বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন, ২০১৮, ০৬:৪১:৪১

এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল জাহাজ

এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল জাহাজ

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: সব মানুষের কাছেই সমুদ্রের বুকে ভাসমান জাহাজের কথা বললেই ভেসে ওঠে ‘টাইটানিক’-এর ছবি।  হলিউডের সৌজন্যে জাহাজের মধ্যে একটা আস্ত শহরের সঙ্গে সেই তো আমাদের প্রথম পরিচয়।  তবে টাইটানিকের থেকে বড় জাহাজ এখন ইউরোপে মেলে।  যেমন এই ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিজ’।

আভিজাত্য ও আকারের দিক থেকে ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিজ’ টাইটানিকের চেয়ে বহুগুণ এগিয়ে।  প্রায় পাঁচটা টাইটানিক ঢুকে যাবে এর মধ্যে।  বা চারটি ফুটবল মাঠের চেয়েও বড়।

ঘটনা হল, এতদিন পৃথিবীতে সর্ববৃহৎ জাহাজ হিসেবে বিখ্যাত ছিল ইনডিপেন্ডেন্স/ফ্রিডম অফ দ্য সিজ।  যার তুলনায় ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিজ’ পাক্কা ৭৫ ফুট বেশি লম্বা। আন্র্তজাতিক সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের দাবি, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও বিলাসবহুল জাহাজের নাম ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিজ’।  বাংলায় যার মানে দাঁড়ায় ‘সমুদ্রের বুকে একটুকরো মরূদ্যান’।

উইকিপিডিয়া বলছে জাহাজটির মালিকানা রয়েছে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনালের হাতে।  জাহাজটি বানিয়েছে এসটিএক্স ইউরোপ।  বানাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার।  ২০০৭ সালের ১২ নভেম্বর থেকে শুরু হয় জাহাজটি তৈরি কাজ।  সাড়ে তিন বছর পর ২০০৯ সালের ১ নভেম্বর জাহাজটি প্রথম যাত্রীবহনে সমর্থ হয়।  ২ লক্ষ ২৫ হাজার ২৮২ টনের এই জাহাজটি দৈর্ঘ্যে ১১৮৭ ফুট, প্রস্থে ২০৮ ফুট, জলের নীচে জাহাজটির প্রায় ৩০ ফুট কাঠামো থাকে।

২২ তলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল এই জাহাজটিতে রয়েছে ১৬টি ডেক এবং ২,৭০০ টি বিলাসবহুল রুম।  জাহাজটি একসঙ্গে ৬,৩০০ যাত্রী বহন করতে পারে।  যাত্রী ও জাহাজের পরিষেবার সর্বদা সতর্ক জাহাজের ২,১০০ জন ক্রু।

ছবিগুলি দেখলেই বুঝতে পারবেন জাহাজটির পরতে পরতে রয়েছে বিস্ময়ের ছাপ।  মোট ৭টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে জাহাজটিকে।  এর ভেতরে রয়েছে সেন্ট্রাল পার্ক, পুল, ফিটনেস সেন্টার, বিনোদন কেন্দ্র। 

বিশ্বের প্রথম ভাসমান উদ্যানটি এই জাহাজেই অবস্থিত।  যেখানে ১২ হাজার গাছের চারা এবং ৫৬টি গাছ রয়েছে।  জাহাজের পিছনের অংশে রয়েছে ৭৫০টি আসন বিশিষ্ট থিয়েটার, রয়েছে সুইমিং পুল।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, জাহাজের এই জায়গাটি দিনে ব্যবহৃত হয় সুইমিং পুল হিসেবেই অথচ রাতে ব্যবহৃত হয় সাগরের বুকে ভাসমান থিয়েটার হিসেবে।

যাঁরা সমুদ্রে সার্ফ করতে ভয় পান তাঁদের সার্ফিং করা জন্য বানানো হয়েছে জাহাজের মধ্যেই দুটি সার্ফ এরিয়া।  একটি পূর্ণবয়স্কদের জন্য, আরেকটি শিশুদের জন্য।  নাম দেওয়া হয়েছে ফ্লো রাইডার্স। 

যাঁরা যথেষ্ট সাহসী তাঁদের জন্য রয়েছে ওড়ার ব্যবস্থাও।  গ্লাইডিং করে জাহাজের ছাদের ২৫ মিটার ওপর পর্যন্ত ওড়া যায়।  জিপ ওয়্যার ধরে তীব্র গতিতে ওপরে ওঠানামার খেলার ব্যবস্থাও আছে।  পর্বতারোহনে উৎসাহীদের জন্য পাথরের দেয়ালে তৈরি করা হয়েছে ১৩ মিটার উচ্চতার দুটি টাওয়ার।

কেবিন বা থিয়েটার ছাড়াও জাহাজের প্রায় প্রতিটি অংশেই রয়েছে অসংখ্য পানশালা, পোশাক ও বিভিন্ন দ্রব্যাদির দোকান ও রেস্তরাঁ।  এছাড়াও রয়েছে ভলিবল কোর্ট, বাস্কেটবল কোর্ট, চারটি বিশালাকৃতির সুইমিং পুল, ইয়ুথ জোন, যেখানে আছে কম্পিউটার গেমিং ও গবেষণাগার-সহ থিম পার্ক এবং বাচ্চাদের জন্য বিশেষ নার্সারি ও খেলাধূলার জায়গা।  আর পায়ে হেঁটে বেড়ানোর জন্য সুদৃশ্য বাগান তো রয়েছেই।
সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে