রবিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৭:৪৬

বন্ধুদের জন্যে কবর খুঁড়ছে শিশুরা! ইতিমধ্যে নাড়া দিয়েছে গোটা বিশ্বকে

বন্ধুদের জন্যে কবর খুঁড়ছে শিশুরা! ইতিমধ্যে নাড়া দিয়েছে গোটা বিশ্বকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইয়েমেনে সৌদি আঞ্চলিক জোটের বিমান হামলা ইতিমধ্যে নাড়া দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। উত্তর ইয়েমেনে বিমান হামলায় একটি স্কুল বাসে বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩৩ জন শিশু নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে বিবিসি। মূলত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এই অভিযান চালাচ্ছে সৌদির নেতৃত্বে থাকা জোট বাহিনী। হুতিরা ইরানের বন্ধু। 

ইয়েমেনে অনেক সিভিলিয়ানের মৃত্যু খবরের আড়ালেই থেকে যাচ্ছে বলে জানানো হয় বিবিসি'র প্রতিবেদনে। একটি স্কুল বাস ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়ার কাহিনী শুনিয়েছেন অরলা গুয়েরিন। 

স্কুলের কিশোর বয়সীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রাণ খোয়ায়। এক ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকটি কিশোর তাদেরই বন্ধুদের কবর খুঁড়ছে। এক শিশু বলছে, বন্ধু ইউসুফের জন্যে শান্তির জায়গা প্রস্তুত করছি। আমরা একসঙ্গে পড়তাম, খেলা করতাম। 

যে স্কুলবাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেখানে থাকা শিশুদের স্কুলব্যগগুলো এখানে-সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ওগুলো রক্তে ভেজা। এই তো ৯ আগস্টের ঘটনা। বাচ্চাগুলো বাসের মধ্যে পুরোপুরি স্বঃস্ফূর্ত ছিল। উচ্ছ্বল প্রাণ একেকটা। ওসামা নামের একটি শিশু ওই বাসের মধ্যেই ভিডিও করছিল। বাইরে বেড়াতে যাওয়ার বিশেষ দিন ছিল ওটা। তাই বন্ধুদের দুষ্টুমি ভিডিও করছিল সে। এক কবরস্থানে বাসটি থামানো হয়।  ওসামা তখনও ভিডিও করছিল। তার বন্ধু আলী ও মোহাম্মেদের নাম ধরে ডাকছিল। 

ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, কবরস্থানের মধ্য দিয়ে ভিডিও করে সামনে এগোচ্ছে সে। এটাই ছিল তার ক্যামেরায় ধরা শেষ চিত্রগুলো। হামলায় সেও মারা যায়। এরপরই কেবল রক্ত আর রক্ত। যারা বেঁচেছিল তাদের দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। আট বছরের মোক্তারও বেঁচেছিল। তার পিঠে তখনও স্কুলের ব্যাগ। 

জোটবাহিনী জানায়, এটা ছিল একটা বৈধ মিলিটারি অ্যাকশন। সেই হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলা করা হয় যারা শিশুদের নিয়ে সেনাবাহিনী গড়ে তোলে। কিন্তু এ ঘটনায় যারা মারা গেলো এবং আহত হলো তারা একেবারে কচি শিশু। 

হাফেজ আলী খোদার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে যে সে এখনো বেঁচে আছে। জানায়, আমার শিক্ষক এবং বেশ কয়েকজন বন্ধু মারা গেছেন। 

একটি বাজারের পাশে তাদের বাসটি দাঁড় করানো হয়েছিল। চালক নেমে গিয়েছিলেন বাচ্চাদের জন্যে খাবার আর পানি আনতে। সেই ব্যস্ত বাজার এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। ইয়েমের অনেক হামলা ও মৃত্যুর ঘটনাই বিশ্ব মিডিয়ায় আসে না। কিন্তু এবার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও প্রকাশ পেলো। পৃথিবীজুড়ে এগুলো দেখা হচ্ছে। 

শিশুদের ওপর এমন হামলায় ঘটনায় হতবাক গোটা বিশ্ব। বেশিরভাগ মানুষের জন্যেই এসব চিত্র ও ভিডিও দেখা সম্ভব নয়।

প্রিয় বাচ্চার লাশগুলো খুঁজে বের করছেন বাবা-মায়েরা। সব হারানোর বেদনায় বিধ্বস্ত তারা।-বিবিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে