সোমবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৬:২৯:০৫

মেধাবী ছাত্রী সুদীপ্তা আর কোনোদিন ক্লাসে যাবে না

মেধাবী ছাত্রী সুদীপ্তা আর কোনোদিন ক্লাসে যাবে না

নিউজ ডেস্ক : ঢাকা ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের মেধাবী ছাত্রী সুদীপ্তা চৌধুরী ইমু এইচএসসি পরীক্ষার্থী। পাশাপাশি সে বিএনসিসির ক্যাডেট ছিল। পরিবারের সদস্যদের স্বপ্ন দেখিয়ে আসা ওই ছাত্রীটি গত ২৬ ডিসেম্বর কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন মারমেইড বীচ রিসোর্ট এলাকায় সুদীপ্তা নিহত হয়। আর এতে একটি মেধাবী স্বপ্নের অপমৃত্যু হয়েছে। ওই ছাত্রী আর কোনদিন ক্লাসে দেখা যাবে না। বান্ধবীদের আড্ডায়ও তাকে আর দেখতে পাবে না।

মেধাবী ছাত্রী সুদীপ্তা চৌধুরীর খুনের ঘটনায় বাবা সনজীব চৌধুরী প্রকাশ ঝুলন চৌধুরী বাদী হয়ে ২৭ ডিসেম্বর রামু থানায় মামলা করেন। জি.আর মামলা নং-৪৩২/১৭। মামলায় একমাত্র আসামী জেকি কুমার সুশীল। আদালতের নির্দেশে জেকিকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। রিমান্ডে আসামি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.এম মিজানুর রহমান। তবে তদন্তের স্বার্থে প্রাপ্ত তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

সহপাঠিরা জানিয়েছেন, খুনিরা পরিকল্পিতভাবে সুদীপ্তা চৌধুরী ইমুকে হত্যা করায় একটি মেধাবী স্বপ্ন ঝরেছে। আমরা এমনটি আর দেখতে চাই না। সেই খুনিকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এটি কোনো অপমৃত্যু নয়। এটি একটি হত্যাকান্ড। আমরা ওই হত্যাকারীর বিচার চাই। গর্জে উঠুক চেতনা।

সুদীপ্তার মা গোপী চৌধুরী জানিয়েছেন, আমার মেয়ের মুঠোফোনে শেষ কথা হল, ‘মা আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, আমি হয়তো আর বাঁচবো না’।

আমার মেয়ে মরেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। খুনের ঘটনায় জড়িতদের বিচার চাই। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আমার আত্মা শান্তি পাবে। ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রতিবেদককে মা গোপী চৌধুরী কথাগুলো বলছিলেন।

তিনি আরো বলেন, সুদীপ্তা তার বান্ধবির বাসায় বেড়াতে যাবে বলে সকালে ঘর থেকে বের হয়। দুুপর পর্যন্ত যোগাযোগ না করায় তাকে ফোন করলে ওপার থেকে ভাঙ্গা ও আতঙ্কগ্রস্ত ভাষায় উত্তর পাচ্ছিলাম। মেয়ের আওয়াজ শুনে আমার ভয় হচ্ছিল। কিন্তু বেশি শব্দ পাইনি। কয়েকটি শব্দ শেষে ওপারের সাড়া আর নেই। ফোন করেও রিসিভ হয়নি। বিষয়টি তাৎক্ষণিক সুদীপ্তার বাবাকে জানাই।

সুদীপ্তা চৌধুরীর বাবা সনজীব চৌধুরী প্রকাশ ঝুলন চৌধুরী বলেন, আমার মেয়ের মুঠোফোন বেজে ওঠলে ওপার থেকে জবাব আসে, ‘সুদীপ্তার অবস্থা ভালো না। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।’ তুমি কে? জিজ্ঞেস করলে ‘আমি জেকি’ বলে উত্তর দেয়। কিন্তু সুদীপ্তার মোবাইল তোমার হাতে কেন? জানতে চাইলে উত্তর না দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়।

অভিযুক্ত জেকি কুমার সুশীল শহরের গোলদীঘির পাড় এলাকার মৃত সনজিত কুমারের ছেলে। সে বর্তমানে জেলা কারাগারে রয়েছে।

সুদীপ্তার জেঠাতো বোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ছাত্রী দেবস মিতা চৌধুরী বলেন, ২০১৭ সালের ৫ আগস্ট সুদীপ্তার জন্মদিন ছিল। ওই দিন অনুষ্ঠানের কক্ষ থেকে জেকিকে বের করে দেয় বান্ধবীরা। তখন থেকে জেকি ক্ষুব্ধ ছিল। সুযোগ নিয়ে খুনের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

সুদীপ্তার বান্ধবীদের ধারণা, জেকির প্রেমের প্রস্তাব নাকচ করায় নির্মম ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে