মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১০:২৯:৫৬

প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে কবিতা লেখায় চুল কেটে দিল দুর্বৃত্তরা

প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে কবিতা লেখায় চুল কেটে দিল দুর্বৃত্তরা

বগুড়া: প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে প্রশংসামূলক কবিতা লেখায় বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার ডোমনপুকুর কামিল মাদরাসার ছাত্র আবু তালহার মাথার অর্ধেক চুল কেটে দিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত।

সেই সঙ্গে ওই ছাত্রকে হত্যার হুমকি দেয়ায় তিনি পালিয়ে নিজ গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার মিরের দেউলমুড়া গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। আবু তালহা লেখাপড়ার পাশাপাশি বগুড়া সেনানিবাসের গলফ ক্লাবে কেডি (খেলোয়াড়দের ব্যাগ বহনকারী) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এ ঘটনায় তার বাবা আব্দুল হালিম বগুড়ার শাহজাহানপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সোমবার রাতে জমা দেয়া অভিযোগে তিনি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাদের জীবনের নিরাপত্তার দাবি করেছেন।

থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও ওই মাদরাসাছাত্রের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের মিরের দেউলমুড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হালিমের পরিবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। মাদরাসাছাত্র তালহার দাদা দারুজ্জামান মন্ডল এবং তার এক চাচা মুক্তিযোদ্ধা।

পারিবারিক অভাবের কারণে আবু তালহার বাবা আব্দুল হালিম মন্ডল কাজের সন্ধানে বগুড়ার মাঝিড়া এলাকায় যান। সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে গার্ড হিসেবে চাকরি নেয়ার পর ডোমনপুকুর গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। তালহা ডোমনপুকুর মাদরাসায় লেখাপড়া করার পাশাপাাশি সেনানিবাসের গলফক্লাবে কেডি পদে খণ্ডকালীন কাজ করেন।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গত ১০ আগস্ট আবু তালহা তার ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে প্রশংসামূলক একটি কবিতা লেখেন। এই কবিতা পড়ে ওই এলাকার কিছু উশৃঙ্খল যুবক আবু তালহার ওপর ক্ষেপে যায়।

এরপর ১১ আগস্ট গভীর রাতে ওই যুবকরা আবু তালহার এক মামাতো ভাই শরিফুল ইসলামকে দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ির পাশের এক নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ফেসবুকে ওই কবিতা লেখার জন্য তাকে গালমন্দ করার পাশাপাশি আবু তালহার চোখমুখ বেঁধে চড় থাপ্পড় ও লাথি মারে তারা।

এরপর মাথার অর্ধেক চুল কেটে দেয়। ওই বিষয়ে কাউকে কিছু বললে তারা আবু তালহাকে হত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়। এতে ভয় পেয়ে তালহা ডোমনপুকুর থেকে পালিয়ে নিজ গ্রাম রায়গঞ্জের মিরের দেউলমুড়ায় আশ্রয় নেন।

মঙ্গলবার দুপুরে আবু তালহা জানান, বগুড়া ছেড়ে আসতে বাধ্য হওয়ায় তার লেখাপড়া ও খণ্ডকালীন কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের কাছে তার জীবনের নিরাপত্তা ও অপরাধীদের শাস্তির দাবি করেন।

শাজাহানপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের তৎপরতা চালাচ্ছে পুলিশ।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে