আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাস্তার ধারে পার্ক। সেখানে যুগলদের আলিঙ্গনরত দৃশ্য দেখতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললেন মিনিবাসের চালক। তার পরই উল্টো দিক থেকে আসা একটি পিক-আপ ভ্যানে সজোরে ধাক্কা। গতকাল রবিবার, ২০মে ২০১৮ সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকার সৃজনী প্রেক্ষাগৃহের সামনে।
দুর্ঘটনায় পিক-আপ ভ্যানের চালকসহ মিনিবাসের মোট দশ যাত্রী আহত। তিন জনের আঘাত গুরুতর। পুলিশ মিনিবাস চালককে আটক করেছে। বাস এবং পিক-আপ ভ্যানটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
মিনিবাসের কেবিনে বসা সুকুমার অধিকারী বলেন, ‘বাসটি দুর্গাপুর স্টেশন থেকে সিটি সেন্টার আসছিল। ট্রায়কা পার্কের পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বাসচালক বার বার পার্কের দিকে তাকাচ্ছিল। সৃজনী পার করলে বাস থেকে পার্কের বড় অংশ দেখা যায়। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের ঘনিষ্ঠ অবস্থার দৃশ্য বাস থেকে স্পষ্ট দেখা যায়। সেই দৃশ্য দেখতে ব্যস্ত ছিল চালক। উল্টো দিক থেকে যে একটি পিক -আপ ভ্যান আসছে সেটা খেয়ালই করেনি। যখন খেয়াল হল তখন কিছু করার ছিল না।’
ধাক্কা মারার পর বাসচালক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু বাসেরই এক যাত্রী তাঁকে জাপটে ধরে ফেলেন। পরে তাঁকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। ধাক্কার জেরে পিক-আপ ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়ে যায়। চালক মোহাম্মদ আসরফ স্টিয়ারিং ও সিটের মধ্যে আটকে পড়েন। তাঁর মুখ ও মাথা ফেটে যায়।
সৃজনীর কর্মীরা কোনো রকমে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি নার্সিং হোমে নিয়ে যান। আসরফ বলেন, ‘আমি হর্ন বাজাচ্ছিলাম। কিন্তু বাসচালকের কোনো খেয়ালই ছিল না। দেখি, ক্রমশ আমার দিকেই বাস নিয়ে আসছে। আমি রাস্তা থেকে গাড়ি নামিয়েও দিলাম। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।’
সিটি সেন্টার থেকে দুর্গাপুর স্টেশন যাতায়াতের পথে দুটি পার্ক পড়ে। একটি সায়েন্স অ্যান্ড এনার্জি পার্ক, অপরটি ট্রয়কা পার্ক বলে পরিচিত। এদিন ট্রয়কা পার্কের পাশের রাস্তায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুটি পার্কই যুগলদের নিজস্ব সময় কাটানোর আদর্শ জায়গা বলে চিহ্নিত।
সেখানে অনেকেই ঘন হয়ে বসেও থাকেন। রাস্তা দিয়ে পথচলতি মানুষ তাড়িয়ে তাড়িয়ে সে দৃশ্য উপভোগ করে। বাস-গাড়িচালকরাও এর ব্যতিক্রম নন। ফলে একাধিকবার উল্টোমুখী গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগার উপক্রম হয়েছে।
কিন্তু আজ ধাক্কা লেগেই গেল। যাতে আহত হলেন দশ যাত্রী। সিটি সেন্টার ফাঁড়ি ও ট্র্যাফিক বিভাগের পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস ও পিক-আপ ভ্যানটি উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যান।
সিটি সেন্টার অঞ্চলের বাসিন্দা বুম্বা ঘোষ বলেন, ‘প্রায় দিন দেখি , কিছু লোক পার্ক দুটির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ছেলেমেয়েরা কী করছে তাকিয়ে দেখে। অনেকে তো আবার বাইক দাঁড় করিয়ে ফোন করার অছিলায় আলিঙ্গনরত দৃশ্য দেখে। আর বাসে বসে থাকলে তো স্পষ্ট সব কিছু দেখা যায়।’-এই সময়
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস