আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রতিদিনের মতোই গত শুক্রবার কাজে যান সাংবাদিক মারিয়াম আবু দাক্কা। অফিসে পৌঁছে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সেনাদের সাথে প্রতি নিয়ত বাধা সংঘর্ষের আপডেট জানাচ্ছিলেন। তিনি দর্শকদের জানান, কিছুক্ষণ আগেই ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের উপর বিমান হামলা ও ট্যাঙ্ক থেকে গোলা বর্ষণ করেছে ইসরাইলি সেনারা। এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে যান তিনি।
সেখানে হতাহতদের খবর জানতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর ঘটনায় হতাহতদের নাম-পরিচয়ের তালিকা চলে আসে। এর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি জানেন না, কী মর্মান্তিক ঘটনা তার জন্য অপেক্ষা করছিল।
একের পর এক নাম ঘোষণা হচ্ছিল, হঠাৎ তিনি তার বড় ভাইয়ের নাম শুনতে পান। তিনি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। আসলেই তিনি তার ভাইয়ের নাম শুনেছেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন মারিয়াম। ক্যামেরা নামিয়ে ফেলেন।
হ্যাঁ, ভাইয়ের নামই শুনেছেন তিনি। মারিয়ারের বড় ভাইয়ের নাম মোহাম্মদ আবু ফারহানা।
তখন নিজেকে সামলে নেন মারিয়াম। ফোন করে অফিসে সহকর্মীকে জানান, খবরটি প্রচার করতে বলেন।
সেই দিনের ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় আল-কুদস নেটওয়ার্ককে মারিয়াম বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি, একদিন আমাকে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর খবর প্রচার করতে হবে।’
বলেন, ‘আমার চোখের সামনে বিমান হামলায় ছিন্ন-ভিন্ন লাশ পড়েছিল। আমার ভাইয়ের লাশও ছিল। কিন্তু কাউকে চেনার উপায় ছিল না।’
মারিয়াম বলতে থাকেন, ‘আমি যখন নিহতের মধ্যে আমার ভাইয়ের নাম শুনার পর তাকে নিয়ে খুব বেশি সময় শোক করেত পারিনি। কারণ আমি আমার ছোট ভাইদের নিয়ে আতঙ্কে ছিলাম। কারণ আমার অন্য ভাইরা হামলায় আহতদের সেবার কাজে নিয়োজিত ছিল। ইসরাইলি সেনাদের গুলির মুখে আমার ভাই তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। আমি শুধু দেখছিলাম আর দোয়া করছিলাম, তার যেন কিছু না হয়।’