আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনকে হুকুম করবে—এমন কোনো রাষ্ট্র পৃথিবীতে নেই বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। যুক্তরাষ্ট্রসহ ‘অর্থনৈতিক শত্রু’ দেশগুলোকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, চীন কারো জন্য হুমকি হয়ে উঠবে না; কিন্তু কারো হুমকি-ধমকিও বরদাশত করা হবে না।
গতকাল মঙ্গলবার চীনের অর্থনৈতিক সংস্কারের ৪০ বছর পূর্তির এক অনুষ্ঠানে চিনপিং এসব মন্তব্য করেন। রাজধানী বেইজিংয়ে ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’-এ ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
১৯৭৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেং শিয়াওপিং ওই ঐতিহাসিক সংস্কারের অনুমোদন দিয়েছিলেন। শিয়াওপিং চীনের ইতিহাসের অন্যতম সংস্কারবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত, যিনি মাও জেদংয়ের মৃত্যুর পর তাঁর দেশকে বাজার অর্থনীতির দিকে চালিত করেছিলেন। আর ওই সংস্কারের ফলে চীনের কয়েক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়। আর সেই সংস্কারের পথে হেঁটেই চীন আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।
গতকালের অনুষ্ঠানে চিনপিং বলেন, ‘চীনের আর্থ-সামাজিক বৈশিষ্ট্যের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে কমিউনিস্ট পার্টি আমাদের জন্য অপরিহার্য এক উপাদান। শুধু তা-ই নয়, সমাজতন্ত্রের জন্য এই পার্টি এখন প্রগতির এক প্রতীকে পরিণত হয়েছে।’
এমন সময় চীন অর্থনৈতিক সংস্কারের চার দশক উদ্যাপন করছে, যখন তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে। যদিও ওই যুদ্ধে ৯০ দিনের ‘শান্তিচুক্তি’ চলছে। উভয় পক্ষ এর মধ্যে স্থায়ী কোনো সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মূল দাবি হলো, চীন যেমন তাদের বাজারে স্বাধীনভাবে ব্যবসা করছে, তারাও চীনের বাজারে অবাধে ব্যবসা করতে চায়। এ জন্য তারা চীনের অর্থনৈতিকব্যবস্থার সংস্কার চায়।
এ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে চিনপিং বলেন, ‘যা পরিবর্তন করা উচিত কিংবা সম্ভব, তা আমরা অবশ্যই করব। কিন্তু যা উচিত কিংবা সম্ভব নয়, তা কখনোই করা হবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে চিনপিং বলেন, ‘চীনের জনগণের কী করা উচিত কিংবা অনুচিত, সে ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা অন্য কারো নেই।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, চিনপিং তাঁর ভাষণে প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা বললেও তা সুনির্দিষ্ট করেননি।
গতকালের অনুষ্ঠানে শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখায় তাদের এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
সাংহাইভিত্তিক ‘হুরুন রিপোর্ট’ সাময়িকীর হিসাব মতে, বিশ্বে কোটিপতির (ডলারের হিসাবে) সংখ্যা সবচেয়ে বেশি চীনে, ৬২০ জন।
সূত্র : এএফপি।