আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পবিত্র জেরুজালেম শহরকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করা হলে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান। এছাড়া এমন ঘোষণা দেয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হুশিয়ার করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার আঙ্কারায় দলীয় অনুষ্ঠানের ভাষণে এরদোগান বলেন, মিস্টার ট্রাম্প, জেরুজালেম মুসলিমদের জন্য রেড লাইন। ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নিলে পাঁচ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্যদের শীর্ষ বৈঠকের আহ্বান জানানো হবে বলে ঘোষণা দেন ওআইসির বর্তমান সভাপতি এরদোগান।
এছাড়া তুরস্ক ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের বিষয়টি বিবেচনা করবে বলেও জানিয়ে দেন এরদোগান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানীর স্বীকৃতি দিচ্ছে বলে সংবাদ মাধ্যমে খবর রটেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি মাসের ৬ তারিখেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পশ্চিম জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপন করতে পারেন। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলেই জেরুজালেম ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতি পাবে।
এদিকে, তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস ফিলিস্তিনের জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সংগঠনটি বলছে, সেখানে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের অর্থ হবে জেরুজালেম শহরকে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।
তবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ বলছে, দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী করার দাবিকে পাশ কাটিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তার প্রভাব হবে ধ্বংসাত্মক। শনিবার হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে তা হবে জেরুজালেমের আল-কুদস শহরের ওপর মার্কিন আগ্রাসন। এটা সেখানে ইহুদিবাদী দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার নামান্তর।’
এদিকে ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন দল পিএলও বলেছে, জেরুজালেমের ওপর যে কোনও ধরনের আঘাত আসলে তা হবে ‘আগুন নিয়ে খেলা’র শামিল। মুসলিম-খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ভূমিকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিলে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে বলেও মন্তব্য করেছে তারা।
ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন-পিএলও মহাসচিব সায়েবে এরেকাত বলেন, জেরুজালেম শুধু ফিলিস্তিনের জন্যই নয়, সারা বিশ্বের মুসলিম ও খ্রিস্টানদের জন্যও স্পর্শকাতর বিষয়। মার্কিন প্রশাসন জেরুজালেমের ঐতিহাসিক তাৎপর্য বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। জেরুজালেম, আল আকসা মসজিদ কিংবা সেখানকার চার্চের ওপর যে কোনও ধরনের আঘাত আসলে তা হবে আগুন নিয়ে খেলার শামিল।’
এমটিনিউজ/এসএস