সোমবার, ০১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ১১:০৩:৪০

এক মালালা পেলেন নোবেল, হারিয়ে গেল অন্য মালালারা

এক মালালা পেলেন নোবেল, হারিয়ে গেল অন্য মালালারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মালালা ইউসুফজাই! নতুন করে পরিচিতির প্রয়োজন নেই। নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানি কিশোরী। তাকে নিয়েই মেতে আছে পুরো বিশ্ব। অথচ সাজিয়া রমজান, কায়নাত রিয়াজদের নাম কেউ জানে না। তারাও এক এক জন মালালা হতে পারতো। কিন্তু হারিয়ে গেছে তাদের নাম। পাকিস্তানের সোয়াটে স্কুলবাসে তালেবান জঙ্গিদের হামলায় আহত হয়েছিলেন তাঁরাও।

মালালার দুই বন্ধু। মাললার মতো শিক্ষার অধিকারের জন্য লড়াই করছেন তারাও। তবে তা বাড়ি থেকে অনেক দূরে— ব্রিটেনের ওয়েলসে।

২০১২ সালের ৯ অক্টোবর মালালাদের স্কুলবাসে হামলার সময় সাজিয়াকে বেশ কয়েকবার বন্দুকের বাট দিয়ে মেরেছিল জঙ্গিরা। কায়নাতের হাতে গুলি লেগেছিল। কিন্তু রক্তাক্ত কায়নাত হাসপাতালেও যেতে পারেনি। ভয় ছিল, সেখানেও চড়াও হবে জঙ্গিরা।

সেদিনের কথা বলতে গিয়ে কায়নাত বলেন, ‘বাড়িতেই আমার চিকিৎসা হয়। বেশ কয়েকমাস রাতে ঘুমোতে পারিনি। চোখ বন্ধ করলেই সেদিনের ঘটনা চোখে ভাসত।’

আক্রান্ত সাজিয়ার কথায়, ‘তালেবানের উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল। ওরা আমাদের পিটিয়ে, গুলি করে ভয় দেখাতে চেয়েছিল। হয়েছিলও তাই। কায়নাত এবং মালালার গুলি লেগেছে দেখেও আমাদের কেউ হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায়নি। পাশ দিয়ে বাস চলে গিয়েছে। কিন্তু যাত্রীরা আমাদের তাতে উঠতে দেয়নি।’

এখানেই শেষ নয়। কায়নাত জানিয়েছেন, ওই হামলার পর থেকে এলাকায় জঙ্গিদৌরাত্ম্য ঘটলেই আঙুল উঠত তাঁদের দিকে। তাঁর কথায়, ‘৯ অক্টোবরের তিন মাস পর আমার বাড়ির সামনে বিস্ফোরণ হয়। সেই ঘটনার জন্যও এলাকার মানুষ আমাকে দায়ী করেছিলেন। আমি পড়াশোনা ছাড়িনি বলেই নাকি তালেবান হামলা করছে।’

ঘটনার এক বছর পরে বিনা বাধায় পড়াশোনার অধিকার পেয়েছিল কায়নাত এবং সাজিয়া। ব্রিটেনে চিকিৎসার পর মালালা তখন সুস্থ। ওয়েলসের ইউডব্লিউসি আটলান্টিক কলেজে বৃত্তি দেওয়া হয় তাঁকে। তা না নিয়ে ওই কলেজে সাজিয়া এবং কায়নাতের জন্য বৃত্তির আবেদন করে মালালা। আবেদন মঞ্জুর হয়। ওয়েলসে শুরু হয় কায়নাতদের পড়াশোনা।

ওয়েলসে পড়াশোনার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে সাজিয়া বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার সেদিন সমান অধিকারের স্বাদ পেলাম। ছেলেদের সঙ্গে একসঙ্গে পড়ছি। প্রথমবার মনে হল, আমরা আলাদা নই।’

কায়নাতের কথায়, ‘এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করি। আমাদের পরিবারও এখন পড়াশোনা নিয়ে বাধা দেয় না। স্বাধীনভাবে নিজের কথা বলতে পারি। নিজের ভাবনা ভাগ করে নিতে পারি। আমাদের মতো সকলেই যাতে এই সুযোগ পায় সেই চেষ্টা করব। তবেই মালালার মতো হতে পারব।’
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে