বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় অভিনেতা রাজীব। ২০০৪ সালের ১৪ নভেম্বর ক্যান্সারে আক্রান্ত্র হয়ে ৫২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ১৪ বছর আগে পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। তিনি প্রায় চার শতাধিক বাংলা চলচিত্রে অভিনয় করেছেন। খলনায়ক হিসেবে সফল হলেও অনেক চলচ্চিত্রে ভিন্ন চরিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি।
তার কর্মের কারণে আজও ভক্তদের হৃদয়ে বেঁচে আছেন শক্তিমান এই অভিনেতা। মৃত্যুর এত বছর পরেও রাজীবকে নিয়ে ভক্তদের আগ্রহের শেষ নেই। আজ আমরা জানতে চেষ্টা করেছি কেমন আছে তার পরিবার?
তার পরিবার বিষয়ে রাজীবের এক আত্মীয়ের বরাতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর উত্তরাতেই বাস করেন রাজীবের পরিবার। সেখানে নিজেদের বাসাতেই থাকেন তারা। রাজীবের স্ত্রী ইশমত আরা রাজীব। সংসার আর ধর্ম কর্মেই কেটে যায় তার দিন। ১৯৯৬ সালে এক হৃদয় বিদারক জল দুর্ঘটনায় নৌকা ডুবে মৃত্যুবরণ করেন অভিনেতা রাজীবের দুই পুত্র। এরপর রাজীব-ইশমতের দাম্পত্য আলোয় ভরিয়ে রেখেছেন এক পুত্র ও দুই কন্যা।
রাজীবের বড় ছেলে দ্বীপ। বিয়ে করেছন বহুজাতিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের এক মালিকের কন্যাকে। দ্বীপের ছোট দুই বোন। তারা হলেন রানিসা ও রাইসা। দুজনেই পড়াশোনা করছেন দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বাবার জনপ্রিয়তাকে তারা গর্ব মনে করেন। তবে সিনেমা নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। চলচ্চিত্রের মানুষদের সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ নেই তাদের। নিজেদের সরিয়ে রাখেন সব রকম আলোচনা ও প্রচার থেকে।
২০০৪ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত মৃত্যুবরণ করেন এ দেশের চলচ্চিত্রের শক্তিমান অভিনেতাকে উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরে সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
রাজীবের চোখের ব্যবহার ছিল দুর্দান্ত। এই চোখ দিয়েই তিনি নিজেকে অন্যতম খল অভিনেতা হিসবে প্রতিষ্ঠিত করেন। বাংলা চলচ্চিত্রে রাজীব নামে পরিচিত হলেও তার পুরো নাম ওয়াসিমুল বারী রাজীব। ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর দুমকিতে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী হায়াতের ‘খোকন সোনা’ নামের একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে রুপালি পর্দায় পা রাখেন। রাজীবের গুরু বলা হয় কাজী হায়াতকে। রাজীব শ্রেষ্ট পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন চারবার— হীরামতি (১৯৮৮), দাঙ্গা (১৯৯১),বিদ্রোহ চারিদিকে (২০০০) ও সাহসী মানুষ চাই (২০০৩)।
রাজীবের ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল ফ্লপ। কেননা তার শুরুটা ছিল নায়ক হিসেবে, কিন্তু সফল হয়েছিলেন খল নায়ক হিসেবে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) এর ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র:- ভণ্ড, দাঙ্গা, বিক্ষোভ, মীরজাফর, দেশদ্রোহী, ক্ষমা, জবরদখল, লুটতরাজ, মৃত্যুদণ্ড, মগের মুল্লুক, স্বপ্নের পৃথিবী, সত্যের মৃত্যু নেই, ত্রাস, উছিলা, মিয়া ভাই, হাঙর নদী গ্রেনেড, ভাত দে (১৯৮৪)।