বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭, ১১:২৫:৪০

মাদরাসাছাত্র ইমরানের তাক লাগানো উদ্ভাবন, পানির পাম্পে মাটিকাটা যন্ত্র

মাদরাসাছাত্র ইমরানের তাক লাগানো উদ্ভাবন, পানির পাম্পে মাটিকাটা যন্ত্র

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সাতক্ষীরার মাদরাসাছাত্র ইমরানের তৈরী মাটিকাটা যন্ত্র (এসকেবেটর) পানির পাম্পের শক্তিতে চলে। এটি আবার পেট্রল এবং ডিজেলেও চলে। তবে কোনো শক্তি ক্ষয় হয় না। এমন তাক লাগানো এক উদ্ভাবন তৈরিতে ইমরানের খরচ হয়েছে মাত্র ২০০ টাকা। খেলনা নয়, ইচ্ছা করলেই ইমরান তার আবিষ্কারকে সত্যিকারের এসকেবেটরে পরিণত করতে পারেন। আর তা দিয়ে মাটিও কাটা হবে সক্ষমভাবে।

সাতক্ষীরা পৌর এলাকার রইসপুর গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে ইমরান হোসেন। খানপুর মাদরাসার ছাত্র ইমরান এবারের দাখিল পরীক্ষার্থী। মাথায় কখনো এসেছে হেলিকপ্টার তৈরির বাসনা। কখনো সি প্লেন। আবার কখনো এসকেবেটর। কিছু দিন আগে একটি হেলিকপ্টার তৈরিও করেছিলেন ইমরান। কিন্তু বাবা রাগান্বিত হয়ে তা ভেঙে ফেলেন।

ইমরান জানান, তার এসকেবেটর তৈরিতে দরকার কিছু হার্ডবোর্ড। একটি কাঠের বডি। উপরের ছাদ ককশিটের। দরকার কিছু বাঁশের চটা। বডিও তৈরি বাঁশের চটায়। দাঁতওয়ালা যে ডালা দিয়ে মাটি খনন ও উত্তোলন করে অদূরে ঢালতে হয় কেবল সেটিই তৈরি ইস্পাতের।

ইমরানের এ এসকেবেটর ব্যবহারে দরকার তিনটি সুইচ। এ সুইচ ব্যবহৃত হয় সিগন্যালের জন্য। এসকেবেটরটি সামনে এগোনো আর পেছানোর জন্য লাল নীল সিগন্যাল রয়েছে। পেছনে যেতে লাল সিগন্যাল জ্বলে ওঠে। সুইচ টিপলে দিব্যি এসকেবেটর মুখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মাটি কাটে আর মাটি ফেলে।

ইমরান জানালেন, মোটরসাইকেলে ব্যবহৃত ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে শক্তি উৎপাদন ও পরিবহনকারী কন্ট্রোল বক্সে। এর নিচে ব্যাটারি। ব্যাটারির ওপরে ছাদ, তার ওপর পানি অথবা ডিজেল পেট্রলের মতো তরল পদার্থ। এসকেবেটরটি চলে চারটি চাকার ওপর। তার ওপর রয়েছে হুইল কভারও। তিনি জানালেন তরল পদার্থ পাম্পিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হয়। এ জন্য শক্তি ক্ষয়ের কোনো সুযোগ নেই। পানি ডিজেল যাই হোক যেমন ছিল তেমনই থাকবে।

ইমরান হোসেন জানান, সি প্লেন তৈরির কাজে হাত দিয়েছেন তিনি। পাইলট হিসেবে নিজে একজন সহকারীসহ উড্ডয়নের জন্য সি প্লেন তৈরিতে ব্যয় হতে পারে কম বেশি পঞ্চাশ হাজার টাকা। অতি সত্ব¡রই আকাশে উড়বেন তিনি।

ইমরান আরো বলেন, আমি সেটি তৈরি করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু আমার তো টাকা নেই। বাবা দিনমজুর। তারও সহযোগিতার আগ্রহ আছে। কিন্তু তার সাধ্য নেই আমার জন্য এত টাকা ব্যয় করার। তিনি বলেন, এমনিতেই বাবার কথা মতো কাজে না গিয়ে হেলিকপ্টার তৈরিতে সময় নষ্ট করায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি। ছুড়ে ফেলে দিয়ে ভেঙে দিয়েছিলেন সেটি।

ইমরান বলেন, নিজেকে এভাবেই উদ্ভাবক হিসেবে দেখতে চাই। প্রকৌশল বিদ্যাকে আনতে চাই হাতের মুঠোয়। খেলনা দিয়ে শুরু করে তা বাস্তবেও কাজে লাগাতে চাই। আমার লক্ষ্য ভবিষ্যতে যন্ত্র প্রকৌশলী হওয়া। আর নিজেকে নানা উদ্ভাবনে সমর্পণ করার অদম্য ইচ্ছা আমার। কিন্তু আমি কি পারব আমার লক্ষ্যে পৌঁছতে। নিজের কাছেই প্রশ্ন করলেন ইমরান। সেই সাথে সহযোগিতায় আগ্রহী হৃদয়বানদের প্রতিও ছুড়ে দিলেন প্রশ্নটি।
এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে