বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০২:০৫:০৩

তবুও স্বামীর কাছেই থাকতে চান রুনা আক্তার

তবুও স্বামীর কাছেই থাকতে চান রুনা আক্তার

সালমা বেগম : ঢাকার ডেমরার একটি কার্টনের কারখানায় কাজ করতেন রুনা আক্তার (ছদ্মনাম)। সেখানেই পরিচয় কামালের (ছদ্মনাম) সঙ্গে। অল্পদিনের পরিচয়েই পরিবারের সবার সম্মতি নিয়ে ছয় বছর আগে বিয়ে হয় তাদের। রুনা জানান, ভালোই চলছিল তাদের। প্রতিদিন একসঙ্গে কাজে আসতেন দুজন। সংসারে স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও আরো তিন সদস্য ছিলেন।

তবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কখনো সমস্যায় পড়তে হয়নি রুনার। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই রুনার কোল জুড়ে আসে একমাত্র মেয়ে। এরপর থেকেই যেন সুখের সংসারে অশান্তির ছায়া পড়ে। রুনার ভাষায়, হঠাৎ করেই কেন যেন দুনিয়াটা এলোমেলো হয়ে গেছে। স্বামী বিশ্বাস করতে চায় না এই মেয়ে আমাদের। কারখানায় কাজ করা বন্ধ করে দেন। ঘর থেকে বের হলেই সন্দেহের শেষ নেই। বিয়ের পর দুজনের আয়ে সংসার চলতো তাদের। মেয়ে জন্মের পর খরচ বেড়েছে ঠিকই কিন্তু আয় কমে গেছে অর্ধেক।

রুনা জানান, একটু কম খেলেও সমস্যা নেই। কিন্তু কষ্ট হয় যখন মেয়েকে আদর করেন না কামাল। মেয়ে তার বাবাকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু বাবার কাছে গেলেই মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। আর অনেক সময় তো রাগের মধ্যে মা-মেয়ে দুজনকেই মারতেন। রুনা জানান, মেয়ে বড় হচ্ছে। পড়ালেখা করাতে হবে। সংসারে খরচ বাড়ছে। কিন্তু রোজগার বাড়ছে না। একবছর থেকে ঠিকমতো ঘরে আসতেন না কামাল। আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে শুনেছেন অন্যকোনো মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছেন তার স্বামী। পরে একদিন কামাল নিজেই সুমিকে তার সম্পর্কের কথা জানান।

রুনা জানান, ওই মেয়ের সঙ্গে এখনো বিয়ে হয়নি। রুনা তার স্বামীকে ফিরে পেতে চান। আলাদা হতে চান না স্বামীর কাছ থেকে। তাই প্রতিবেশীর সাহায্য নিয়ে এসেছেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে। রুনা জানান, বাবা হিসেবে মেয়ের প্রতি যে দায়িত্ব সেটা কখনো তিনি পালন করেননি। তবুও মেয়ের মাথার উপর বাবার ছায়া ছিল এতেও বা কম কিসে। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ে করলে তো কামাল আর কখনো তাদের দিকে মুখ তুলে চাইবে না। রুনার ধারণা কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় তার স্বামী নিজের মেয়েকে অস্বীকার করছেন। পাঁচ বছরের  মেয়েও এসেছেন মায়ের সঙ্গে। মেয়েটি স্কুলে যাওয়া শুরু করেছেন।

রুনা চাইছেন তার মেয়েকে পড়ালেখা শিখাবেন। কিন্তু এই অবস্থা চলতে থাকলে খেয়ে-পরে বাঁচতেই কষ্ট হয়ে যাবে। স্বামী আবার বিয়ে করলে সংসারে কোনো টাকা পয়সা দেবেন না। আর তখন হয়তো মা-মেয়েকে এই ঘরে থাকতেও দেবেন না। তাই সমঝোতার মাধ্যমে নিজের স্বামী এবং সংসার আবার ফিরে পাবেন সেই ভরসা নিয়েই নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের দ্বারস্থ হয়েছেন রুনা আক্তার।   -এমজমিন

২১ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে