মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১৮, ০৯:০২:০৪

‘অপুর সাথে কথা না বলে থাকতে পারলাম না’

‘অপুর সাথে কথা না বলে থাকতে পারলাম না’

বিনোদন ডেস্ক : ‘কথা বলব না বলেছি, শুনব না শুনেছি, মনে মনে চুপি চুপি তোমারে ভালোবেসেছি, কাছে আসব না এসেছি, ডাকব না ডেকেছি…’ আশির দশকে মুক্তি পাওয়া সাড়া জাগানো ‘আঁখি মিলন’ ছবির গান এটি।

হঠাৎ করে আজ গানটি মনে করার কারণ হলো, শাকিব খান প্রতিজ্ঞা করেছিলেন অপুর সঙ্গে জীবনে কখনো আর কথা বলবেন না। সেই শাকিব আজ তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের এক সপ্তাহ না গড়াতেই অপুর সঙ্গে কথা বললেন। আর অপু বিশ্বাস বলেছিলেন, তাদের সন্তানের মুখ কখনো আর শাকিবকে দেখতে দেবেন না।

সেই অপু জয়কে নিয়ে কলকাতায় ছুটে গেছেন শাকিবের কাছে। শাকিব, জয় আর কলকাতার নায়িকা শ্রাবন্তীর একটি ছবি রবিবার কলকাতার চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা এস কে মুভিজের ফেসবুক পেইজে ভাইরাল হয়। ছবিতে দেখা যায় শ্রাবন্তীর কোলে শাকিব-অপু দম্পতির সন্তান জয়। পাশে দাঁড়িয়ে বাচ্চাকে আদর করছেন বাবা শাকিব। ছবির সঙ্গে একটি সংবাদও প্রকাশ হয়।

আর খবরটি হলো এমন—‘দেশে নয় কলকাতায় বাবার সঙ্গে সময় কাটালেন আব্রাম খান জয়। পাঠক নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন। চমকে ওঠার মতোই খবর। রবিবার ১৮ মার্চ কলকাতায় ‘ভাইজান এলো রে’ সিনেমার ফটোশুট করছিলেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান। তার সঙ্গে ছিলেন শ্রাবন্তী ও পায়েল সরকার।

সেখানেই হাজির হয় শাকিবপুত্র আব্রাম খান জয়। শাকিব-শ্রাবন্তী ও জয়ের একটি স্থিরচিত্র দেখা গেল এস কে মুভিজের ফেসবুক পেজে। ছবিটি পোস্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল হয়ে যায়। আব্রামকে কাছে পেয়ে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শাকিব খান বলেন, ‘আমি সত্যিই অবাক হয়েছি। অনেকদিন পর আব্রামকে কাছে পেয়েছি। আমরা সুন্দর সময় কাটিয়েছি। বেশ ফুরফুরে লাগছে।’

জানা গেছে, রবিবার সকালে আব্রাম মায়ের (অপু বিশ্বাস) সঙ্গে কলকাতা আসেন। পরে শুটিং ইউনিটের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাবাকে সারপ্রাইজ দিতে সোজা ফটোশুটে হাজির হন।’ গত মাসে শাকিব খান বিদেশে শুটিং শেষে দেশে ফিরে সন্তান জয়কে দেখার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেন। কিন্তু অপুকে ডিভোর্স দেওয়ায় অভিমানী স্ত্রী অপু কোনোভাবেই জয়কে দেখতে দেননি তাকে।

এর আগেও গত ফেব্রুয়ারিতে বিদেশে শুটিংয়ের ফাঁকে হুট করে একদিনের জন্য বাচ্চাকে দেখতে শাকিব খান দেশে আসেন। কিন্তু অপুর বাধার মুখে বাচ্চাকে দেখতে না পেয়ে বিধ্বস্ত মন নিয়ে বিদেশ ফিরে যান শাকিব। শাকিবকে শুধু বাচ্চা দেখতে না দিয়ে খ্যান্ত হননি অপু। বাচ্চার জন্য শাকিবের পাঠানো অর্থও ফেরত পাঠান তিনি।

আর মিডিয়াকে বলেন, আমার সন্তানকে আমি নিজের টাকায় বড় করব। তার জন্য শাকিবের অর্থের প্রয়োজন নেই। এ কথায় শাকিব রেগে গিয়ে বলেন, ঠিক আছে আমার বাচ্চা আমাকে না দেখানোর ক্ষমতা কারও নেই। প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নিয়ে হলেও বাচ্চা আমি দেখবই। গত ২২ ফেব্রুযারি শাকিব-অপুর তালাক কার্যকর হয়।

যদিও সিটি করপোরেশনের পারিবারিক আদালত ১২ মার্চ শেষবারের মতো দুজনের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেন কিন্তু ওই বৈঠকে দুজনই অনপুস্থিত থাকায় সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। গত সপ্তাহে অপু জানান, কলকাতায় ‘ভাইজান এলো রে’ ছবির শুটিংয়ে শাকিব সেখানে যাওয়ার পর অপুকে অপরিচিত নাম্বার থেকে মুঠোফোনে কল দেন। অপু ফোন রিসিভ করে কে জানতে চাইলে শাকিব নিজের পরিচয় দেন।

অপু বলেন, শাকিব তাকে বাচ্চাটি দেখানোর জন্য অনুনয়-বিনয় করতে থাকেন। তখন অপু রেগে গিয়ে বলেন, আমাকে অপু বলে ডাকবেন না, মিস অপু বলুন। আর ‘তুমি’ নয়, ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করুন। এরপরও নাকি শাকিব তাকে ‘তুমি’ সম্বোধন করে বাচ্চাটি দেখানোর জন্য অপুর কাছে অনুনয়-বিনয় করতেই থাকেন।

অপুর কথায় দুটি কারণে ‘শাকিবের সঙ্গে আমার দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। একটি হলো শাকিব কখনো চায়নি তার সন্তানের জন্ম হোক। এ কারণে আগে তিনটি বাচ্চা নষ্ট করতে হয়েছে। আর জয়ের জন্মের আগে এবরশন করানোর জন্য প্রথমে আমাকে ব্যাংকক ও পরে কলকাতার একটি হাসপাতালে পাঠায় শাকিব।

চিকিৎসক যখন জানান এবরশন করানোর স্টেজ পার হয়ে গেছে তখন ক্ষিপ্ত শাকিব আমাকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, এই সন্তানের জন্ম হলে আমাকে ডিভোর্স দেওয়া হবে। অপুর কথায় তাদের সম্পর্কের অবনতির দ্বিতীয় কারণ হলো নায়িকা বুবলী। তিনি বলেন, ‘শাকিব-বুবলীর রোমান্সের খবর চাউর হওয়ায় শাকিবের কাছে আমার অনুরোধ ছিল, সে যেন বুবলীর সঙ্গে আর কোনো কাজ না করে। কিন্তু শাকিব আমার অনুরোধ রাখেনি বলে গত বছরের ১০ এপ্রিল বেসরকারি টিভিতে গিয়ে আমি লাইভে আমাদের গোপন বিয়ে ও সন্তানের খবর ফাঁস করে দেই।

এতে ক্ষেপে গিয়ে শাকিব আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। ওই বছরের ১৪ এপ্রিল একটি পত্রিকার আয়োজনে এক পাঁচ তারকা হোটেলে আমরা তিনজন একটি ফটোশুটে অংশ নিলেও শাকিব আমার সঙ্গে একটি কথাও বলেনি।’ অপুর কথায় ‘কথা বলা বন্ধ হওয়ার দীর্ঘসময় পর গত সপ্তাহে সে কলকাতা থেকে ফোন করে এই প্রথম আমার সঙ্গে কথা বলল’।

চলচ্চিত্রকাররা বলছেন, এই জুটি ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই একের পর এক কানামাছি খেলা খেলে যাচ্ছেন। গোপন প্রেম, গোপনে বিয়ে আর সন্তানের জন্মদান, বিবাহ বিচ্ছেদের পর আবার গোপনে কথা বলা আর শাকিবের কাছে সন্তান নিয়ে অপুর গোপনে উড়াল দেওয়া। সব মিলিয়ে বিচ্ছেদের পর গোপন মিলনের কানামাছি খেলা এখন আবার আগের নানা ঘটনার মতো মুখরোচক গল্পে পরিণত হয়েছে।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে