বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৭, ১২:২৪:০৩

‘বিচার চেয়েছি বন্দিজীবন চাইনি, এমন জানলে মামলা করতাম না, আগেই শহর ছেড়ে চলে যেতাম’

‘বিচার চেয়েছি বন্দিজীবন চাইনি, এমন জানলে মামলা করতাম না, আগেই শহর ছেড়ে চলে যেতাম’

বগুড়া: বগুড়ার আলোচিত মা-মেয়েকে আদালতের নির্দেশে মেয়েকে সেফ হোমে এবং তার মাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ডিবি কার্যালয় থেকে কঠোর নিরাপত্তায় মেয়েটিকে রাজশাহীতে পাঠানো হয়। এ সময় বারবার তাকে ভেজা চোখ মুছতে দেখা যায়।

অশ্রুসীক্ত নয়নে মেয়েটি গণমাধ্যমকে জানায়, ‘নির্যাতনের শিকার হয়ে বিচার চেয়েছি। বন্দিজীবন চাইনি। এমন জানলে মামলা করতাম না। তার চেয়ে শহর ছেড়ে কোথাও চলে যেতাম। কেউ আমার কষ্ট বুঝত না। এখন আমার পড়াশোনার কী হবে? আমার কলেজে ভর্তির কী হবে? এভাবে সেফ হোমে বেশি দিন রাখলে দম বন্ধ হয়ে মরে যাব। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন ‘আমাকে বাঁচান। আমি মুক্তভাবে বাঁচতে চাই। পড়াশোনা করতে চাই’।’

মেয়েটি আরো বলেন, হাসপাতালে ১১ দিন মা-মেয়ে একসঙ্গে ছিল। সোমবার রাতে মায়ের সঙ্গে ছিল ডিবি কার্যালয়ে। নির্যাতন-লাঞ্ছনার পরও মায়ের কাছাকাছি থাকায় মনে সাহস ছিল। কিন্তু এখন আলাদা থাকতে হবে, পরিবার ছেড়ে বন্দিজীবন কাটাতে হবে। এটা ভেবে কান্না পাচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার মা বলেন, ‘মেয়েকে ছেড়ে একা থাকতে খুব কষ্ট হবে। মেয়েটা আমার কাছে থাকলে এত কষ্টের মধ্যেও শান্তি পেতাম।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মা-মেয়েকে হাজির করা হয় বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এবং শিশু আদালতের বিচারক ইমদাদুল হকের এজলাসে। এরপর দুজনের নিরাপত্তা হেফাজতের আবেদন করে পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মো. আমানুল্লাহ মা-মেয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন করেন। কিন্তু মা-মেয়ে দুজনই পরিবারের কাছে যেতে চায়। এ পর্যায়ে আদালত মেয়েটির বাবার বক্তব্য শুনতে চান। মেয়েটির বাবা আদালতে হাজির হয়ে বলেন, তাঁর নিজের কোনো বাড়ি নেই। স্ত্রী-কন্যার নিরাপত্তা দিতে পারবেন না।

পরে আদালত মেয়েটিকে রাজশাহী সেফ হোমে এবং মাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে