রবিবার, ০৬ মে, ২০১৮, ০৯:০৭:২৩

কে এই লোক যিনি গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিতের নেপথ্যে

কে এই লোক যিনি গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিতের নেপথ্যে

গাজীপুর থেকে: সাভার উপজেলার ছয়টি মৌজা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৩ সালে ১৬ জানুয়ারি গেজেট প্রকাশ করেছিল ইসি। এর প্রেক্ষিতে গত ৪ মার্চ গাজীপুর সিটি করপোরেশনটির সীমানা নিয়ে গেজেট জারি হয়। যেখানে শিমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়বাড়ী, ডোমনা, শিবরামপুর, পশ্চিম পানিশাইল, দক্ষিণ পানিশাইল ও ডোমনাগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সেই গেজেট চ্যালেঞ্জ করে রোববার এক নম্বর শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজ একটি রিট আবেদন করেন। এবিএম আজাহারুল ইসলাম সুরুজ ২০১৬ সালে ‘নৌকা’ প্রতীক নিয়ে ইউনিয়ন নির্বাচন করেন। এর আগে ২০১১ সালের নির্বাচনে তিনি ‘গরুর গাড়ি’ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক তিনি।

তার এই রিটের কারণে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ৬মাসের জন্য গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্থগিতের রুল জারি করেন।

রুলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের ছয়টি মৌজাকে অন্তর্ভুক্ত করা বেআইনি হবে না- তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

এর আগে ১০ এপ্রিল এ ধরনের একটি রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ (নট প্রেস রিজেক্টেড) করে দিয়েছিলেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ। পরে ওই ছয় মৌজা অন্তর্ভুক্তিরর বৈধতা নিয়ে রুলজারির আর্জি জানিয়ে নতুন করে রিট করেন সুরুজ। এ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সিটি নির্বাচন স্থগিতের আবেদন করা হয়।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কচি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি জানান, আদালত স্থগিতাদেশসহ রুল জারি করেছেন।

চেয়ারম্যান এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজসহ ওই ছয়টি মৌজার জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে অনেক আগে থেকেই সোচ্চার ছিলো। তাদের দাবি, তারা ৫ বছরের জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সীমানা নির্ধারণ জটিলতায় সে সময়ের আগেই তাদের পদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ২০১৬ সালে শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

একই ধরণের আইনী জটিলতা ছিলো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে। সীমানা নির্ধারণ বিষয়ক জটিলতায় সে নির্বাচনও স্থগিত করে দেয় হাইকোর্ট।

পুরাতন রিট আবেদনের পক্ষে বলা হয়, ২০১৩ সালে এই ছয়টি মৌজাকে গাসিকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন বিষয়টি নিয়ে এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজ আবেদন করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গ্রাহ্য না করায় হাইকোর্টে রিট করেন। পরে আদালত আবেদনটি পুনর্বিবেচনা করতে নির্দেশ দেন।

ওই নির্বাচনে এ ছয় মৌজা শিমুলিয়ার মধ্যেই ছিল। নির্বাচনে আজহারুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এখন আবার এসব মৌজাকে গাজীপুর সিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। যেহেতু তিনি ছয়টি মৌজার ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাই এসব মৌজাকে সিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, আগামী ১৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া কথা ছিল। ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গঠিত। এখানে ভোটার ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে