বুধবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১১:০৫:৩৮

জর্জ বুশের মরদেহের পাশে পোষা কুকুরের কান্না!

জর্জ বুশের মরদেহের পাশে পোষা কুকুরের কান্না!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মনিব মারা গেছেন। তাকে আদর করার মতো এখন কেউ নেই। এতদিন যে মানুষটি তাকে আগলে রাখতো সেই চলে গেল। তাই মানুষের মতোই যেন শোকাহত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের পোষা কুকুর। তাইতো মনিবের মরদেহ যেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সঙ্গে যাচ্ছে সে। মনিব হারানোর বেদনায় সন্তানের মতো করে চোখের জল ফেলছে।

সদ্য প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়রের পোষা এ ককুরটির নাম ‘সালি’। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশের প্রেসিডেন্টের সাথেই ছিল তার বসবাস। হঠাৎ করেই গত শুক্রবার মারা যায় তার মনিব। এ ধাক্কা যেন সইতে পারছে না ‘সালি’।

চারদিকে ক্যামেরার ফ্ল্যাশের ঝলকানি। বিশ্বের নামকরা সব গণমাধ্যমের ভিড়। মনিবের প্রিয়জনদের শোক। এসবের মানে ঠিক কতটা সে বুঝেছে তা জানা নেই। কিন্তু এটুকু সম্ভবত সে টের পেয়েছে যে, তার মনিব আর কখনও স্নেহভরে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে না। সব সময় তাই মনিবের মরদেহের পাশেই বসে থাকছে পোষা এ কুকুরটি।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ গত শুক্রবার ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। শেষকৃত্যের জন্য তার কফিন আনা হয়েছে ক্যাথেড্রালে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তোলা ছবিতে দেখা যায় বুশের কফিনের পাশে চুপচাপ পা ছড়িয়ে বসে আছে সালি।

সালি হলো সিনিয়র বুশের ‘সার্ভিস ডগ’। জীবনের শেষ সময়ে যে এই পোষা কুকুরটিই ছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গী। কফিনের পাশে শুয়ে থাকা কুকুরের হৃদয়স্পর্শী সেই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন প্রয়াত এই প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জিম ম্যাকগ্রা। তিনি ছবিটির ক্যাপশন দেন ‘মিশন কমপ্লিট।’ তার পর থেকেই দুনিয়জিুড়ে সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে ৬০ হাজার ও ইনস্টাগ্রামে আরও ৫৭ হাজার লাইক পড়েছে ছবিটিতে। ।

অবশ্য এখনও কাজ শেষ হয়নি তার। সোমবার এয়ার ফোর্স ওয়ান- এ চেপে শেষ বারের মতো  টেক্সাস থেকে ওয়াশিংটন ডিসি তে যখন সিনিয়র বুশ আসবেন, তখনও তার পাশে থাকবে সালি। বুধবার আবার সে ফিরে যাবে মনিবের সঙ্গেই। তার পর ছুটি।

তবে পুরোপুরি নয়। এখন ২ বছরের ওই কুকুরটিকে বয়স্ক ব্যক্তিদের সাহায্য করার জন্য নিয়োগ করা হবে। তবে আপাতত সে ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারে যাবে বলেই জানিয়েছেন সিনিয়র বুশের ছেলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। বুশ বলেন, ‘পোষা কুকুরটির কথা আমাদের পরিবার সব সময় মনে করবে। কিন্তু ভেবে ভালো লাগছে, যেভাবে ও বাবাকে সাহায্য করতো সেভাবেই ওর নতুন বাড়ি, ওয়াল্টার রিডের সদস্যদেরও সাহায্য করবে সে।’

আপাত নিরীহ দেখতে হলেও সালি কিন্তু অনেক কাজ করতে পারে। কলিং বেল বাজলে সে সবার আগে গিয়ে দরজা খুলে দেয়। টেলিফোন আসলেও সে ফোন সবার আগে রিসিভ করে মনিবের হাতের কাছে এনে দেবে। এক কথায় বাড়ির অনেক কাজ করতে পারে সে।

এই বহুমুখী প্রতিভার জন্যই সিনিয়র বুশের স্ত্রী বারবারার মৃত্যুর পর সালিকে পাঠানো হয়েছিল তার কাছে। সেই থেকে হুইলচেয়ার বন্দী প্রেসিডেন্টের ছায়াসঙ্গী ছিল সে। এমনকি গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনেও মনিবকে ভোট দিতে সাহায্য করেছিল দুই বছরের সোনালি রঙের সালি নামের এ পোষা কুকুরটি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে