বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:৪০:২৪

ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের বাসাটা কোথায়?

    ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের বাসাটা কোথায়?

প্রান্তী সারোয়ার: অফিস থেকে বেরিয়ে রোজকার মত রিক্সাতে উঠে বসে জারিফ। অন্যদিনের তুলনায় সেদিন একটু বেশি খারাপ লাগছিলো জারিফের। কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর হালকা বাতাসে যখন ক্লান্তি কাটতে শুরু করে ঠিক তখনই রিক্সাওয়ালামামার সঙ্গে গল্প শুরু।

গল্পগুলো অতি সাধারণ ছিলো কিন্তু গল্পের বক্তব্য ছিলো অন্য পাঁচটা কথার চেয়ে আলাদা। রিক্সাওয়ালার নাম রবিউল ইসলাম। বয়স আনুমানিক ৬৫-৭০। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। রিক্সার চাকা ঘুরছে তার পায়ের ভরে, কিন্তু তার পা দুটো যেনো ঘুরাতে চাইছে না রিক্সার চাকা। তবুও পেটের তাগিদে ঘুরিয়ে যাচ্ছেন।

গল্পে গল্পে জানা গেলো রিক্সাওয়ালা মামার ২ ছেলে-মেয়ে। একজন মেয়ে আর একজন ছেলে। মেয়ে এইচএসসি পাস। এই কথাগুলো অতি সাধারণ ছিলো, যেটি অদ্ভুদ লাগলো সেটি হলো উনি জিজ্ঞাসা করলেন 'মামা সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এর বাসাটা কম্মে?

জারিফ থেকেও প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হলো কেনো মামা? তখন সে বলতে শুরু করলো আর জারিফও শুনতে শুরু করলো।

রিক্সাওয়ালা জারিফকে বলেন, 'মামা অনেককে জিজ্ঞাসা করেছি, কিন্তু কেউ তো বলতে পারেনা তার বাসাটা কম্মে?'

কথায় কথায় জানা গেলো সে আসলে ব্যারিষ্টার ফজলে তাপসকে খুঁজছেন, কারণ কোনো এক জনসভায় তিনি নাকি বলেছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে চাকরি দেওয়া হবে। আর সেটা একজনের মুখে শোনার পর থেকে তাকে খোঁজা শুরু করেছেন রিক্সাওয়ালা রবিউল মামা।

জারিফও মনে মনে হাসতে লাগলো এবং মামাকে আবারও বললো মামা ওনাদের মত বড় মানুষেরা, মানুষের মন রাখতে জনসভায় এরকম অনেক কিছুই বলেন। কিন্তু এগুলো কোনোটা তারা হয়তো পরে মনেও রাখেন না। কিন্তু রিক্সাওয়ালা মামা নাছড় বান্দা তার একটায় কথা এত বড় মাপের মানুষেরা তাদের কথার বরখেলাপ করেননা।

জারিফও তাকে আর নিরাশ করেনি। বলেছে মামা অবশ্যই আপনি ব্যারিষ্টার ফজলে নূর তাপসকে খুঁজে পাবেন আর তিনিও তার কথা রাখবেন। জনসভায় দেয়া তার প্রতিশ্রুতি রাখতে একজন অসহায় মুক্তিযোদ্ধার মেয়েকে চাকরি দেবেন তিনি!

জানিনা এই ঘটনাটা আসলে কোনো গুরুত্ববহন করে কিনা? তবে সহকর্মীর মুখ থেকে যখন কথাগুলো শুনেছিলাম তখন এই কথাগুলোকে মোটেও সাধারণ মনে হয়নি। কেননা তার মত এমন অনেক সাধারণ মানুষেরা বড় বড় রাজনীতিবীদদের অনেক সত্যবাদী বলেই জানেন এখনও।আর তাদের মুখের কথার ওপর ভরসাও করেন দলিলের লেখা কথার মত করেই।  

তারজন্য হয়তো কোনো জনসভা হলে সাধারণ মানুষের ঢল নামে পিঁপড়ার সারির মত করেই। কোনো হামলা হলে প্রাণ যায় সাধারণ মানুষের। যাদের সামনে রেখে নেতারা কথা বলে নিজেকে বড় মনে করার সুযোগ পান তাদের আগ্রহের জায়গাটাও যেনো পূরণ করেন সব দলের বড় নেতা-নেত্রীরা। তাহলে রাজনীতিবীদদের প্রতি এই সব সাধারণ মানুষের মন থেকে ভালোবাসা-সম্মান কখনও উঠে যাবেনা।-সময়
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে