মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০১৭, ০৭:৫৫:৪১

‘আমার জন্য কিছু করুন, আমি দেশে ফিরতে চাই’

‘আমার জন্য কিছু করুন, আমি দেশে ফিরতে চাই’

দিনাজপুর থেকে : প্রেম স্বর্গীয়, কিন্তু সব প্রেমই কি স্বর্গীয়?  মাঝে মাঝে আবেগকে প্রেম ভেবে জীবনকে দুর্বিসহ করে সেই প্রেম কখনও হয়ে যায় নারকীয় যন্ত্রনা। তার জ্বলন্ত উদারণ দিনাজপুরে পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ভারতীয় তরুণী রেজিনা (১৭)।

স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে সাংবাদিকদের কাছে তার আকুতি, ‘আমি আর স্বামীর ঘরে যেতে চাই না। আমি ভারতে আমার বাবা-মা’র কাছে যেতে চাই। আমার জন্য কিছু একটা করুন, আমি দেশে ফিরতে চাই।’

নির্যাতনের খবর জেনে স্থানীয় সাংবাদিকরা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে সবার কাছে এই আকুতি করছেন রেজিনা। কিন্তু রেজিনা পাসপোর্ট ছাড়াই বাংলাদেশে প্রবেশ করায় তাকে ফেরত পাঠানো নিয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে বলে প্রশাসন মনে করছে।

গত মঙ্গলবার পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে রেজিনা। তিনি ভারতের আসাম প্রদেশের সুনিতপুর জেলার তেজপুর এলাকার মহাভৈরব থানার গুটলংবিতোসুতি গ্রামের পিকআপ ড্রাইভার আবদুর রশিদ ও মা মাজেদা বেগমের মেয়ে।

রেজিনা জানায়, দিনাজপুরের পার্বতীপুর শহরের রোস্তমনগর মহল্লার সুজন শেখের ছেলে সাগর শেখ (২৮) ভারতের আসাম প্রদেশের সুনিতপুর জেলার তেজপুর এলাকার মহাভৈরব থানার গুটলংবিতোসুতি গ্রামে যাতায়াত করত। সে সুবাদে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর দুজনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এসময় সাগর শেখ নিজেকে কলকাতার বাসিন্দা বলে জানায়। প্রেমের ৮ মাস পর তারা বিয়ে করে।

তিনি জানান, বাড়িতে এসে প্রথম ১০-১৫ দিন সাগর শেখ ভালোই ছিল। এরপর থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। গত মঙ্গলবার বিকেলেও রেজিনাকে মারধর করেছে সাগর শেখ। নিরূপায় হয়ে রেজিনা পালিয়ে গিয়ে পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। সেখানেও তার ওপর নির্যাতন নেমে আসে।

রাতে হাসপাতালে সাগর শেখ দলবল নিয়ে রেজিনাকে অপহরণের চেষ্টা চালিয়েছে। এসময় খবর পেয়ে পার্বতীপুর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা পালিয়ে যায়। রেজিনার জানায়, তিনি এখন অন্তঃসত্ত্বা। এ অবস্থায়ই সাগর শেখ তার ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তিনি আর তার স্বামীর ঘরে আর ফিরে যেতে চান না। ভারতে তার মা-বাবার কাছে ফিরে যেতে চায়।

পার্বতীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) ইমরানুল কবির জানান, মেয়েটিকে হাসপাতালে নিরাপত্তার সঙ্গে রাখা হয়েছে। মেয়েটির বাবা আবদুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে আসবেন বলে জানিয়েছেন।

পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরফদার মাহমুদুর রহমান জানান, মেয়েটির নিরাপত্তার জন্য পার্বতীপুর থানাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। মেয়েটি যদি ভারতে তার বাবা-মার কাছে যেতে চায় তাহলে তাকে আইনি প্রক্রিয়ায় দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
১৪ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে