এক্লুসিভ ডেস্ক: বাংলাদেশের ফেসবুক ইউজারদের সংখ্য বাড়ছে এবং বেড়েই চলছে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভার্চুয়াল জগতে বিকৃত মানসিকতার ব্যক্তিবর্গের আগমন। তারা একের পর এক ফেইক আইডি খুলে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেমেছে। কোনো তরুণী নির্যাতিত হলেও যেমন তারা পোশাকের অজুহাত দেয়; তেমনি শিশু নির্যাতিতা হলেও মেয়েটিকে দায়ী করার জন্য বাহানা খুঁজতে থাকে। প্রায় প্রতিটি পাবলিক পোস্ট এবং পাবলিক গ্রুপ-পেইজগুলোতে গিয়ে তারা অশ্লীল ভাষায় ‘পোশাক’ সম্পর্কিত কমেন্ট করে। এমনকী ক্রিকেটারদের পেইজেও!
গত ২৩ মে মঙ্গলবার বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মেয়ে আলাইনা সহ সস্ত্রীক একটি ছবি পোস্ট করেন। সাথে সাথে শুরু হয়ে যায় উম্মে আহমেদ শিশিরকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য! একটি বানান শুদ্ধ করে লিখতে পারেন না, এমন ব্যক্তিও ‘পর্দা বিষয়ক’ উপদেশ প্রদান শুরু করেন। এরপর সাকিব আরও একটি ছবি পোস্ট করেন। সেটাতে তো বাজে কমেন্ট আর গালাগালির ঝড় বয়ে যায়! এখন পর্যন্ত ৭০২টি কমেন্ট পড়েছে দ্বিতীয় পোস্টটিতে। যার অধিকাংশই ছাপার অযোগ্য!
তবে মজার ব্যাপার হলো, যারা পোশাক নিয়ে এত উপদেশ দিচ্ছেন, তাদের অনেকের প্রোফাইল ঘুরলেই দেখা যায় তারা বিকৃত চিন্তার কিছু পেইজে লাইক দিয়ে রেখেছেন। লাইকের তালিকায় ১৮+ পেইজ থেকে শুরু করে বাঁশের কেল্লাও আছে! তাহলে সবাই কি বাজে মন্তব্যই করেছে? মোটেই না। পোস্টটিতে অনেকেই বিকৃত মানসিকতার মানুষগুলোর বিপক্ষে মন্তব্য করেছেন। আবার অনেকেই দেখেও এড়িয়ে গেছেন। কারণ, কমেন্ট করলে হয়তো ঐ মানুষগুলো তাকে রাস্তাঘাটে সশরীরে আক্রমণ করে বসতে পারে! আর যারা প্রতিবাদ করছেন, ভীষণ সাহস নিয়েই করছেন।
সরকার ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে এত কঠোর বক্তব্য দেওয়ার পরও এইসব বিকৃত মানসিকতার ব্যাক্তিরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। বেড়েই চলেছে তাদের দৌরাত্ম্য। গতবছর বোনের সঙ্গে ক্রিকেটার নাসির হোসেনের একটি ছবিতে বাজে মন্তব্য সমালোচনার ঝড় উঠেছিল সর্বমহলে। এমনকী অধিনায়ক মাশরাফি দিন দুয়েকের জন্য বাংলাদেশে তার ফেসবুক পেইজ প্রদর্শন বন্ধ রেখেছিলেন! তারও আগে টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকেও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। না, সাকিব কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি হয়তো কেবল একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলেছেন!
এ তো গেল ক্রিকেটারদের কথা; সাধারণ ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তো আরও বাজে অবস্থার মাঝে আছেন। বিশেষ করে মেয়েরা এই বিকৃত মানুষগুলোর দ্বারা ভার্চুয়ালি আক্রমণের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এরা এতটাই বিকৃত যে, কখনই নিজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কথা বলবে না! বরং ইনিয়ে বিনিয়ে সব দোষ নারীদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের অপরাধ ঢাকবে। আরও একজন বিকৃত ব্যক্তিকে উতসাহিত করবে নারীর ওপর আঘাত হানার জন্য! সেটা বাস্তব জগতে হোক আর ভার্চুয়ালি হোক!
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস