মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৫:২০:৪৪

বিয়ে না করে বেছে নিলেন ষাঁড়কে!

বিয়ে না করে বেছে নিলেন ষাঁড়কে!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তামিলনাডু রাজ্যে প্রায় ২,০০০ বছর পুরনো জনপ্রিয় লড়াকু খেলা হচ্ছে ষাঁড়ের লড়াই।

এই খেলাকে ঘিরে তামিলনাড়ুতে জাল্লিকাটু উৎসবের আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে আসে অনেক পুরস্কারের আশায় এবং পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে তামিলনাড়ুর সেলবারানি কানাগড়াসু নামের এক মহিলা বিয়ে না করে বেছে নিয়েছেন ষাঁড়কে!

৪৮ বছর বয়সী কানাগড়াসু যখন কিশোরি ছিলেন তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন তিনি তার বাবা এবং দাদার মতই ষাঁড়ের লড়াই (জাল্লিকাটু উৎসব) প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন। তামিলনাডুর সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নেয়।

পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী কানাগড়াসু ভাই এই খেলার রীতি চালানোর কথা থাকলেও সে চালিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানালে কানাগড়সু এই সিদ্ধান্ত নেন। ১৮ বছরের রামু নামের ষাঁড়টি পাঁচ থেকে সাতটি জাল্লিকাটু উৎসবে জিতে ঘরে এনেছে স্বর্ণের কয়েন আর অনেক শাড়ি।

কানাগড়াসু বলেন, রামু আমার ছেলের মত। জাল্লিকাটু লড়াই জিতে রামু আমার পরিবারের সম্মান বাঁচিয়েছে। এবং তামিলনাড়ুর ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। তবে তার বিয়ে নিয়ে পরিবারের শুরুতে হতাশা থাকলে এখন অনেকটা তারা আমার পছন্দকে গ্রহণ করেছেন। তিনি আরও জানান, খেলা শুরুর আগে রামু স্পেশাল ডায়েট করে থাকে। তার খাদ্য তালিকায় থাকে নারকেল, খেজুর, কলা, তৈলাক্ত এক ধরণের কেক, ভাত এবং গম। রামু ডায়েটের সাথে সাথে প্রতিদিন ব্যায়ামও করে। সে এখন পর্যন্ত ১ লক্ষ রূপি আয় করেছে।

মূলত তামিলনাড়ুতে বছরের শুরুতে একবার জাল্লিকাটু উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ধানের ক্ষেতে ধান তোলার উৎসবকে কেন্দ্র করেই জানুয়ারিতে এই ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

এসব অনুষ্ঠানে দুরন্ত ষাঁড়ের ধারালো শিং-এ পুরস্কার বাঁধা থাকে এবং হাজার হাজার পুরুষ ওই ষাঁড় তাড়া করে তাদের শিং থেকে পুরস্কার ছিনিয়ে নেয়।

তবে ২০১৪ সালের দিকে তামিলনাড়ুতে ষাঁড়ের লড়াই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সমালোচনায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, জাল্লিকাটু ভারতের প্রাচীনতম একটি খেলা যা আধুনিক ভারতে এখনও খেলা হয়। এই খেলায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর এখন এই লড়াই আবার চালু হয়েছে।

এসময় ষাঁড়কে হত্যা করা না হলেও সমালোচকরা জাল্লিকাটু উৎসবকে অত্যন্ত বর্বর বলে উল্লেখ করেন কারণ এসময় ষাঁড়কে জোর করে মাদক পান করানো হয় এবং তাদের চোখে মরিচের গুড়ো মেখে দেওয়া হয়।
তবে জাল্লিকাটুর আয়োজনকারীরা বলছেন, নিষ্ঠুরতার হাত থেকে প্রাণীকে বাঁচাতে তারা কিছু বিধিনিষেধ চালু করবেন।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে