শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৭, ০৪:৩২:৪০

চিত্রনায়িকা শাবানার স্বামীর ঈদ পোস্টার ঘিরে সমালোচনার ঝড়

চিত্রনায়িকা শাবানার স্বামীর ঈদ পোস্টার ঘিরে সমালোচনার ঝড়

কামরুজ্জামান রাজু, যশোর থেকে : যশোরের কেশবপুরে গতবছরের ন্যায় এ বছর বন্যার কারণে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। আর এই বন্যার কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা থেকে কিভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায় সেটা নিয়েই কেশবপুরের সকল মহলে চলছিল আলোচনা আর সমালোচনা। সেই সাথে যার যতটুকু সাধ্য ছিল সেটি নিয়েই বানভাসি মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল।

তবে, গত ২৪ই আগস্ট হতে কেশবপুরের পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ সবজায়গায় চলছে এক সময়কার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবানার স্বামী চলচ্চিত্র প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিক কে নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা। আর এর পিছনে মূল কারণ হলো ঈদ শুভেচ্ছা জানানো পোস্টার কে কেন্দ্র করে।

অনেকেই মনে করছেন, চলচিত্র প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিক যাদের কে এই পোস্টার টি তৈরি করতে ও কেশবপুরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় লাগাতে বলেছিলেন তারা হয়তো কাজটি সঠিকভাবে করতে পারেননি বলে আজ এতো আলোচনা বা সমালোচনা হচ্ছে।

পোস্টারটিতে রাজনৈতিক দিক থেকে দেখলে দেখা যাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি কে ছোট করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিটা বড় করে তৈরি করা হয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এটি দেখে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, চলচ্চিত্র প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিক হয়তো ভুলে গেছেন কাকে কোন স্থানে বসাতে হবে।

এছাড়াও পোস্টার টি এমন সবস্থানে লাগানো হয়েছে যার নিচে শ্রী শ্রী অনুকুল ঠাকুরের ১৩০তম আর্বিভাব তিথি উপলক্ষে একটি পোস্টার লাগানো ছিল।

মৃণাল কান্তি দাস নামে একজন ইউপি সদস্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, কেশবপুরের মানুষ শতকারা ৯০ ভাগ মানুষ পানির সাথে যুদ্ধ করছে, দুই মুঠো খাবারের জন্য হা-হা-কার করছে, তখন কোন দয়ালু নেতা খুজে পাওয়া যাই না, কিন্তু হঠাৎ করে, আকাশ ফুড়ে অনেক নেতার আর্বিভাব ঘটেছে। কেশবপুরে পোস্টার লাগালে ভোট হয়না, ভোট পেতে হলে মানুষের দুসময়ে পাশে এসে দাড়ান মানুষের সুখ দুঃখের খবর নেন।

ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক ও কেশবপুরের সাবেক পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি  বাপি হালদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, “এরা কারা সংসদ সদস্য মনোনয়ন পেতে চায়...!!”

আসিফ আমির নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, কাল যখন বাড়ি থেকে বের হলাম দেখলাম দুই ফুট পর পর কে বা কারা এই পোস্টারগুলো রাতের আধারে মেরেছে। বড় করে ছাপানো এক রঙ্গীন পোস্টার। চিন্তা করে দেখলাম একটা পোস্টার ছাপাতে যদি ৫ টাকা করেও খরচ হয় তাহলে যদি ১০০০০ পোস্টার ছাপানো হয় তাহলে ৫০০০০ টাকা খরচ হয়েছে ছাপাতে। যদিও কেশবপুরের অলিতে গলিতে যেভাবে পোস্টার মারা হয়েছে তাতে পোস্টারের সংখ্যা আর টাকার অংকটা আরো অনেক বড় ই হবে।

এতদিন কেশবপুরের মানুষ কে নিয়ে ঠাট্টা করেছে এই লোকটা তারপরও কেশবপুরের মানুষ শান্তিপ্রিয় বলে কিছু বলে নাই। কিন্তু এবার একদিকে বঙ্গবন্ধুর ছবি পোস্টারে ঠিক ভাবে ব্যবহার করে নাই, তারপর বন্যাদূর্গত কেশবপুরের মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে বিলেত বসে পোস্টার পাঠাচ্ছেন এলাকায় শুভেচ্ছা জানিয়ে। এইগুলা মনে হয় না কেশবপুরের জনসাধারন ভাল ভাবে নিবে।

কুশ সাহা নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার "শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকুল  চ‌ন্দ্রের" পোষ্টার কে ছি‌ড়ে ফে‌লে তার উপর অভিনেত্রীর পোষ্টার সাটা‌নোর জন্য জোর প্রতিবাদ জানা‌চ্ছি।

গতবছর বন্যায় কেশবপুরের বানভাসি মানুষ কত কষ্টে দিন পার করেছে সেটি হয়তো সারা বাংলাদেশ দেখেছে। এমনকি রাস্তার উপর ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঠিক গতবছরের ন্যায় এবারো হয়েছে বন্যা, আর বন্যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

রাস্তার পাশে টোংঘর বানিয়ে আশ্রয় নিয়েছে হাজারো মানুষ। কই এত মানুষ ত্রাণ নিয়ে কেশবপুরে ছুটে আসলো, আপনার নামটি তো একবারের জন্য শুনলাম না। রঙিন পোস্টার বানিয়ে এই সময় ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা জানানো কি এতটাই প্রয়োজন ছিল?
এমটিনিউজ/এসএস 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে