বুধবার, ১১ মে, ২০১৬, ০৮:৫০:১৮

শেখ হাসিনার মুখ উজ্জ্বল করলো চোখ হারানো সেই অনিক-হৃদয়

শেখ হাসিনার মুখ উজ্জ্বল করলো চোখ হারানো সেই অনিক-হৃদয়

ফেনী : দুর্বৃত্তদের বোমার আঘাতে ডান চোখ হারিয়ে এক চোখের আলো দিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে অনিক ও হৃদয়। বুধবার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, জিপিএ ৫ পেয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ উজ্জ্বল করেছে। ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়র থেকে পরীক্ষা দিয়ে তারা এই কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করে।

২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি দুর্বৃত্তদের বোমার আঘাতে ডান চোখ হারিয়ে এক চোখের আলো দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মেধাবী ছাত্র মিনহাজ উদ্দিন অনিক ও শাহরিয়ার হৃদয়। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় তিন দফায় ভারতে চিকিৎসা দেয়া হয় তাদের। এ বছর তারা পরীক্ষায় অংশ নেয়। জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ায় তারা দু’জন অনেক খুশি। অনিক ও হৃদয় এবং তাদের পরিবার এ ফলাফলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ।

মেধাবী এই দুই শিক্ষার্থীর পরিবার সারা বছরের সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করেছে অনিক-হৃদয়ের চিকিৎসার পেছনে। আগামীতে তাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য এখন হতাশায় ভুগছে দুই পরিবার। তাদের দাবি প্রধানমন্ত্রী যদি অতীতের ন্যায় অনিক ও হৃদয়ের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে সহযোগিতা করেন তাহলে এই দুই মেধাবী ছাত্র বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবে।

শাহরিয়ার হৃদয় জানায়, এই ফলাফলে সে অনেক খুশি। চোখ হারানোর আগে বহু বৈজ্ঞানিক প্রজেক্ট তৈরি করেছে সে। স্থানীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রজেক্টে অংশ গ্রহণ করে কৃতিত্ব স্বরূপ সনদ অর্জন করেছে। ২০১৪ সালের জুনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত ৩৫তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং বিভাগীয় মেলায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিল। তার স্বপ্ন মানুষের উপকারে আসে এমন কিছু প্রজেক্ট তৈরি করা। ইতোমধ্যে দুটি রোবট, একটি ওয়াটার স্যানিটেশন প্রজেক্ট বানিয়েছে।

মিনহাজুল ইসলাম অনিক জানান, ‘এই ফলাফলে আমি অনেক খুশি। ফলাফল পেয়ে মনে হচ্ছে না এবছর পিছিয়ে পড়েছি। আমি একটা যন্ত্র মানবের মতো অলৌকিকভাবে বেঁচে আছি। ডানপাশের চোখটা কৃত্রিম। চিকিৎসকরা পায়ের মাংস গলায়, গলার মাংস মাথায় প্রতিস্থাপন করে আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তার ওপর কপালের হাঁড় নেই।’

ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হোসনে আরা বেগম জানান, এক বছর পিছিয়ে পড়লেও এবছর পরীক্ষা দিয়ে তারা দুজন ভালো ফলাফল করবে এমনটা আশা ছিল। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এধরণের নোংরা রাজনীতির কবল থেকে মুক্তি চায় সাধারণ মানুষ। যে রাজনীতি মানুষের জীবন, ছাত্রজীবন কেড়ে নেবে সে রাজনীতির দরকার নাই।’ সেই সঙ্গে অনিক-হৃদয়ের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ উপলক্ষে বিকেল সাড়ে ৪ টায় ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনসভা চলছিল। এসময় জনসভার পাশ দিয়ে প্রাইভেট পড়ে বাসায় যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তদের (বিএনপি-জামায়াত) বোমার আঘাতে অনিক ও হৃদয় গুরুতর আহত হন। এই দু’ছাত্রের চিকিৎসার ভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছিলেন। তিন দফায় দেশের বাইরে তাদের চোখের চিকিৎসা করানোয় দুই চোখের দৃষ্টি শক্তি হারানোর আশঙ্কা থেকে রক্ষা পায় দুই ছাত্র।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মোরশেদ জানান, অনিক-হৃদয়ের ওপর হামলার ঘটনায় পরদিন ৬ জানুয়ারি ফেনী মডেল থানায় এক অজ্ঞাত আসামি করে মামলা হয়। এ মামলায় ১৮জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে যুবদল নেতা বোমা আজিম ও আজাদ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন।-বাংলামেইল
১১ মে, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে