মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০১৭, ১০:৩১:১৭

মুসলমান শ্বশুর ও হিন্দু বাবার দ্বন্দ্বে ৩ বছর ধরে হিমঘরে মেয়ের লাশ!

মুসলমান শ্বশুর ও হিন্দু বাবার দ্বন্দ্বে ৩ বছর ধরে হিমঘরে মেয়ের লাশ!

রংপুর থেকে : রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে প্রায় ৩ বছর ধরে একটি মেয়ের লাশ পড়ে আছে। হিন্দু বাবা ও মুসলমান শ্বশুরের দ্বন্দ্বে নিপা রানী রায় নামের ওই তরুণীর লাশ গ্রহণ নিয়ে মামলা চলছে অনেক দিন ধরে। হিমঘরে লাশটি অক্ষত রয়েছে কিনা এনিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

নীলফামারী জজ আদালতের পিপি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার বামনিয়া ইউনিয়নের অক্ষয় কুমার রায়ের মেয়ে নিপা রানী রায় ও পাশ্ববর্তী বোড়াগাড়ি ইউনিয়নের ওর্য়াড মেম্বার জহুরুল ইসলামের ছেলে হুমাযুন কবির রাজু প্রেম করে বিয়ে করেন ২০১৪ সালে।

বিয়ের পর মেয়ের বাবার অভিযোগে ছেলে মেয়ে দুইজনকেই জেল হাজতে নেয়া হয়। এক পর্যায়ে তারা জেল হাজত থেকে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার কিছুদিন পর নিপা শ্বশুরবাড়িতে বিষপানে আত্মহত্যা করেন। নিপার মৃত্যুর ৫৪ দিন পর হুমাযুন কবির রাজু বিষপানে আত্মহত্যা করেন।

নিপা রানীর মৃত্যুর পর লাশটি ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হলে, লাশ কে গ্রহণ করবেন- এ নিয়ে তার বাবা অক্ষয় কুমার মাস্টার ও শ্বশুর জহুরুল ইসলামের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।

এক পর্যায়ে মেয়ের বাবা অক্ষয় কুমার নীলফামারী আদালতে মেয়ের লাশ চেয়ে মামলা করেন। পরে মামলার রায়ে তিনি হেরে গিয়ে সাবজজ আদালতে আপিল করেন। সেখানে হেরে যান ছেলের বাবা জহুরুল ইসলাম। এর পর ছেলের বাবা হাইকোর্টে আপিল করেন। তখন থেকে মামলাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন।

মামলা ও আইনগত জটিলতার কারণে প্রায় ৩ বছর ধরে নিপার লাশ হিম ঘরে পড়ে আছে। এদিকে, নিপার লাশ নিয়ে রমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি।

মেয়েটির বাবা অক্ষয় কুমার মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় হিমঘরে নিপার লাশ পড়ে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, মামলা সংক্রান্ত জটিলতা ও দুই পরিবারের জেদাজেদির কারণে নিপার লাশ প্রায় ৩ বছর থেকে রমেক হাসপাতালেন হিমঘরে পড়ে আছে।

দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়ায় রমেকের হিমঘরে নিপার লাশ ঠিকভাবে আছে কিনা এ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন মেয়ের বাবা। এদিকে ছেলের বাবা জহুরুল ইসলাম জানান, তার ছেলে ভালোবেসে নীলফামারী আদালতে এফিডেফিট করে নিপাকে বিয়ে করেছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ছেলে মেয়ে দুইজনের মারা গেছে। তিনি তার পুত্রবধূর লাশ দাফনের অনুমতি চান।

৩০ মে, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে