রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৬:৪৭:৫০

মিয়ানমারের ওপর শিগগিরই মার্কিন অবরোধ

মিয়ানমারের ওপর শিগগিরই মার্কিন অবরোধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বর্বর নির্যাতনের জন্য দায়ীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কাজ এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। এরই মধ্যে দায়ী এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে সেই ব্যক্তিকে তার কোনো ইঙ্গিত দেয়া হয়নি। সম্ভাব্য আরো কয়েকজনের দায়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তিনি।

মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কথা বলতে গিয়ে গতকাল শুক্রবার জাতিসঙ্ঘে টিলারসন সাংবাদিকদের এসব জানান। রাখাইনে মিয়ানমার বাহিনীর নির্যাতনে চলতি বছর আগস্ট থেকে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নিজ এলাকা ছেড়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নির্যাতনকে নভেম্বরে ‘জাতিগত শুদ্ধি’ অভিযান বলে ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী; ওয়াশিংটন দায়ীদের ওপর ‘নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের বিষয়টি চিন্তা করছে বলে সে সময় জানিয়েছিলেন তিনি। টিলারসন বলেন ‘যার কারণে মিয়ানমার থেকে বিপুল দেশান্তরের ঘটনা ঘটেছে সেই আগস্ট হামলার পর থেকে হওয়া সব ঘটনা ও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি আমরা; যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার জন্য এরই মধ্যে দায়ী একজনকে চিহ্নিত করেছি, সম্ভাব্য অন্যদের বিষয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে’।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন প্রথম পর্যায়ে সীমিত ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ বাড়ানোর লক্ষ্যে এ ব্যবস্থা নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র্। তবে এ নিষেধাজ্ঞায় সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন তারা। মিয়ানমারের ওপর আরোপ করা যে ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন তা নতুন করে আরোপ করা যায় কি না, তা-ও যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

কিন্তু মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে অভিযুক্তকারী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক আইনপ্রণেতা সীমিত আকারের এ নতুন নিষেধাজ্ঞায় সন্তুষ্ট হবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী শুধু রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান চালায়নি; বরং তাদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে যাতে তারা আর ফিরতে না পারে। সেই সাথে নারীদের ওপর নির্লজ্জ গণধর্ষণ অভিযান চালানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। রেডক্রস বলেছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আর মাত্র তিন লাখ রোহিঙ্গা আছে। সাম্প্রতিক সময়ে আবারো সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। এখন প্রতিদিন প্রায় ৩০০ করে রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। সংস্থাটি আরো বলছে, গত মাসে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তা ‘সম্পূর্ণ’ চুক্তি নয় এবং এ চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের এই মুহূর্তে রাখাইন রাজ্যে পাঠানো ঠিক হবে না।-রয়টার্স
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে