বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১৮, ০৫:১৯:৪৯

আরব রাজকন্যা উধাও! চারদিকে তোলপাড়

আরব রাজকন্যা উধাও! চারদিকে তোলপাড়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গোয়ার উপকূল থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন দুবাইয়ের রাজার মেয়ে শেখা লতিফা। দুবাই আমিরশাহির রাজা এখন মহম্মদ বিন রশিদ সইদ আল মাকতৌম। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রধানমন্ত্রীও তিনি। লতিফা তার মেয়ে।

সম্প্রতি লতিফা পালিয়ে ভারতে এসেছিলেন। ৪ মার্চ সমুদ্রসৈকত থেকে লতিফা একটি ভিডিও বার্তা হোয়াটসঅ্যাপে দেন। সেখানেই তিনি দাবি করেন, বন্দুকবাজেরা তাকে ঘিরে ফেলেছে। কেবিনের বাইরে গুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। এই হয়তো তার শেষ ভিডিও।

সূত্রের দাবি, সে সময় লতিফার অবস্থান ছিল ভারতীয় উপকূলসীমা থেকে ৫০ মাইল দূরে। তিনি জলপথে আমেরিকা যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। যদিও ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর তরফে এ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি।

মঙ্গলবার লতিফার মার্কিন আইনজীবী একটি অন্য ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তিনি মারা গেলে বা নিখোঁজ হলে প্রকাশ করার জন্য ভিডিও বিবৃতিটি লতিফা রেকর্ড করে রেখেছিলেন বলে ওই আইনজীবীর দাবি। সেখানে ৩৩ বছরের ওই তরুণী তার বাবার বিরুদ্ধেই নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। লতিফার বক্তব্য, পরিবারে অমতে তার এক বোনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাড়িতে তাকে নির্যাতন করা হত, আটকে রাখা হত। তিনি যে পালিয়ে আমেরিকায় গিয়ে স্বাধীন জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখছেন, সে কথাও বলেছেন। এর পরপরই আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়, আমেরিকার বাসিন্দা, ফরাসি লেখক হার্ভে জবার্টের সঙ্গে লতিফা পালিয়ে ভারতে এসেছেন।

কিন্তু ভারত থেকে আমেরিকা উড়ে যাওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন লতিফা। কারণ বিমানবন্দরে তার পরিচয় জানাজানি হওয়া মাত্র ভারত সরকার তাকে দুবাই ফেরত পাঠাবে বলে আশঙ্কা করছিলেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি লতিফা ব্রিটেনের আইনি সহায়তা দানকারী সংস্থা ‘ডিটেনড ইন দুবাই’-কে মেল করে সাহায্য চান। ওই সংস্থার আইনজীবী রাধা স্টারলিং-ই লতিফার মেল আইডি যাচাই করিয়ে লতিফার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হন। রাধাকেও লতিফা তার নির্যাতনের ইতিহাস লিখেছিলেন।

লতিফার সঙ্গী হার্ভেও রাধাকে জানান, ৫ মার্চ ভারত থেকে আমেরিকা উড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা কার্যকর হবে কি না, সন্দেহ। শেষমেশ তার আগেই আমেরিকায় নথিভুক্ত একটি নৌকা নিয়েই পালানোর চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু বিপদ তাতে এড়ানো যায়নি। ৪ মার্চ লতিফার হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, লতিফা আর হার্ভেকে ঘিরে রেখেছে বন্দুকধারীরা। তারপর থেকে আর যোগাযোগ করা যায়নি। মেসেজের উত্তর দেননি লতিফা।

রাধা ইতিমধ্যে আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ভারতকে নিখোঁজ যুগলের কথা জানিয়েছেন। তবে ভারত কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। এক পদস্থ গোয়েন্দা অফিসার বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। সম্পূর্ণ না জেনে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

সম্প্রতি দাউদ ইব্রাহিমের প্রধান সহযোগী ফারুক টাকলাকে দুবাই থেকে ভারতে নিয়ে এসেছে নয়াদিল্লি। তাই নিয়ে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে দুবাইয়ের রাজপরিবার। এখন রাজার মেয়ে ভারতে গোপন আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানাজানি হলে ভারতের বিড়ম্বনা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে