শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০১৭, ০৮:২২:৫৮

নাচোল থানা হাজতে মৃত রিমান্ড আসামীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন

নাচোল থানা হাজতে মৃত রিমান্ড আসামীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন

জাকির হোসেন পিংকু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানায় রিমান্ডে থাকা মৃত আসামি মাহফুজ আলমের (২৭) মরদেহের ময়নাতদন্ত বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। এরপর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মরদেহ গ্রহণ করেন মাহফুজ আলমের বড় ভাই শাহিনুল ইসলাম ও জুলহাস। এ সময় তাঁরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় তাঁরা অভিযোগ করেন, পুলিশ দাবি করেছে, মাহফুজ গত বুধবার দুপুরে থানা হাজতের টয়লেটের দরজার চৌকাঠের উপরে ফোকরের সঙ্গে ফুলপ্যান্ট বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশের এ দাবি ঠিক নয়। ঘটনার দিন থানা হাজতে রিমান্ডে থাকা মাহফুজকে দেখতে গিয়েছিলেন জুলহাস। তখন মাহফুজের পরনে জিনসের ফুলপ্যান্ট ছিল। প্যান্টটি কাটা ছিলনা। কিন্তু মরদেহ উদ্ধারের পরে দেখা যায়, ফুলপ্যান্টটি হাঁটুর নিচ থেকে কাটা। যে ফুলপ্যান্টের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে সে আত্মহত্যা করে সেই প্যান্টটি মাহফুজের সঙ্গে ছিল না বলে দাবি করেন জুলহাস। আর এক বড় ভাই শাহিনুল ইসলাম বলেন, মাহফুজ আত্মহত্যা করেছে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমরা এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নিব।

এ ব্যাপারে যে মামলায় রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল মাহফুজকে, সে হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল বারিক বলেন,মাহফুজ আত্মহত্যার জন্য যে প্যান্ট ব্যবহার করেছে সেটা তাঁর পরনেই ছিল। এর প্রমাণ রয়েছে।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের (আমলী আদালত ‘গ’ অঞ্চল) নির্দেশে গঠিত পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড মাহফুজের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আয়শা জুলেখার নেতৃত্বে ওই বোর্ড ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন। বোর্ড প্রধান আয়শা জুলেখা জানান, প্রাথমিক প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ঢাকার মহাখালী পরীক্ষাগার ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের ভিসেরা পাঠানো হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট আসার পর ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রস্তুত হবে।

নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, চিকিৎসক না হয়েও ভুল অস্ত্রোপাচার করে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ভূয়া চিকিৎসক মাহফুজ ( ডা.মাসুদ রানা পরিচয়ে) চরম হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন।

এদিকে নাচোল থানা হাজতে রিমান্ডে থাকা আসামির মৃত্যুর ঘটনার পরপরই পুলিশ সুপার গঠিত পুলিশের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান জানান, বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে লিখিত পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত শুরু করা হবে।  
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে