বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭, ০৯:৪৬:২৫

যেভাবে ঘনিষ্ঠ হয়েছিল ভারত ও ইসরাইল সম্পর্ক

যেভাবে ঘনিষ্ঠ হয়েছিল ভারত ও ইসরাইল  সম্পর্ক

চন্দ্রশেখর দাশগুপ্ত : প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইসরাইল যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। এই সফরের মধ্য দিয়ে ইসরাইলের সাথে দেশটির সম্পর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৯৯২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমাগত ঘনিষ্ঠ হচ্ছিল।

তবে আগে কৃষি আর প্রযুক্তি খাতে সম্পর্ক ছিল ঘনিষ্ঠ। এখন প্রতিরক্ষা খাতেও তা জোরদার হচ্ছে। তবে জেনে রাখা ভালো, দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের অনেক আগেই ভারত-ইসরাইল সামরিক সম্পর্ক বেশ ভালো পর্যায়ে ছিল।

১৯৬২, ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের সঙ্কটে ভারত ইসরাইলি চ্যানেলের মাধ্যমে জরুরিভিত্তিতে সামরিক সম্ভার পেয়েছিল। তবে সেইসব হয়েছিল গোপনে, দুই দেশের কেউই লেনদেনের বিষয়গুলো প্রকাশ করেনি। ১৯৭১ সালে মুক্তি বাহিনীর অপারেশনের জন্য বিশেষ ধরনের ভারী মর্টারের দরকার ছিল। ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে ঠিক সে ধরনের মর্টারই ছিল।  তবে সেগুলো ইরানে সরবরাহ করার চুক্তি ছিল আগে থেকেই।

এই পর্যায়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সচিব পরমেশ্বর নারায়ণ হাকসার যোগাযোগ করেন ইসরাইলের সাথে। তবে সরাসরি ইসরাইল সরকারের সাথে নয়। তিনি ১৯৬৫ সালে লন্ডনে ডেপুটি হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালনের সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি বাহিনীর হাতে নির্যাতিত শলমো জাবলুদোভিজের সাথে পরিচিত হন। তিনি আবার ছিলেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মায়ারের ঘনিষ্ঠ। শলমোই ভারতের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন মায়ারের কাছে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ার দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভারতকে ওই মর্টার সরবরাহ করেছিলেন।

গোল্ডা মায়ার ভারতের সাথে সম্পর্কের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন। সেই আলোকেই তিনি জরুরিভিত্তিতে তাতে সাড়া দিয়েছিলেন। তিনি এ ব্যাপারে তার ভারতীয় প্রতিপক্ষ ইন্দিরা গান্ধীকে দ্রুত গোপন বার্তা পাঠিয়েছিলেন।

পরে বিষয়টি প্রকাশ করেছিলেন খোদ গোল্ডা মায়ারই। শলমো জাবলুদোভিজকে লেখা এক চিঠিতে তিনি তা বলেছিলেন। আর চিঠিটি নয়া দিল্লির নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরিতে হাকসার পেপার্সে সংরক্ষিত রয়েছে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী লিখেছিলেন :

‘আপনি ইসরাইলে থাকার সময় ভারতীয় অনুরোধে সাড়া দেয়ার একটি উপায় খোঁজার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আমি জানতাম, বিষয়টি কঠিন ও জটিল। তবে আমার বিশ্বাস ছিল, আপনি বুঝতে পারবেন, আমি কিভাবে ব্যবস্থাটি করতে পারি। কারণ অতীতে কিভাবে জটিল সমস্যার সমাধান করেছি, তা আপনি জানেন।’

বর্তমান ইসরাইলের সাথে ভারতের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা এবং অন্যান্য খাতের সম্পর্ক রয়েছে। তবে সেজন্য মায়ার এবং আগের প্রজন্মের ইসরাইলি নেতাদের ধন্যবাদ জানাতেই হয়।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে