেনগান আর কাঁদানে গ্যাস আর ভয়ঙ্কর সব মারণাস্ত্র দিয়ে প্রতিবাদীদের শেষ করে দিতে পারে। বিচারে কোনওদিনই আমেরিকার পুলিশের কোনো সাজা হয় না, সুতরাং তারা বেপরোয়া।

 
এর পরে রয়েছে বলির পাঁঠা মেক্সিকো আর লাতিন আমেরিকার নানা দেশ থেকে না খেতে পেয়ে পালিয়ে আসা গরিব ইমিগ্র্যান্টরা। ঠিক যেমন আমাদের দেশে সব অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জন্যে আজকাল বাংলাদেশ থেকে বর্ডার টপকে আসা লোকগুলোকে দায়ী করা হচ্ছে, এদেশে তেমনই স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলা এই কয়েক লক্ষ উদ্বাস্তু। একে তো এরা গরিবের গরিব, তার উপরে গায়ের রং সাদা নয়, আর ইংরিজিও বলতে জানে না। হাতকড়া পরিয়ে কোর্টে হাজির করো, আর ইংরিজি ভাষায় শমন ধরিয়ে পত্রপাঠ বিদেয় করো। নয়তো প্রাইভেট জেলে বন্দি করে রাখো দীর্ঘদিন। শ্বেতাঙ্গ আমেরিকাকে আর কলুষিত করতে দেবে না ট্রাম্পের কু ক্লাক্স ক্ল্যান আমেরিকা। ঠিক যেমন হিন্দু ভারতবর্ষকে কলুষিত করতে আর পারবে না হিন্দুত্ববিরোধী মুসলমান আর বহিরাগতরা।

 
যদিও এই পরিচয়বিহীন ইমিগ্র্যান্টদের সংখ্যা সর্বসাকুল্যে দশ কি এগারো মিলিয়ন, যা কিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার তিন শতাংশ, কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না। আমেরিকার মানুষ কোনোদিনই অঙ্কে তেমন ভাল নয়, সুতরাং শতাকিয়া কড়াকিয়া পার্সেন্ট ওসব ব্যাপার নিয়ে তারা মাথা ঘামায় না। তা ছাড়া, ঠিক আমাদের দেশের মতোই, এগারো মিলিয়নকে রাতারাতি একশো দশ মিলিয়ন বলে রটিয়ে দিলে ‘শাস্ত্রমতে ক্ষতি নেই তাতে’। ফেসবুক, টুইটার, এসবে আমেরিকার মুসলমান আর ইমিগ্র্যান্টবিরোধী জনগণ খুব পটু। এখানেও ভারতের সঙ্গে এদেশটার আশ্চর্য মিল! আর বাকি যেগুলো হাত-পা ছোঁড়ে খুব, সেগুলো হলো আমেরিকায় ব্ল্যাকরা, যাদের আমাদের ভারতীয় ও বাঙালি ইমিগ্র্যান্টরা প্রতিনিয়ত ‘কাল্লু’ বা ‘কালুয়া’ বলে গালাগালি দিয়ে থাকে। আর আমাদের দেশে তাদের জায়গায় রয়েছে দলিত বা শূদ্ররা। এদেশে কৃষ্ণাঙ্গরা নির্যাতিত, লাঞ্ছিত, এবং অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত। আমাদের দেশে অন্ত্যজশ্রেণীর মানুষও তাই।


কিন্তু এসবের উপরেও এই এক মাসের মধ্যেই ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড দেখলে ভয়ঙ্কর আশঙ্কিত না হয়ে পারা যাচ্ছে না। লোকটা এখনও পর্যন্ত যা যা করেছে, তার মধ্যে প্রধান হলো এই। বেটসি ডেভোস নামে এক মহিলাকে এডুকেশন সেক্রেটারি বা আমাদের দেশে যাকে বলে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী, সেই পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। (মোদির শিক্ষামন্ত্রী প্রসঙ্গ আপাতত থাক।) এই মহিলা এদেশের বিশাল এবং বহুকালের পুরোনো সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়ার জন্যে বদ্ধপরিকর। এমনিতেই রেগানের সময় থেকে এদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যানবাহন এবং ব্যবসাবাণিজ্য সম্পূর্ণভাবেই প্রায় বেসরকারি হাতে চলে গিয়েছে, এবং গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্যে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। উচ্চশিক্ষা এবং সুস্বাস্থ্য, দুটোই এদেশের যাকে বলে ৯৯ পার্সেন্ট— তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। আমেরিকার নামকরা আইভি লিগ কলেজে পড়ানো তো দূরের কথা, সাধারণ কলেজগুলোতেই চার বছর পড়াতে গেলে ছাত্রছাত্রী ও তাদের বাবামায়ের ঋণে সর্বস্বান্ত হয়ে যেতে হচ্ছে। এখন এই মহিলা বাকিটাও শেষ করে দেবেন, এই ঘোষণা করেছেন।

 
জেফ সেশন্স বলে এক টি-পার্টি ভ্যারাইটির রিপাবলিকান সেনেটরকে এটর্নি জেনারেল পদে মনোনীত করা হয়েছে, যে লোকটা বহু বছর ধরে বর্ণবিদ্বেষী কথাবার্তা বলে এসেছে। যে চরম ইমিগ্র্যান্টবিরোধী, এবং যে ব্ল্যাকদের সংগঠন এন ডবল এ সি পি, তা ছাড়া আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন এসব সুবিচার ও মানবাধিকার সংস্থাকে ‘আমেরিকা-বিরোধী’ বলে তকমা দিয়ে এসেছে বরাবর। এর হাতে এখন আমেরিকার বিচারব্যবস্থা বর্তালো। বুঝতেই পারছেন কী হতে চলেছে।

 
তার উপরে রয়েছে বিশাল বহুজাতিক কর্পোরেশন ও সবচেয়ে ধনী যারা, সেই ওয়ান পার্সেন্ট ব্যক্তিদের উপর থেকে ট্যাক্স আরো কমিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার। যা আমাদের দেশেও এখন খুব বেশি করে দেখা যাচ্ছে। রেগানের সময়ে থেকে এই খেলাটি শুরু হয়, এবং এখন মিডিয়ার প্রচারের ফলে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে একদিকে অর্থনৈতিক বৈষম্য আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছে, ধনীরা আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সম্পদ ও অর্থের মালিক হয়ে বসে আছে, কিন্তু তারা কোনো ট্যাক্স দিচ্ছে না। আমাদের মতো সাধারণ মানুষ আমেরিকায় উপার্জনের এক-তৃতীয়াংশ প্রতি বছর ট্যাক্স দিচ্ছি, কিন্তু বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, জেনারেল ইলেক্ট্রিক, বোয়িং, এক্সন, ওয়াল-মার্ট, অ্যাপল, বা এই ধরনের কর্পোরেশনগুলো এবং তাদের বিলিওনেয়ার সি ই ও-রা কোনও ট্যাক্স দিচ্ছে না। এখন ট্রাম্পের শাসনকালে এদের আরও বেশি করে ছাড় দেওয়া হবে। এসব খবর শুনে ওয়াল স্ট্রিট উল্লসিত। এ সপ্তাহে কেবলমাত্র এই ঘোষণা আসতে পারে, সেই উত্তেজনায় স্টক মার্কেট লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যে ট্রাম্প ভোটের প্রচারের সময়ে সাধারণ মার্কিন জনগণের হয়ে কাজ করবে বলে অঙ্গীকার করেছিল, সে ভোটে জেতার পরেই গোল্ডম্যান স্যাক্স-জাতীয় অর্থনৈতিক সন্ত্রাসী কর্পোরেশনের মালিকদের ট্রেজারির প্রধান পদে নিয়োগ করেছে। এখন ধণিকশ্রেণীর ট্যাক্স মকুব।

 
ঠিক যেমন আমাদের দেশে এখন আম্বানি-আদানিদের রমরমা। মহানুভব ইন্ডিয়ান গভর্ণমেন্ট এখন প্রতি পদক্ষেপে মার্কিন প্রভুদের পদানুসরণ করে চলেছেন। খেলাটা একই। আপনি-আমি আদার ব্যাপারি হয়তো জাহাজের খোঁজ রাখি না। কিন্তু রাখলে একটু ভালো হতো। গণতন্ত্রে শিক্ষা ও সচেতনতা একটি মূল্যবান বস্তু।

 
এর পরেও আছে যুদ্ধ। আমেরিকার যুদ্ধব্যবসায়ীরা ওবামা ও ক্লিনটনের সময়েও মুনাফা করে এসেছে, আর বুশ ও রেগানের কুড়ি বছরে তো করেছেই। লুটেপুটে খেয়েছে তারা। আমেরিকার যুদ্ধব্যবসা আজকের নয়। সেই দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ও এবং তার পর থেকে এই যুদ্ধব্যবসার মাধ্যমেই আমেরিকার আজকের এতো রমরমা। সুপারপাওয়ার পদে অধিষ্ঠান, ইত্যাদি। ট্রাম্প নামক জাতিবিদ্বেষী, বর্ণবিদ্বেষী ব্যক্তি জাদুকর বরফির ড্রাগ খাওয়া হাল্লা রাজার মতোই হিংস্র, রক্তলোলুপ। সে যুদ্ধে যাবেই। সে আগে থেকেই ‘বার্তা ভীষণ শোনো হে তোমরা’ বলে হুহুংকার করে এসেছে। এখন তার হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা। সে কী না করতে পারে!

 
যে সাতটা মুসলমান দেশকে সে চিহ্নিত করেছে, বোঝাই যাচ্ছে তার লক্ষ্য তাদের দিকেই একেবারে প্রথমে। ইজরায়েলকে বেশি চটাতে চাইবে না ট্রাম্পের নতুন সরকার। সুতরাং, যে দেশগুলো ইজরায়েলের শত্রু, তাদের দিকেই দূরপাল্লার আণবিক শক্তিচালিত সব ক্ষেপণাস্ত্র টার্গেট করা থাকবে। তার থেকে শুরু হবে আর এক হিংসার রাজত্ব, এবং আমেরিকার রাষ্ট্রসন্ত্রাস ধর্মীয় সন্ত্রাসীদের আরো ক্ষিপ্ত করে তুলবে। নতুন করে ভায়োলেন্স-যুগ শুরু হবে সারা পৃথিবী জুড়ে।


 হিলারি ক্লিন্টনের কথা একটু না বললেই নয়। যদিও ভদ্রমহিলা ট্রাম্পের থেকে কুড়ি লক্ষ ভোট বেশি পেয়েছিলেন, এবং আমেরিকার প্রাগৈতিহাসিক নির্বাচনী ব্যবস্থার কারণে তা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারলেন না। কিন্তু বলতে কোনো বাধা নেই, ট্রাম্পের কাছে হারার জন্যে এলেম লাগে। আমেরিকায় এখন একটা জোক চলছে খুব, ‘ইট টেকস এ স্পেশাল ওম্যান টু গেট ডিফিটেড বাই ট্রাম্প’। শুধুমাত্র অহংকার, আকাশচুম্বী ইগো, ট্রাম্পকে সিরিয়াসলি না নেওয়া, বিভিন্ন সংবেদনশীল জায়গায় যেমন ওহায়ো, মিশিগান, উইসকনসিন এসব সুইং স্টেট, যেখানে বিরাট সংখ্যক, অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ব্লু কলার শ্রমিক বাস করে, সেখানে প্রচার না করা, না যাওয়া, নিজেকে নির্বাচিত হওয়ার আগেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে ধরে নিয়ে তার মতো রাজকীয় আচরণ, এবং আমেরিকার জনগণের প্রচন্ড সরকারবিরোধী ক্ষোভ আঁচ করতে না পারা — হিলারির হারের কারণ।


আমরা যখন রাস্তায়, রেস্তোরাঁয়, ডাইনারে, পার্কে, বোলিং ক্লাবে সাধারণ আমেরিকানদের কথাবার্তা শুনছি, এমনকী আমাদের নিউ ইয়র্কের মতো শক্তিশালী ডেমোক্রেটিক রাজ্যেও শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থনে ফিসফাস কথা শুনছি প্রতিদিন, তখন টেক্সাস, মিসিসিপি, জর্জিয়া, লুইসিয়ানার মতো অতি-দক্ষিণপন্থী রাজ্যের কথা ছেড়েই দিলাম, ওই সুইং স্টেটগুলোতে কী ভাবে মানুষ ভাবনাচিন্তা করছিল, তা অনুমান করতে কোনও অসুবিধে হয় না। আমরা একটু একটু বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমস আর সি এন এন প্রতিদিন বলে যাচ্ছিল, হিলারির জয় কেউ আটকাতে পারবে না। আমরা চুনোপুঁটি। আমাদের কথা কে শোনে?

 
হিলারি ক্লিনটন ও তাঁর বিখ্যাত (বা মতান্তরে কুখ্যাত) স্বামী যদি আর একটু মাটিতে পা রাখতেন, বা কান পাততেন, তা হলেই এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয় থেকে আমেরিকা ও পৃথিবীর মানুষকে রক্ষা করতে পারতেন। তা ছাড়া, বার্নি স্যান্ডার্সের মতো সত্যিকারের একজন সৎ, প্রগতিশীল, শান্তিকামী ও সমানাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্বকে সম্মান জানালে সকলেরই মঙ্গল হতো।

 
আজ বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে গিয়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনার আর কোনো রাস্তা খোলা নেই।
আমরা যারা রাস্তায় নেমে লড়াই করে যাচ্ছি বহু বছর ধরে, তারা লড়াই করেই যাব। কিন্তু, এই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবে কে? আর এই নতুন বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের নতুন বলি হবে কারা? ‘হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী’তে ‘ঘোরকুটিল পন্থ’ আর ‘লোভজটিল দ্বন্দ্ব’ মানবজাতিকেই বিলোপ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তাকে বন্ধ করবে কে? কোন যুগাবতার?-এবেলা
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে