রবিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৮, ০১:৩৭:২০

১৩ বছরের এই মেয়ের ছবি ঝড় তুলেছিল লাখো হৃদয়ে

১৩ বছরের এই মেয়ের ছবি ঝড় তুলেছিল লাখো হৃদয়ে

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: আমাইরা স্যাঞ্চেজকে আপনি হয়তো চিনবেন না। আবার চিনতেও পারেন। নামে নয়, ছবিটি দেখে। আত্মত্যাগের নিষ্পাপ সে ছবি একসময় ঝড় তুলেছিল লাখো লাখো হৃদয়ে। কত মানুষ যে নীরবে জল ফেলেছেন ওই একরত্তি মেয়েটার জন্য! বুকফাটা কষ্টে ডুকরে উঠেছেন, একাকী, নির্জনে! আবার সেই অসহায় মুখের একটি ছবির দৌলতেই বেঁচে গিয়েছে, তারই মতো হাজারো প্রাণ। বেঁচে ফিরেছেন তাঁরা মৃত্যুর মুখ থেকে।

বিপদ যখন আসে, এমন অকস্মাত্‍‌ই। আগাম কোনও ইঙ্গিত থাকে না। হঠাৎ ঘুমভাঙা কলম্বিয়ার এক আগ্নেয়গিরি এভাবেই ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছিল। প্রবল কম্পনে ধসিয়ে দেয় আশপাশের গ্রাম। কেউ যেন কাদামাটি গুলে ঢেলে দিয়েছে। জল ছেঁচে তুলে নেওয়া খালবিলের কাদায় ছটফট করতে থাকা জ্যান্ত মাছের মতোই বিপন্ন অবস্থা মানুষগুলোর। ভেঙে পড়া তাদের ঘরবাড়ি সংসার। সেই ধ্বংস্তূপের মধ্যেই একটা মুখ ছিল আমাইরা স্যাঞ্জেজ। সদ্য কিশোরীই বলা যায়, বয়স সবে ১৩। সালটা ১৯৮৫।

একগলা পানিতে ডুবেছিল মেয়েটি। উদ্ধারকারীরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, সেই পানি থেকে তাকে তুলে আনতে পারছেন না। পা কোথায়, কী ভাবে যে আটকে রয়েছে, একগলা পানিতে দাঁড়িয়ে তা বোঝা সম্ভব ছিল না উদ্ধারকারীদের। একটি পাম্প থাকলেই হয়তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারত। পাম্প করে, জমা কাদা-পানি সরিয়ে, মেয়েটিকে তারা উদ্ধার করতে পারতেন। কলম্বিয়া সরকারের কাছে সেই আর্জি জানিয়েছিলেন উদ্ধারকারীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও পাম্প আর এসে পৌঁছোয়নি।

আমাইরা ততক্ষণে জেনে গিয়েছে তার পরিণতির কথা। বাঁচার আকুতি ছেড়ে, সে তখন হাসছে গাইছে খাচ্ছে... আবার গলা জলে ডুবে থেকেই, জটলা হয়ে থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছে। এভাবেই একটা সময় আসে, মৃত্যুর কোল ঢোলে পড়ে সেই মেয়ে।

আমাইরার মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে ওই মেয়ের একটি ছবি তুলেছিলেন ফোটোগ্রাফার ফ্রাঙ্ক ফোরনিয়ার। তার ফ্রেমবন্দি নিষ্পাপ মুখের এই ছবিটি আলোড়ন ফেলেছিল বিশ্বজুড়ে। চারপাশ থেকে আন্তর্জাতিক সাহায্য আসতে শুরু করে কলম্বিয়ায়। আমাইরা নিজে মরে অন্যদের বাঁচার একটা ব্যবস্থা করে দিয়ে যায়।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে