বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের সংগীত ইতিহাসে অনন্য এক রেকর্ডই গড়েছে আরমান আলিফের ‘অপরাধী’। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েই গানটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যায়। প্রথম বাংলা গান হিসেবে ইউটিউবে ১০ কোটি ভিউয়ারের মাইলফলক স্পর্শ করে। ১৯ জুলাই সকাল পর্যন্ত গানটির ভিউয়ার ছিল ১১ কোটি ৩৪ লাখের বেশি! গত ২৬ এপ্রিল ঈগল মিউজিক ভিডিও স্টেশনে গানটির ভিডিও আপলোড করা হয়। এর পর থেকেই ভাইরাল।
প্রথম ১৪ দিনেই পেয়ে যায় কোটি ভিউয়ার। এরপর দিন যত গড়িয়েছে ততই ছড়িয়েছে। আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ শুরুর আগে ড্রেসিংরুমে গানটি গেয়ে ভিডিও প্রকাশ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। গ্লোবাল র্যাংকিংয়ের উঠে আসে ৬০ নম্বরে। এই এক গানই তারকা বানিয়ে দিয়েছে গানটির গায়ক, গীতিকার ও সুরকার আরমান আলিফকে। পথে-ঘাটে এখানে সেখানে সবখানেই বাজতে শোনা যায় গানটি।
পশ্চিমবঙ্গ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও গানটির ব্যাপক চাহিদা। এত জনপ্রিয়তার পরও একটি পক্ষ গানটিকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ। এই তালিকায় সমালোচক থেকে সংগীতের লোকজনও আছেন। তাঁদের মতে, ‘এই গান যতই ভাইরাল কিংবা হিট হোক না কেন প্রকৃতপক্ষে এটা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা রাখে না। এই গান দিয়ে বিশ্ব বাংলাদেশকে চিনে থাকলে সেটা বাংলাদেশের জন্যই সুখবর নয়!’
তবে এসবে কান দিতে চান না গায়ক। বলেন, “২০১৭ সালের শেষ দিকে একদিন বিকেলে আমার ব্যান্ড ‘চন্দ্রবিন্দু’র বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎই সুরটা মাথায় আসে। সুরের সঙ্গে কথাও লিখতে থাকি। ১৫ মিনিটের মধ্যে পুরো গান হয়ে যায়। সেখানেই বসেই ভিডিও করে আমার ব্যাক্তিগত চ্যানেলে আপলোড করি। তারপর ঈগল মিউজিক প্রস্তাব দিলে নতুনভাবে গানটি করি। ভিডিওটি পুনরায় করা হয়। গানটি যে এতদূর চলে আসবে তা ভাবিনি। বিরহের সঙ্গে এন্টারটেইন জুড়ে দিয়ে গানটি করেছি। কোটি মানুষের ভালোবাসা পেলেও কেউ কেউ গানটির সমালোচনা করছেন। সবার মতামতকেই আমি সম্মানের চোখে দেখছি।”
গানটি কেন মানুষ এতটা পছন্দ করল? আরমান বলেন, ‘আমি একেবারে সহজ কথায় গান করার চেষ্টা করি। কারণ গানের কথা সহজ হলে শ্রোতাদের বুঝতে ও শুনতে সুবিধা হয়। তাঁরা এর সঙ্গে কানেক্টও করতে পারেন তাড়াতাড়ি। এই গানটির কথা ও সুর দুটিই অনেক সহজ। যাঁরা শুনেছেন, পছন্দ করেছেন হয়তো গানটির কোনো না কোনো অংশ তাঁদের জীবনের সঙ্গে মিলে গেছে। আর কেউ হয়তো শুনে আনন্দ পেয়েছেন। এটাই একজন শিল্পীর সার্থকতা।’
আরো যোগ করেন, ‘এই গান নিয়ে মানুষের কাছ থেকে এত এত রেসপন্স পাচ্ছি, গল্প শুনছি—বলে শেষ করা যাবে না। বলা যায় এই গান আমার জীবনটাকেই বদলে দিয়েছে।’
ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক এইচএসসি পড়ুয়া এই তরুণের। জন্ম নেত্রকোনায়। গান করার স্বপ্ন নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যান্ড ‘চন্দ্রবিন্দু’। ‘অপরাধী’ দিয়ে হিট হলেও গান প্রকাশ করছেন আরো আগে থেকে। ইউটিউবে প্রকাশিত তাঁর গানের তালিকায় আরো রয়েছে—‘ফানুস’, ‘নিকোটিন’, ‘আয়না’, ‘মায়ার বসবাস’, ‘দূরের তারা’, ‘শূন্যতা’, ‘দেবী’ প্রভৃতি।