শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১১:১৮:৩১

অনিশ্চিত গন্তব্যে সৌদি আরব!

  অনিশ্চিত গন্তব্যে সৌদি আরব!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে বুধবার অনুষ্ঠিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেননি সৌদি আরবের রাজা সালমান বিন আবদুল আজিজ কিংবা যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান। এ সম্মেলনে সৌদি সরকার এমনকী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও পাঠাননি। বিষয়টি নিয়ে এরইমধ্যে নানা প্রশ্ন ও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

বিশ্বের দেশে দেশে মুসলমানেরা কষ্ট পেয়েছেন। ইস্তাম্বুল সম্মেলনে পাঠানো হয়েছে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে। অথচ সৌদি আরবেই রয়েছে ওআইসি'র সদরদপ্তর। এছাড়া, মিশরসহ অন্য আরো কয়েকটি আরব দেশ তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ মূলধারার গণমাধ্যমে নানা সন্দেহে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে বলছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরাইলের সাম্প্রতিক নানা যোগাযোগের পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বায়তুল মুকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। সেই কারণেই সম্ভবত সৌদি রাজা কিংবা যুবরাজ এ সম্মেলনে যান নি।

অনেকে বলেছেন, তোপের মুখে পড়ার আশংকায় সম্মেলনে অংশ নেননি সৌদি রাজা কিংবা যুবরাজ। অনেকে বলেছেন, সৌদি আরবের শীর্ষ নেতৃত্ব এ সম্মেলনে অংশ না নিয়ে প্রমাণ করেছেন- তারা ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে নন বরং ইসরাইল ও আমেরিকা স্বার্থের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে আরব বিশ্ব সবসময় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। শুধু এ অঞ্চলের জ্বালানি সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ নয়, ইসরাইল নামক রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এর প্রধান কারণ। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে পারমাণবিক শক্তি অর্জন পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপে সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

ইসরাইল প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় অনমনীয় থাকলেও মুসলিম বিশ্বের প্রতিক্রিয়ার দিকটি বিবেচনায় নিয়ে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা হতো। ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর ইসরাইল প্রশ্নে মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে রাখঢাকের পর্দাটি সরিয়ে নিয়েছেন। জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার মধ্য দিয়ে এবার তা দৃশ্যমান হয়ে উঠল।

ইসরাইলকে ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে বর্তমান পরিস্থিতির মতো সুসময় মনে হয় আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামনে আসবে না। অপর দিকে, ইসরাইলও এমন সময়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, আরব দেশগুলোতে ইসরাইল এমন কিছু বন্ধু পেয়েছে, যা ইসরাইলের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে।

ইসরাইলের এই দুই পরম বন্ধু হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা ও জামাতা জ্যারেড কুশনার এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। চল্লিশের কম বয়সী এই দুই তরুণ মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি সম্ভবত বদলে দিতে চলেছেন। ভবিষ্যতে এর পরিণতি কী হবে তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা হচ্ছে। তবে মুসলিম বিশ্বের জনসমর্থন হারালে সৌদি আরবের ইমেজ ও ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হবে।-পার্সটুডে
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে