শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:২৭:০৬

খাশোগি ইস্যুতে বিপদে সৌদি আরব!

খাশোগি ইস্যুতে বিপদে সৌদি আরব!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: খাশোগি ইস্যুতে বিপদে সৌদি আরব! সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে সৌদি আরবের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর তাকে হত্যা করে তার লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে ধারণা করছেন তুরস্কের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। 

বুধবার ট্রাম্প বলেন, এ ব্যাপারে তিনি সৌদি আরবের ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ে’ একাধিকবার কথা বলেছেন। ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে সৌদি আরবের কাছে ‘আমরা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘শুধু সাংবাদিক কেন, কারো েেত্রই আমরা এমন ঘটনা ঘটতে দিতে পারি না।’ তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে যা চলছে তাতে আমরা খুবই হতাশ। আমরা এমনটা পছন্দ করি না এবং এ ব্যাপারে আমরা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাচ্ছি।’

ট্রাম্পের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স জানান, গত দু’দিনেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহকারী ও তার জামাতা জারেড কুশনার যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।

মার্কিন নাগরিক এবং বাদশাহ সালমান ও তার পুত্র যুবরাজ মোহাম্মদের কট্টর সমালোচক খাশোগিকে প্রলোভন দেখিয়ে ইস্তাম্বুল কনস্যুলেটে ডেকে নিয়ে সেখানে রিয়াদের পাঠানো ১৫ সদস্যের একটি দলকে দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে তুরস্কের এমন দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে বুধবার ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়, যুবরাজ মোহাম্মদ নিজেই খাশোগিকে ল্য করে এ অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।

কারো নাম উল্লেখ না করে গোয়েন্দা আলোচনা নিয়ে আড়িপাতা মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওই সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়, প্রলোভন দেখিয়ে কাশোগিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্য থেকে ডেকে নিয়ে তাকে আটক করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার কথা শুনেছেন সৌদি কর্মকর্তারা।

বিভিন্ন মানবাধিকার ও সাংবাদিক সংগঠন এ ঘটনার কঠোর সমালোচনা করে। বিষয়টি নিয়ে বোল্টন, কুশনার ও পম্পেও কথা বলার পর স্যান্ডার্স জানান, ‘তারা এ তদন্ত প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে সৌদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।’ ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি খাশোগির বাগদত্তা হাটিস সেনগিজের সাথে হোয়াইট হাউজে সাাতের অপোয় রয়েছেন।
ক্রাউন প্রিন্সের নির্দেশে খাশোগি অভিযান!

এদিকে প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকা দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের এক খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কে সৌদি আরবের কনস্যুলেট থেকে নিখোঁজ হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ‘টার্গেট’ করে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। মার্কিন গোয়েন্দারা খাসোগিকে আটক করার ব্যাপারে সৌদির এই পরিকল্পনা সম্বন্ধে জানতেন। 
এই ঘটনার সঙ্গে পরিচিত এক সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার দ্য পোস্ট জানিয়েছে, সৌদি কর্মকর্তাদের যোগাযোগে আড়ি পেতে খাশোগিকে আটকের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পারেন মার্কিন গোয়েন্দারা। খাশোগিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে প্রলোভন দেখিয়ে বের করে এনে আটক করার পরিকল্পনা করেছিল সৌদি কর্মকর্তারা। সূত্রের নাম প্রকাশ করেনি দ্য পোস্ট।
তবে খাসোগিকে আটক করার েেত্র তাকে আঘাত হানার কোনো পরিকল্পনা সৌদির ছিল কী না সে বিষয়ে কিছু জানতে পারেনি মার্কিন গোয়েন্দারা। খাশোগির বন্ধু খালেদ সাফুরি দ্য পোস্টকে জানায়, ক্রাউন প্রিন্সের ঘনিষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তারা বিগত চার মাসে খাশোগির কাছে সৌদি আরবের ফেরত যাওয়ার প্রস্তাব নিয়ে আসে। এমনকি তাকে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়। কিন্তু খাশোগি রাজি হননি।

খাশোগি বলেন, মজা করছো? আমি তাদের এক বিন্দু পরিমাণ বিশ্বাস করি না। 
উল্লেখ্য, খাশোগি দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে সৌদি সরকারের বর্তমান নীতিমালার সমালোচনা করে নিবন্ধ লিখতেন। সৌদি থেকে হামলার ভয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন। গত ২ অক্টোবর তিনি নতুন করে বিয়ে করার জন্য আগের স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের বিষয়ে একটি নথিপত্র সত্যায়িত করার উদ্দেশ্যে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে তাকে বের হতে দেখা যায়নি।

তুর্কি সূত্র বলেছে, তাদের বিশ্বাস খাশোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু সৌদি আরব এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, খাশোগি নিখোঁজ হওয়ার আগে কনস্যুলেট ভবন থেকে বের হয়ে গেছেন। তবে সৌদি কর্তৃপ তাদের দাবির পে কোনো প্রমাণ সরবরাহ করতে পারেনি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে