বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৭, ০১:৫৯:৪৯

সেই গোপন অপারেশনের কথা জানলে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে!

সেই গোপন অপারেশনের কথা জানলে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সেনাবাহিনী প্রতিনিয়ত নানা ধরনের রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অনেক সময় সেইসব ঘটনা উঠে আসে খবরের শিরোনামে। আবার অনেক সময় সবার নজর এড়িয়ে বড়সড় অনুপ্রবেশ রুখে দেয় ভারতীয় সেনারা।

পাক-ভারত কার্গিল যুদ্ধের পর ঘটেছিল এমনই এক ঘটনা। যা কোনও সংবাদমাধ্যমে জায়গা করে নেয়নি ঠিকই। তবে সেদিনের ঘটনা জানলে সত্যিই গায়ে কাঁটা দেবে। সালটা ১৯৯৯। সদ্য শেষ হয়েছে কার্গিলের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ।

ভারতের গোর্খা রেজিমেন্টের এক সেনার সঙ্গে ঘটেছিল সেই ঘটনা। তার ভাইপো অভিনব প্রকাশ ওই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ব্লগে। সদ্য যুদ্ধ শেষ হয়েছে, তাই ওই সময় বেশিরভাগ সেনারাই ছুটিতে ছিলেন।

গোর্খা রেজিমেন্টের ওই সেনাও পরের দিন বাড়ি ফেরার কথা। যদিও সেনা ঘাঁটিতেও তেমন কোনও তৎপরতা নেই। হঠাৎ তার কাছে একটা ফোন আসে। খবর আসে, কাছেই লুকিয়ে আছে এক জঙ্গি। যুদ্ধে জয় হলেও জঙ্গি অনুপ্রবেশের আতঙ্ক তখনও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছিল না।

ফোন পেয়েই সঙ্গী সেনাদের খবর দিলেন তিনি। তারা সংখ্যায় খুব বেশি ছিল না যদিও। কাশ্মীরের গান্দেরওয়ালের ঘন জঙ্গলে অপারেশন চালাতে হত। ১১-১২ জন সেনা অস্ত্র হাতে জঙ্গলের দিকে এগিয়ে যায়। জঙ্গিদের ঘাঁটিতে পৌঁছাতে পাহাড় চড়তে হত তাদের। ঘন জঙ্গলে সেই রাস্তা ছিল খুবই কঠিন।

একেবারে কাছাকাছি গিয়ে হঠাৎ থেমে যান এক সেনা। দেখেন মাটিতে পড়ে রয়েছে একটা চকোলেট র‍্যাপার। খুব একটা অবাক হননি কেউই। কারণ, অনুপ্রবেশকারীরা অনেক সময়েই সঙ্গে চকোলেট বা ড্রাই ফ্রুট নিয়ে এসে লুকিয়ে থাকে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তারা পৌঁছে যান লক্ষ্যে।

সেখানে গিয়ে দেখেন, জায়গাটি পুরো শান্ত। কারও দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। সেনারা ফিরে আসার পরিকল্পনা করেন। হঠাৎ দেখেন একটি শিকড় থেকে কাটা গাছের কাণ্ড। এটা গান্দেরওয়ালে খুব একটা সাধারণ ছবি নয়। কারণ, এত দুর্গম রাস্তায় কেউ এমনি আসে না।

সেনারা তখন মাটি খুঁড়ে শিকড় বের করা চেষ্টা করেন। দেখেন মাটির তলায় ওই গাছের কোনও শিকড় নেই। তখন মাটি খুঁড়তে শুরু করেন। ছ’ফুট গর্ত করার পর দেখা যায় প্লাস্টিক। তারপর সেই প্লাস্টিক সরাতেই যা দেখা গেল তা ভয়ঙ্কর।

সেখানে মজুত আছে প্রচুর অস্ত্র আর গোলা-বারুদ। রয়েছে একাধিক AK-47, 56s, মেশিন গান, রকেট লঞ্চার, গ্রেনেড। আর সব অস্ত্রই ‘মেড ইন চায়না’। আরও সেনাদের ডেকে সেগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ঘাঁটিতে। তবে কোনও জঙ্গিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আসলে জঙ্গিরা খবর পেয়েই অস্ত্র রেখে পাড়িয়েছিল। কাণ্ডটা কেটে একটা চিহ্ন রেখে গিয়েছিল। ভেবেছিল, ফিরে এসে বের করবে তাদের সম্পত্তি। কিন্তু তারা ভাবেনি যে সেনারা, এভাবে সব অস্ত্র নিয়ে যাবে। এই ঘটনার কথা কোনও সংবাদমাধ্যমে জায়গা পায়নি, কারণ সেনাদের কাছে এটা ছিল আর দুই-পাঁচটা অপারেশনের মতই।

এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে