বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮, ১১:১৩:৩৩

বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়ে নববধূকে ‘হেলমেট’ দিলো পুলিশ

বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়ে নববধূকে ‘হেলমেট’ দিলো পুলিশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিয়ে বাড়িতে ‘রিটার্ন গিফ্‌ট’। উপহার অবশ্য দিল পুলিশ। যারা মোটর বাইক চড়ে নিমন্ত্রণে এসেছিলেন— সকলের মাথায় হেলমেট পরিয়ে দিলো পুলিশ। বাদ পড়েননি স্বয়ং বর বাবাজিও। তারও যে মোটর বাইক রয়েছে।

‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ স্টিকার সাঁটা একটি হেলমেট তুলে দেওয়া হয়েছে কনের হাতেও— আগামীর পথ যেন না-শেষ হয়। কনের বাবা কলকাতার চন্দনগরের শুক সনাতনতলা এলাকার বাসিন্দা অশোক রায় কাজ করতেন একটি বেসরকারি সংস্থায়। বছর কয়েক আগে উঠে গিয়েছে সে সংস্থা।

সংসারের অবস্থা ভাল নয়। তাই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেবেন বলেই স্থির করেন বছর খানেক আগে। দেখাশোনা করে ঠিকও করে ফেলেন বিয়ে। পাত্র স্বরূপ চট্টোপাধ্যায়ও একটি সাধারণ চাকরি করেন। কিন্তু পাড়ায় সকলের প্রিয় রাখির বিয়ে।

তাই প্রতিবেশীরাই এগিয়ে এসেছিলেন রায় দম্পতিকে সাহায্য করতে। রাখির পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি নেই— সে খবর পৌঁছেছিল কমিশনারেটেও। পুলিশের বড়কর্তারাই চন্দননগর থানায় নির্দেশ পাঠান বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর করতে। ঠিক হয়, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ওই পরিবারের পাশে দাঁড়াবে পুলিশও।

তবে কমিশনারেটের এডিসিপি ইসরত জাহান আলিমা রহমান পুলিশকে নির্দেশ দেন, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফের প্রচারের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। চন্দননগর থানার ওসি স্বপন ঠাকুরের আয়োজনে পুরো বিষয়টি মিটে গিয়েছে সোমবার।

রাখির বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল এক প্রতিবেশীর বাড়িতেই। সন্ধ্যা থেকে অতিথি আপ্যায়নে হাজির ছিল চন্দননগর থানার পুলিশ। প্রীতিভোজেও ছিল পুলিশি ছোঁয়া। অতিথিদের যে জলের বোতল দেওয়া হয়, তাতেও পথ নিরাপত্তার কথা লেখা ছিল। মেনু কার্ডেও সেই বার্তা। এমনকী সন্দেশও তৈরি করা হয়েছে হেলমেটের আদলে।

গোটা ঘটনায় আপ্লুত অশোকবাবু। মেয়ের বিয়ে দিয়ে উঠে তিনি বললেন, ‘পুলিশের নামে তো কত কথাই শুনি। কিন্তু এমন কাণ্ড কখনও দেখিনি।’ হাসার চেষ্টা করলেন বটে— তবু গলা ভিজে গেল তার।

পুলিশ কর্মকর্তা ইসরাত জাহান অবশ্য বলেলেন, ‘এ আর এমন কী? পুলিশ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সামাজিক কর্তব্য করেছে। তবে নিরাপত্তার ভাবনাটাও আমাদের ভাবতে হবে।’

স্বরূপ আর রাখি কোনও কথা বলেননি। ইসরাত জাহানের হাত থেকে উপহার নিয়েছেন দু’জনেই— নীল হেলমেট। শুধু হাসিটুকু লেগে থেকেছে মুখে। আর ভোজ সেরে উঠে বরযাত্রীরা বলেছেন, ‘এমন বিয়ে কখনও খাইনি।’

পুলিশ কর্মীদের একাংশ আবার আড়ালে বলেছেন, ‘এমন প্রশংসাও আমরা আগে কখনও পাইনি।’

এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে